স্পোর্টস ডেস্ক : হারের বৃত্ত থেকে যেন বেরই হতে পারছে না ঢাকা ক্যাপিটালস। এখনও পর্যন্ত পয়েন্টের খাতায় খুলতে পারেনি ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খানের মালিকানাধীন এই দলটি। টানা তিন ম্যাচের তিনটিতেই হেরেছে তারা। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে খুলনা টাইগার্সের কাছে ২০ রানে হেরেছে রাজধানীর এই দলটি। টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৭৩ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পায় খুলনা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে থিসারা পেরেরার দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিতে ১৫৩ রানে থামে ঢাকার ইনিংস।
টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করলেও মাঝে খেই হারিয়ে ফেলে খুলনা। তবে শেষদিকে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন-জিয়াউর রহমান ও আবু হায়দার রনির ব্যাটে ভর করে ১৭৩ রানের চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পায় খুলনা টাইগার্স। জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে ঢাকা। ৪১ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে যখন ধুকছিল ঢাকা, সেখান থেকে একাই দলকে টেনে নিয়ে গেলেন থিসারা পেরেরা। ৬০ বলে ১০৩ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন তিনি। যার সুবাদে ম্যান অব ম্যাচের পুরস্কারও জেতেন থিসারা।
আগের দুই ম্যাচের দুটিতেই হেরেছে ঢাকা ক্যাপিটালস। শুক্রবার নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে খুলনার বিপক্ষে ১৭৪ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারে ভালোই শুরু করেছিল ঢাকা। তবে তৃতীয় ওভারে বল করতে এসেই জোড়া আঘাত হানেন মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রথম বলেই লিটন দাসকে সাজঘরে ফেরান খুলনার অধিনায়ক। এ দিনও ব্যাট হাতে ব্যর্থ লিটন, ৩ বলে করেন মাত্র ২ রান। পরের বলেই স্টিফেন ইস্কেনাজিকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান মিরাজ।
স্কোরবোর্ডে ২৫ রান যোগ হতেই তৃতীয় উইকেট হারায় ঢাকা। এবার ওপেনার তানজিদ হাসান তামিমকে ইব্রাহিম জাদরানের ক্যাচ বানান আবু হায়দার রনি। ফেরার আগে বাঁহাতি এই ওপেনারের ব্যাট থেকে আসে ১৫ বলে ১৯ রান। স্কোরবোর্ডে আর মাত্র এক রান যোগ হতেই শাহাদত হোসাইন দিপুকে হারায় তারা। ৮ বল খেলে মাত্র ৩ রান করে আবু হায়দারের শিকার হন এই ব্যাটার।
শুভাম রানজানে আউট হন ১০ বলে ৬ রান করে। আলাউদ্দিন বাবুকে মাহিদুল ইসলামের ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে ফেরান জিয়াউর রহমান। দলীয় ৪১ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে একেবারে ছিটকে যায় ঢাকা ক্যাপিটালস। সপ্তম উইকেট জুটিতে চাতুরাঙ্গা ডি সিলভাকে সাথে নিয়ে এগোতে থাকেন অধিনায়ক থিসারা পেরেরা। সেখান থেকে দলকে জয়ের স্বপ্ন দেখান থিসারা পেরেরা।
শেষ পর্যন্ত ৬০ বলে ১০৩ রানে অপরাজিত থাকেন ঢাকার অধিনায়ক থিসারা পেরেরা। আরেক প্রান্তে ২০ বলে ১১ রান করে অপরাজিত থাকেন চাতুরাঙ্গা। খুলনার হয়ে মেহেদী হাসান মিরাজ নেন ৩ উইকেট। আবু হায়দার রনি ২টি এবং জিয়াউর রহমান নেন এক উইকেট।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ৫ ওভারেই খুলনার স্কোরবোর্ডে ৫০ রান। এর আগে ৪৯ রানের মাথায় চাতুরাঙ্গার বলে শাহাদত হোসাইন দিপুর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মোহাম্মদ নাঈম। আর তাতেই ভেঙে যায় ৪৯ রানের ওপেনিং জুটি। আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১৭ বলে ৩০ রান। স্কোরবোর্ডে আর এক রান জমা হতেই উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। ২ বল ১ রান করেই তাকে ফিরতে হয় সাজঘরে।
আফগান ব্যাটার ইব্রাহিম জাদরানও এ দিন খোলস ছেড়ে বের হতে পারেননি। ৬ বলে ৫ রান করেই নাজমুল ইসলামের বলে স্টাম্পড আউড হয়ে সাজঘরে ফেরেন এই ব্যাটার। অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজও এ দিন কিছু করতে পারেননি। ১০ বল খেলে মাত্র ৮ রান করেই থিসারা পেরেরার বলে আলাউদ্দিন বাবুর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মিরাজ।
৮ বলে ৫ রান করা মোহাম্মদ নাওয়াজকে ফেরান আলাউদ্দিন বাবু। ১১.২ ওভারে ৯৩ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে খুলনা টাইগার্স। সপ্তম উইকেট জুটিতে ২৯ বলে ৪৩ রানের জুটি গড়েন জিয়াউর রহমান ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। দলীয় ১৩৬ রানের মাথায় মোস্তাফিজুর রহমানের বলে তানজিদ হাসানের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন জিয়াউর। ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১৫ বলে ২২ রান।
এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি অঙ্কনও। ২২ বলে ৩২ রান করা এই ব্যাটারকে ফেরান আবু জায়েদ। শেষদিকে ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন আবু হায়দার রনি। ৮ বলে ২১ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। আরেক প্রান্তে ৪ বলে ৯ রানে অপরাজিত থাকেন নাসুম আহমেদ। ঢাকার হয়ে চাতুরাঙ্গা ডি সিলভা নেন দুটি উইকেট। এছাড়া আবু জায়েদ, মোস্তাফিজুর, নাজমুল ইসলাম, শুভাম রানজানে, আলাউদ্দিন বাবু ও থিসারা পেরেরা নেন একটি করে উইকেট।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।