সুয়েব রানা : ঢাকা-সিলেট-তামাবিল জাতীয় মহাসড়কে দীর্ঘদিনের যানজট ও যাত্রী ভোগান্তি নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স। এই সিদ্ধান্তের ফলে মহাসড়কের একটি বিস্তীর্ণ অংশে দায়িত্ব সম্প্রসারিত হলো হাইওয়ে পুলিশ সিলেট রিজিয়নের, যা সিলেটসহ আশপাশের জেলার মানুষের মধ্যে নতুন করে স্বস্তি ও আশার সঞ্চার করেছে।

দীর্ঘ সময় ধরে কিশোরগঞ্জের ভৈরব, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ ও বিশ্ব রোড এলাকায় ভয়াবহ যানজট ছিল নিত্যদিনের চিত্র। ঢাকা থেকে সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও জাফলংগামী যানবাহনের যাত্রা অনিশ্চিত হয়ে পড়ত, অনেক সময় ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা পর্যন্ত আটকে থাকতে হতো যাত্রী ও পরিবহনগুলোকে। এতে যাত্রী দুর্ভোগের পাশাপাশি পর্যটন ও পরিবহন খাতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছিল।
এই বাস্তবতায় যান চলাচলে শৃঙ্খলা ফেরাতে এবং নিরাপত্তা জোরদারে গত ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে হাইওয়ে পুলিশের ৩টি থানাকে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস করা হয়। এর আওতায় হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা রিজিয়নের অধীন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলার খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানা এবং হাইওয়ে পুলিশ গাজীপুর রিজিয়নের অন্তর্ভুক্ত ভৈরব হাইওয়ে থানাকে হাইওয়ে পুলিশ সিলেট রিজিয়নের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে গাজীপুর রিজিয়নের অন্তর্ভূক্ত কটিয়াদী হাইওয়ে থানাকে ময়মনসিংহ রিজিয়নের সাথে যুক্ত করা হয়েছে। সিদ্ধান্তটি কার্যকর হবে ১ জানুয়ারি ২০২৬, বৃহস্পতিবার থেকে।
এর ফলে নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার মরজাল বাজার থেকে শুরু করে সিলেট হয়ে জাফলং পর্যন্ত জাতীয় মহাসড়ক-২ এর বড় অংশে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ, যাত্রী ও পর্যটকদের নিরাপত্তা এবং সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করবে হাইওয়ে পুলিশ সিলেট রিজিয়ন।
পরিবহন সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এই দায়িত্ব সম্প্রসারণের মাধ্যমে মহাসড়কে যানজট নিয়ন্ত্রণ আরও কার্যকর হবে। একই সঙ্গে চোরাচালান, ডাকাতি ও অন্যান্য অপরাধ দমনে সমন্বিত নজরদারি জোরদার হবে এবং জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সহজ হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে হাইওয়ে পুলিশ সিলেট রিজিয়নের পুলিশ সুপার জনাব মোঃ রেজাউল করিম জানান, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দেশের অন্যতম ব্যস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক। দায়িত্বের পরিধি বাড়ায় এই মহাসড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা, যানজট নিরসন এবং যাত্রীদের নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন যাত্রা নিশ্চিত করাই তাদের প্রধান লক্ষ্য। সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব ও নিষ্ঠার সঙ্গে এই দায়িত্ব পালন করা হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা, এই প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে ঢাকা-সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের দীর্ঘদিনের সংকট কাটিয়ে উঠবে, যোগাযোগ ব্যবস্থায় ফিরবে গতি, যাত্রীদের যাত্রা হবে স্বস্তিদায়ক, আর সিলেট অঞ্চলের অর্থনীতি ও পর্যটন পাবে নতুন উদ্দীপনা। অবশেষে বহু প্রতীক্ষিত স্বস্তির যাত্রা শুরু হবে-এমন আশাই এখন সবার মনে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।


