জুমবাংলা ডেস্ক : সারি সারি বইয়ের তাক। সাজানো হাজারো বই। একটি লাইব্রেরির রূপ এখানেই শেষ নয়। লাইব্রেরি শুধু বই পড়ার জায়গা হবে তাও নয়। থাকবে ঐশ্বরিক স্পর্শ। যা পাঠকের মনে শুভ্রতা তৈরি করবে। পৃথিবীর নানা প্রান্তে এমন অনেক লাইব্রেরি আছে, যার রূপে রয়েছে স্বর্গীয় ছোঁয়া। জার্মানির রাস্তা, বাস স্টেশন এমনকি জঙ্গলে পর্যন্ত বুক সেলফ রয়েছে। মানুষ সেখানে বই পড়ছে, কেউ কেউ বই দানও করছে।
ঠিক এমনটাই এখন দেখা যাবে রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডি লেকে। লেকের বিভিন্ন জায়গায় গাছে গাছে সাজানো আছে দৃষ্টিনন্দন ১০টি বইয়ের বাক্স। গাছে গাছে ঝুলিয়ে রাখা এসব বইয়ের বাক্স দেখতে ঠিক পাখির বাসার মতো। যেন লেকজুড়ে বইয়ের নীড়। তবে ভিতরে পাখির পরিবর্তে সাজানো আছে নানা ধরনের বই। যে কেউ চাইলেই সেখান থেকে বই নিয়ে পড়তে পারেন।
পড়া শেষে আবার আগের জায়গায় রেখে যাওয়ার নিয়ম। এসব বাক্সে রাখা নানা লেখকের বই আকৃষ্ট করছে দর্শনার্থীদের। লেকের পাশে উন্মুক্ত পাঠাগার দেখে ভীষণ আনন্দিত বইপ্রেমীরা। এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছেন লেকে আগতরা। এমন সৃষ্টির কারিগর জাকিয়া রায়হানা রূপা। মানুষকে বইমুখী করতেই রূপা এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন। বেছে নিয়েছেন ধানমন্ডি লেকের পাড়। যেখানে গাছে ঝুলে আছে ছোট ছোট বইয়ের বাতিঘর। বইয়ের প্রতি ভালোবাসা থেকে উন্মুক্ত পাঠাগারের ভাবনা তারপর লেকপাড়ে প্রথমে একটি বাক্স স্থাপন করেন তিনি। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করলে অন্যরাও এগিয়ে আসতে শুরু করেন।
মাত্র কয়েক দিনেই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সবখানে ব্যাপক উৎসাহ দেখে যেমন আনন্দিত ও তেমনি আশাবাদী জাকিয়া রায়হানা রূপা।লেকের পাশে বইয়ের বাক্স স্থাপনের ধারণাটা কীভাবে এলো জানিয়ে এই উদ্যোক্তা বলেন, ‘মানো অন দ্য ওয়ে- নামে একটি ফেসবুক পেজ, সেই পেজের মানো একজন জার্মান বাসিন্দা। তার একটি পোস্ট দেখে আমি অনুপ্রাণিত হয়েছি। সেই পোস্টে লেখা ছিল জার্মানের জঙ্গলে, লেকে, নদীর পাড়সহ অনেক জায়গায় বুক কেস থাকে। যার থেকে পড়ার আগ্রহ তৈরি হয়। ওপেন বুক কেসগুলোতে কোনো তালা কিংবা নিরাপত্তাকর্মী পাহারা দেন না। মানুষ যখন খুশি এসে বই পড়তে পারে।
বই দানও করতে পারে। আমি পোস্ট করি তার সেই লেখাটি। কিছুদিন পর আমি ভাবলাম জার্মানও পৃথিবীর অংশ, বাংলাদেশও। তাহলে আমাদের দেশে এটি কেন সম্ভব নয়? সেই ধারণা এবং ইচ্ছা থেকে আমি ফেসবুকে বিষয়টি জানাই। অনেকের সাড়াও পাই। আর্থিক সহযোগিতাও পেয়েছি।’
রাজধানীর মিরপুর থেকে এখানে এসেছিলেন বইপ্রেমী শেখ পূর্ণতা। এই বইপ্রেমী বলেন, ‘এটা অসাধারণ উদ্যোগ। তবে একটি বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ জরুরি। এখানে গাছের মধ্যে পেরেক দিয়ে বাক্সগুলো বসানো হয়েছে। ভিন্ন কোনো পন্থা নেওয়া গেলে পরিবেশবান্ধব হতো।’
ধানমন্ডির বাসিন্দা জাকিয়া রায়হানা রূপা অবশ্য দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।