জুমবাংরা ডেস্ক: দক্ষিণাঞ্চলের জেলা বাগেরহাটে অন্যান্য বছরগুলোর মত এ বছরও বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। অধিকাংশ জমির ধান কাটা শুরু হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় অশনি আতঙ্কে অনেক কৃষকই এ বছর আগেভাগে ধান কাটতে শুরু করেন।তবে, এ বছর বাগেরহাটে ধান কাটা শ্রমিক সংকট ও শ্রমিকের মজুরি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। শ্রমিক সংকটের মধ্যে এ বছর হঠাৎ করে ধান কাটা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি বেড়ে হাজার টাকায় পৌঁছেছে। ৯৫০ থেকে এক হাজার টাকা দৈনিক মজুরির পাশাপাশি দিতে হচ্ছে তিন বেলার খাবার। ঢাকা ট্রিবিউনের প্রতিবেদক এস এম সামছুর রহমান-এর প্রতিবেদনে উঠে এসছে বিস্তারিত।
এদিকে জেলায় এ বছর প্রতি মণ মোটা ধান বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়।সেই হিসেবে প্রায় দেড় মণ ধানের দামে মিলেছে একজন শ্রমিক। অবশ্য ক্ষেত্রবিশেষে সবচেয়ে ভালো চিকন ধান বিক্রি হয়েছে ৯০০ থেকে ৯২০ টাকায়।
এদিকে ধানের দাম কম আর শ্রমিকের মজুরি বেশি হওয়ায় বোরোর বাম্পার ফলন হলেও বাড়তি ব্যয়ের জন্য লোকসানের আশঙ্কা করছেন চাষীরা।
বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় ৫৯ হাজার ২শ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে চিতলমারী উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ১১ হাজার ৮৮০ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ করা হয়েছে। আর সবচেয়ে কম উপকূলীয় উপজেলা মোংলায় আবাদ করা হয়েছে মাত্র ২০ হেক্টর জমিতে।
তবে কৃষকরা বলছেন, কৃষি উপকরণের দাম বৃদ্ধির কারণে একদিকে যেমন ধানের উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে গেছে, সেইসঙ্গে শ্রমিকের মজুরিও বেড়ে যাওয়ায় ধান ঘরে তোলার খরচও বেড়েছে। অন্যদিকে ধানের দাম কম। ফলে বোরোর বাম্পার ফলন হলেও হাসি নেই কৃষকের মুখে।
বাগেরহাট সদর উপজেলার যাত্রাপুর এলাকার কৃষক মহিউদ্দিন বলেন, “ধানের ফলন ভাল হয়েছে। কিন্তু এ বছর একজন ধান কাটার শ্রমিককে দৈনিক মজুরি ৯৫০ থেকে ১ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। আর প্রতিমণ মোটা ধানের দাম ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা। এমন অবস্থা হলে ধান চাষ করলে কৃষকের লোকসান হবে।”
বাগেরহাট সদর উপজেলার সুগন্ধি গ্রামের কৃষক হাকিম মল্লিক জানান, শ্রমিকের অভাবে বোরো ধান কাটা নিয়ে তিনি বিপাকে পড়েছিলেন। পরে অধিক দামে শ্রমিক নিতে বাধ্য হয়েছেন।
প্রতিবছরই এই মৌসুমে বাগেরহাটে কিছুটা শ্রমিকের সংকট থাকায় নড়াইল, যশোর, পিরোজপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিক এসে এখানে কাজ করে থাকেন। বাগেরহাটের ঐতিহ্যবাহী “শ্রমিক বেচা-কেনার হাট” ফকিরহাট ও যাত্রাপুর থেকে এসব শ্রমিক আনা হয়। আর এসব শ্রমিক আনা থেকে শুরু করে সব খরচ কৃষকেই বহন করতে হয়। ফলে খরচের পাল্লা বাড়তেই থাকে তাদের।
বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. আজিজুর রহমান জানান, “বোরো মৌসুমে বাগেরহাটে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ বছর দীর্ঘ সময় ধরে ধান পাকায় ও কৃষিতে যন্ত্রের ব্যবহারে শ্রমিক সংকট নজরে আসেনি। তবে শ্রমিকের মজুরি তুলনামূলক বেড়ে গেছে।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।