জুমবাংলা ডেস্ক : ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’। ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় ফসলের ক্ষতি এড়াতে পাকা ধান, আম ও অন্যান্য ফসল দ্রুত সংগ্রহ করার পরামর্শ দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
আসন্ন ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য অবস্থান এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে করণীয় নির্ধারণে বুধবার বিকালে আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় কমিটির সভায় বসছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নিম্নচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে, যা বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ের রূপ পেতে পারে বলে আভাস রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিলে তখন এর নাম হবে ‘মোখা’ (Mocha)। এটি ইয়েমেনের দেয়া নাম।
বর্তমান গতি প্রকৃতি অনুযায়ী এগোলে বা দিক না পাল্টালে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় মোখা ১৪ মে বাংলাদেশের কক্সবাজার এবং মিয়ানমারের কিয়াউকপিউয়ের মধ্যবর্তী এলাকা দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে পূর্বাভাস দিচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় দমকা ও ঝড়ো হওয়ার সঙ্গে প্রচুর বৃষ্টিপাত হতে পারে। ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড়ি ঢল, ও ভূমিধসও ঘটতে পারে। ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার সময় উপকূলের নিচু এলাকা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বসে প্লাবিত হতে পারে। বিরূপ আবহাওয়ায় নষ্ট হতে পারে মাঠের ফসল।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম জানান, হাওরে শতভাগ ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। আর সারাদেশে ৬০ ভাগ বোরো ধান কাটা শেষ হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কা তৈরি হওয়ায় সতর্কতামূলক পরামর্শ দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
ফসলের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালকদের মাধ্যমে কিছু নির্দেশনা ইতোমধ্যে মাঠ পর্যায়ে পাঠিয়েছে সরেজমিন উইং।
৮০ শতাংশ পাকা ধান, পরিপক্ব আম ও অন্যান্য ‘সংগ্রহ উপযোগী’ ফসল দ্রুত সংগ্রহ করার জন্য কৃষকদের বলতে হবে।
ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতামূলক তথ্য মাঠে কৃষকদের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে।
সার্বক্ষণিক কর্মস্থলে থেকে কৃষকদের পরামর্শ দিতে কৃষকের পাশে থাকতে হবে।
বাংলাদেশ কৃষি আবহাওয়া তথ্য সেবা –বিএএমআইএস থেকে আবহাওয়া সংক্রান্ত যে কোনো তথ্য ও পরামর্শ পাওয়া যাবে।
এপ্রিলের শেষভাগে আকস্মিক বন্যার শঙ্কায় হাওর এলাকায় পাকা ধান কাটা শুরু হয়। এরপর মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে এল ঘূর্ণিঝড়ের বার্তা।
এ পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমানের সভাপতিত্বে বুধবার বিকাল সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির সভা হবে।
ভারতীয় আবহাওয়া অফিস বলছে, দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তর উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে চলার পথে আরও শক্তি সঞ্চয় করে বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
এরপর আরও উত্তর উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে এ ঘূর্ণিঝড় বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ পরিণত হতে পারে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে। এ ঝড় আরও শক্তিশালী হয়ে বৃহস্পতিবার মধ্যরাত নাগাদ অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের রূপ পেতে পারে।
এরপর দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগরের ওই অবস্থান থেকে ঝড়টি ধীর ধীরে বাঁক নিতে শুরু করবে এবং উত্তর উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হবে।
ভারতীয় আবহাওয়া বিদরা বলছেন, এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে যে অনুমান তারা করছেন, তা ঠিক থাকলে ১৪ মে দুপুর নাগাদ নাগাদ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের আকারে মোখা বাংলাদেশের কক্সবাজার এবং মিয়ানমারের কিয়াউকপিউয়ের মধ্যবর্তী এলাকা দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
অবশ্য ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর কোনো পর্যায়ে এর গতিপথ পাল্টে গেলে উপকূলে আঘাত হানার সম্ভাব্য স্থানও বদলে যেতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।