লাইফস্টাইল ডেস্ক : ধনকুবের ও বিখ্যাত তারকাদের প্রেমিক হিসেবে স্বপ্ন দেখেন অনেকেই। তবে ধনকুবেররা প্রেমিক বা সঙ্গী হিসেবে কেমন হয় সে খবর কয়জন রাখেন?
যুক্তরাষ্ট্রে রচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসরায়েলের রাইকম্যান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক এক যৌথ গবেষণায় তেমন খবরই জানা গেছে। গবেষকরা ক্ষমতা কীভাবে সম্পর্কের বিশ্বস্ততা বদলে দেয়, সেটাই খোঁজার চেষ্টা করেছেন এ গবেষনার মাধ্যমে।
এতে জানা যায়, বিখ্যাত তারকা ও শিল্পপতিদের নিয়ে প্রচলিত ধারণা রয়েছে সঙ্গী হিসেবে তাদের সবাই হয়তো দারুণ। কিন্তু তাদের ভেতরে অর্থবিত্ত ও ক্ষমতার অন্ধকার বা ধূসর দিকও আছে।
বাস্তবে তারা রোমান্টিক না–ও হতে পারেন। আর এদিকে গবেষণা বলছে, ক্ষমতাবানেরা বেশির ভাগ সময় সঙ্গীর সঙ্গে প্রতারণা করেন!
ব্যস্ততা ক্ষমতাবানদের দেয় না অবসর
সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বেশির ভাগ সময় নিজের প্রতিপত্তি সামলাতেই ব্যস্ত থাকেন। নিজেদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত রাখতেও তাদের চিন্তার কমতি থাকে না। ফলে সঙ্গীকে নিয়ে তারা খুব বেশি ভাবেন না, নিজেদের আখের গোছাতেই মনোযোগ থাকে।
সুপিরিওরিটি কমপ্লেক্স
ক্ষমতা মানুষের মধ্যে একধরনের আত্মবিশ্বাস তৈরি করে এটা যেমন সত্য, তেমনি ব্যক্তিকে আরও জটিল করে তোলে এটাও সত্য। গবেষণায় দেখা গেছে, ক্ষমতাবানেরা বেশির ভাগ সময় সুপিরিওরিটি কমপ্লেক্সে ভোগেন। সঙ্গীর চেয়ে নিজেদের শ্রেয়তর মনে করেন। প্রেমিক বা প্রেমিকার কেউ একজন যদি তার সঙ্গীর চেয়ে নিজেদের ভালো মনে করেন, কার্যত সে সম্পর্কের সেখানেই ইতি ঘটে।
নার্সিসিস্ট
বিত্তশালী ও ক্ষমতাবানেরা সঙ্গীর চেয়ে নিজেদের বেশি গুরুত্ব দেন। প্রেমিক বা প্রেমিকা হয়তো চাইছে বিকেলটা নিজেদের মতো করে উপভোগ করবেন, অথবা কোনো কফিশপে গিয়ে গল্প করবেন, ক্ষমতাবান সঙ্গীর হয়তো সে সময় কোনো পূর্বনির্ধারিত মিটিং আছে।
গবেষণা বলছে, এসব ক্ষেত্রে সঙ্গীর চেয়ে বরং নিজের কাজকেই বেশি প্রাধান্য দেন বিখ্যাত মানুষেরা। যে কাজ তিনি চাইলে পরেও করতে পারেন, সেসব ক্ষেত্রেও তারা তা করেন না। এভাবে সঙ্গীকে বঞ্চিত করেন। অথচ একটু বুদ্ধি খাটালেই দুইয়ের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা যায়।
সুর কেটে যায়
এই গবেষণার প্রধান লেখক মনোবিদ গারিট বিরনবাম মনে করেন, রোমান্টিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ক্ষমতার এই প্রভাব সম্পর্কের মূল সুরটাই নষ্ট করে দেয়। আর এভাবে একটি সম্পর্ক মাঝপথে খেই হারিয়ে ফেলে। প্রভাবশালীরা সম্পর্ক দিয়ে নয়; বরং সবকিছুকেই নিজের পেশাগত দৃষ্টিভঙ্গিতে বিচার করেন।
ক্ষমতার অন্ধকার দিক
গবেষকেরা বেশ কয়েকটি পরীক্ষা চালিয়ে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ক্ষমতার প্রভাব বোঝার চেষ্টা করেছেন। এসব পরীক্ষার মধ্যে আছে সঙ্গীর প্রতি চাহিদা, যৌন আকাঙ্ক্ষার মতো বিষয়। গবেষণাপত্রের সহলেখক হ্যারি রেইস মনে করেন, সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকা।
কিন্তু বিখ্যাত ব্যক্তিরা কেবল নিজের অবস্থান ধরে রাখার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, অন্য কিছু নিয়ে নন। গবেষণায় সবচেয়ে ভয়ংকর যে বিষয়টি উঠে এসেছে, তা হলো প্রভাবশালী ব্যক্তিরা সঙ্গীর চেয়ে নিজেদের বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন। ফলে সম্পর্কে থাকার জন্য প্রভাবশালীদের খুব বেশি তাগিদ থাকে না।
তবে গবেষকেরা সতর্ক করে বলেছেন, এই গবেষণার ফল সবার ক্ষেত্রে সত্যি না–ও হতে পারে। তাই এখনই এমন উপসংহার টানবেন না যে বিখ্যাত মানুষেরা সঙ্গী হিসেবে ভালো নন। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই যে ভালো নন, এর প্রমাণও মিলেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।