বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শ্রীশান্ত রায় নামের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারীদের সম্পর্কে অশালীন ও অবমাননাকর মন্তব্য এবং ধর্ষণের স্বীকারোক্তি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায় বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বুধবার (২২ অক্টোবর) রাত ১২টার দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্রত্ব বাতিল ও গ্রেপ্তারের দাবিতে বুয়েট কেন্দ্রীয় খেলার মাঠসংলগ্ন ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তর (ডিএসডব্লিউ) ভবনের সামনে জড়ো হন। এসময় তারা “ধর্ষকের ঠিকানা, এই বুয়েটে হবে না”, “ধর্ষকের বিচার চাই” ইত্যাদি স্লোগান দেন।
শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বুয়েট ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. মাসুদ এক লিখিত বিজ্ঞপ্তিতে শ্রীশান্ত রায়ের ছাত্রত্ব সাময়িকভাবে বাতিলের নির্দেশ দেন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইইই বিভাগের ‘২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায় এর ছাত্রত্ব সাময়িকভাবে বাতিল করা হলো।”
তবে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা এই ঘোষণা শোনার পর ‘না না’ বলে ওঠেন। তারা ওই শিক্ষার্থীর স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি তোলেন। তখন অধ্যাপক এ কে এম মাসুদ বলেন, ‘স্থায়ীভাবে ছাত্রত্ব বাতিল করার ক্ষমতা আমার নেই, আমি উপাচার্যের নির্দেশক্রমে এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছি। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে তার নামে মামলা করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই তার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে এবং তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। যদিও শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে মামলা করার কথা, তবে আমরা ছাত্রদের কথা বিবেচনায় রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকেই মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
এদিকে অভিযুক্ত শ্রীশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে বুয়েট ২১ ব্যাচ ধর্ষণ ও প্রমাণের কয়েকটি মিল প্রকাশ করে।
১) “রেডডিট ব্যবহারকারী নিজেকে “বুয়েট ইইই-২১”-এর শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।
২) একাধিক মন্তব্যে সে বাসইউস ব্র্যান্ডের এয়ারবাডস ব্যবহার করেন বলে উল্লেখ করেছেন। যা সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর সঙ্গেও মেলে।
৩) রেডডিট আইডি থেকে জানা যায়, সে জুন মাসে মুসটাং থেকে ছবি পোস্ট করেছেন।
৪) উক্ত রেডডিট আইডির অশালীন মন্তব্যগুলির ভাষা, টোন ও লেখনশৈলী বহু সহপাঠী শনাক্ত করেছেন, যা অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর স্বভাবগত লেখনভঙ্গির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
৫) যখন বুয়েট শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি-বর্জনের পক্ষে সম্মিলিত স্বাক্ষর প্রদান করেন, তখন একমাত্র সেই কাগজে স্বাক্ষর করেননি। যা তার দৃষ্টিভঙ্গি ও নৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলে।”
শিক্ষার্থীরা জানায়, উল্লিখিত প্রমাণ ও মিলের ভিত্তিতে আমরা দৃঢ়ভাবে সন্দেহ করছি যে আমাদের ব্যাচের শ্রীশান্ত রায়ই উক্ত রেডডিট আইডির ব্যবহারকারী এবং সে-ই সচেতনভাবে নারীদের প্রতি অশালীন, লাঞ্ছনাকর ও হয়রানিমূলক আচরণ করেছেন। যদি ওর কাছ থেকে আগেও এরকম কোনো আচরণের শিকার হয়ে থাকে বা কোনো প্রমাণ থেকে থাকে, সে যেন গোপনীয়তা বজায় রেখে হলেও সেটা প্রকাশ্যে আনে।
জুবায়েদ হত্যা ছাত্রী ও প্রেমিকের নির্দেশে, পরিকল্পনা একমাস আগের
উল্লেখ্য, বুয়েট ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠায় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।