লাইফস্টাইল ডেস্ক : কিছু মানুষ আছেন যারা ধনে পাতার গন্ধ মোটেও সহ্য করতে পারে না। আবার মুদ্রার অপর পিঠে থাকা কিছু মানুষ, ধনে পাতা ছাড়া কোন খাবার রান্না করার কথা ভাবতেই পারে না।
তবে ধনে পাতা পছন্দ করুন আর নাই করুন, জানেন কি আজ শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) কিন্তু আন্তর্জাতিক ধনে পাতা অপছন্দ করা দিবস। ২০১৩ সালে ‘আই হেট করিয়ান্ডার’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপের উদ্যোগে দিনটির চল হয়।
গ্রুপটি তৈরি করার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল ধনেপাতা অপছন্দ করা ব্যক্তিরা যাতে একত্রিত হতে পারে এবং পোস্টের মাধ্যমে ভেষজটির প্রতি তাদের অপছন্দের কারণ প্রকাশ করতে পারে।
চাইলে আপনিও এই দিনটি উদযাপন করতে পারেন।
দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস’ সূত্রে জানা যায়, ‘করিয়ান্ডার’ শব্দটি এসেছে গ্রিক থেকে। যার অর্থ হলো বেডবাগ তথা পোকামাকড়ের বিছানা! ধনিয়া পাতার গন্ধ পিষ্ট হওয়া পোকামাকড়ের সঙ্গে যারা তুলনা করেন তাদের দোষ দিয়েও লাভ নেই সেক্ষেত্রে।
আবার বৈজ্ঞানিক সাময়িকী নেচার প্রকাশিত এক গবেষণা নিবন্ধে বলা হয়েছে যে ধনেপাতা থেকে সাবানের গন্ধ পাওয়ার সঙ্গে জিনগত বৈশিষ্ট্যের সম্পর্ক রয়েছে।
ধনে পাতার পুষ্টিগুণ
তবে আপনি যতই ধনে পাতা অপছন্দ করুন না কেনো পুষ্টিগুণে কিন্তু এই পাতা কোন অংশে কম নয়। ধনেপাতায় রয়েছে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, লোহা ও ম্যাগনেশিয়ামের মতো বেশ কয়েকটি উপকারী খনিজ। এছাড়া ভিটামিন এ এবং ভিটামিন কে-র জোগান দেয় এই পাতা। শুধু তাই নয়, এই উদ্ভিদ অ্যান্টিসেপ্টিক, অ্যান্টিফাংগাল এবং যে কোনও চুলকানি ও চামড়ার জ্বলনে গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ।
এছাড়া ধনেপাতায় আছে ভিটামিন সি। রয়েছে ভিটামিন-এ ফলিক অ্যাসিড। এটি এমন এক ধরনের ভিটামিন, যা ত্বকের উপকারে যথেষ্ট প্রয়োজনীয়। প্রতিদিনের পুষ্টি জোগায় এই ভিটামিনগুলো। এ পাতায় রয়েছে ভিটামিন সি’তে ভরা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট নামের উপাদান।
ধনে পাতার উপকারিতা
১. ধনেপাতা দেহে থাকা ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমিয়ে দেয় এবং ভালোএক ধরনের কোলেস্টেরল, এইচডিএল-এর মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে শরীর ও হার্ট সুস্থ রাখতেও সাহায্য করে।
২. এই পাতা ত্বক ও চুলের ক্ষয়রোধও করে থাকে। ধনে পাতায় রয়েছে ভিটামিন এ , ভিটামিন সি, ফসফরাস ও ক্লোরিন। তাই প্রাকৃতিক ব্লিচ হিসেবে ধনে পাতা দারুন ভূমিকা পালন করে।
৩. পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন, ধনে পাতা কেবল সৌন্দর্য আর স্বাদ বাড়াতেই অনন্য নয়, স্বাস্থ্যের জন্যও বেশ উপকারী। ধনে পাতা রক্তে চিনির পরিমাণ কমিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে।
৪. মেয়েদের পিরিয়ডে অতিরিক্ত ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণে আনতেও ধনে পাতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ধনেপাতা ভেজানো গরম পানি পিরিয়ডের অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণ নিরাময় করে।
৫. দেহের চুলকানি-পাঁচড়ায় ধনেপাতার রস লাগালে তাড়াতাড়ি ভলো হয়ে যায়। অপারেশন বা আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত জায়গা দ্রুত নিরাময় করে এই ধনেপাতা।
ধনে পাতার অপকারিতা
১. অতিরিক্ত ধনেপাতা খেলে এটি লিভারের কার্যক্ষমতাকে খারাপভাবে প্রভাবিত করে থাকে। ধনেপাতায় থাকা এক ধরনের উদ্ভিজ তেল শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে আক্রান্ত করে ফেলে।
২. বেশি পরিমাণে ধনেপাতা খেলে পাকস্থলীতে হজমক্রিয়ায় সমস্যা তৈরি হয়। এতে করে গ্যাসের ব্যথা ওঠা, পেটে ব্যথা, পেট ফুলে ওঠা, বমি হওয়ার মত সম্ভাবনা তৈরি হয়।
৩. ধনেপাতা অল্প খেলে পেটের সমস্যা দূর হয়। কিন্তু বেশি পরিমাণে ধনেপাতা খেলে ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
৪. গর্ভকালীন সময়ে অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়া ভ্রূণের বা বাচ্চার শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকারক। ধনেপাতাতে থাকা কিছু উপাদান মহিলাদের প্রজনন গ্রন্থির কার্যক্ষমতাকে নষ্ট করে ফেলে।
৫. অতিরিক্ত ধনেপাতা খেলে অ্যালার্জী তৈরি হয়। এই অ্যালার্জীর ফলে দেহে চুলকানি,ফুলে যাওয়া, জ্বালাপোড়া করা, র্ওঠা এই ধরনের নানা সমস্যা হয়ে থাকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।