বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : বাংলাদেশে ডিজিটাল সক্ষমতার অভাব দেশের উন্নয়ন ও সেবাগুলোর কার্যক্রমে গভীর সম্প্রসারণ ঘটাচ্ছে। নানা ধরনের প্রতারণা ও দুর্নীতি মোকাবিলার জন্য আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার জরুরি হয়ে উঠছে। এর মধ্যে ডিজিটাল সিগনেচারের প্রয়োগ হতে যাচ্ছে একটি স্বতন্ত্র উপায়, যা সরকারি এবং বেসরকারি সকল ক্ষেত্রের কার্যক্রমে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিয়ে আসবে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পাবলিক কী ইনফ্রাস্ট্রাকচার (PKI) সামিট-২০২৫’-এ এই বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে, যেখানে বক্তারা ডিজিটাল স্বাক্ষরের প্রয়োজনীয়তা ও সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
Table of Contents
ডিজিটাল সিগনেচারের গুরুত্ব এবং বর্তমান পরিস্থিতি
ডিজিটাল সিগনেচার বর্তমানে প্রতারণা রোধে অপরিহার্য হয়ে উঠছে। ই-সিগনেচার ব্যবহারের মাধ্যমে স্বাক্ষর জাল করা, টাকা তোলা, এবং অন্যান্য অসদাচরণের ঘটনা রোধ সম্ভব হবে। বিশেষত, দেশে বর্তমানে মাত্র শূন্য দশমিক এক শতাংশ কাগজপত্রে ডিজিটাল সিগনেচার ব্যবহৃত হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে একটি বড় সমস্যা গ্রহণ করতে পারে।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ফয়েজ তৈয়্যব আহমদ জানান, “বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয় বা কনসুলেটগুলো শুধুমাত্র ডিজিটাল যাচাইকৃত সনদ গ্রহণ করবে। সুতরাং, ম্যানুয়ালি যাচাই করা সময়সাপেক্ষ এবং ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা যদি ডিজিটাল স্বাক্ষরের ব্যবহারে মনোযোগ না দিই, তবে আমাদের জন্য ক্ষতির সৃষ্টি হবে।”
ডিজিটাল সিগনেচারের কার্যকরী ব্যবহারের সুযোগ
বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল স্বাক্ষরের প্রয়োগ সরকারি কার্যক্রমে শৃঙ্খলা আনার জন্য নিবন্ধনযোগ্য ব্যবস্থা।
প্রতিদিন প্রচুর কাগজপত্রের প্রোসেসিং: দেশের ৪,৫০০ ইউনিয়ন পরিষদ ও সিটি কর্পোরেশনে শত শত ডকুমেন্ট তৈরি হচ্ছে—যেমন ট্রেড লাইসেন্স, জন্ম-মৃত্যু সনদ, মেডিকেল রিপোর্ট ইত্যাদি। এটি নিশ্চিত করতে হবে যে এগুলো ডিজিটাল এবং যাচাইযোগ্য থাকুক।
- সার্বিক নিরাপত্তার নিশ্চিতকরণ: পাবলিক কী ইন্সফ্রাস্ট্রাকচার (PKI) ব্যবস্থার মাধ্যমে সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত হচ্ছে, যা ডিজিটাল রাজনীতির একটি দেশের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য অপরিহার্য।
প্রযুক্তির বিরুদ্ধে সংস্কারের প্রয়োজন
ডিজিটাল সিকিউরিটির গুরুত্ব বুঝতে না পারলে রাষ্ট্রীয় কাজের মধ্যে অরাজকতা ও প্রতারণার সময়কাল বাড়বে। ফয়েজ তৈয়্যব আহমদ আক্ষেপ প্রকাশ করেন যে, যখন সরকারী কর্মকর্তাদের কাছে ডিজিটাল নিরাপত্তার বিষয়ে আলোচনা করা হয়, তখন অনেকেই এটা বাড়তি খরচ মনে করেন। তিনি বলেন, “এমন খরচ না করলে জাতীয়ভাবে অনেক বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।”
প্রযুক্তির প্রসার ও সচেতনতা
দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে ও জনসাধারণের মধ্যে ডিজিটাল সিগনেচারের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির উপর জোর দিতে হবে। বিশেষ করে, নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠার জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রসার ঘটাতে হবে। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত প্রযুক্তির অগ্রগতির জন্য একটি কার্যকরী দিকনির্দেশনা তৈরি করা।
সমাপনী চিন্তা
ডিজিটাল সিগনেচারের বিকাশ কেবল প্রযুক্তিগত অগ্রগতি নয়, বরং এটি একটি জাতীয় নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতার প্রতিষ্ঠার একটি মৌলিক উপায়। যদি বাংলাদেশ ডিজিটাল দুনিয়ার মধ্যে প্রতিযোগিতা করতে চায়, তবে নিরাপত্তা এবং সেবাদানের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির সম্পূর্ণ ব্যবহারের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।
FAQs
1. ডিজিটাল সিগনেচার কি?
ডিজিটাল সিগনেচার হল একটি ক্রিপ্টোগ্রাফিক প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি স্বাক্ষর, যা ইলেকট্রনিক ডকুমেন্টের স্বাক্ষরের নিশ্চয়তা দেয়।
2. ডিজিটাল সিগনেচার ব্যবহার করার সুবিধা কি?
এটি প্রতারণা রোধ করে, কাগজপত্র যাচাই দ্রুত করে এবং সরকারি কার্যক্রমের শৃঙ্খলা নিশ্চিত করে।
3. বাংলাদেশে ডিজিটাল সিগনেচার ব্যবহৃত হচ্ছে কি?
বর্তমানে ডিজিটাল সিগনেচার দেশের মাত্র ০.১% কাগজপত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে।
4. ডিজিটাল সিগনেচার গ্রহণ করলে কি সুফল পাওয়া যায়?
এটি সরকারের সেবার মান বাড়ায় এবং প্রতারণার সম্ভাবনা কমায়।
5. ডিজিটাল সিগনেচার ও পাবলিক কী ইন্সফ্রাস্ট্রাকচার (PKI) এর সম্পর্ক কি?
PKI ব্যবস্থা ডিজিটাল সিগনেচারের নিরাপত্তা এবং অগ্রগতির জন্য অপরিহার্য।
6. ডিজিটাল স্বাক্ষরের জন্য কি কোন খরচ গুনতে হয়?
হ্যাঁ, কিন্তু এটি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অত্যন্ত জরুরি।
\
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।