বিনোদন ডেস্ক : আপনি কি এই ডলি জৈনকে চেনেন? তিনি কিন্তু পেশাদার শাড়ি ড্রেপার। অর্থাৎ, তাঁর পেশাই সুন্দর করে শাড়ি পরানো। আম্বানি পরিবারের মেয়ে ইশা আম্বানির বিয়েতে শাড়ি পরিয়েছিলেন তিনি। এমনকী আলিয়া, দীপিকার বিয়েতেও শাড়ি পরিয়েছেন। তাঁর কাছে সব তারকাই শাড়ি পরতে চান! এতটাই জনপ্রিয় তিনি। আপনি জেনে নিন তাঁর ব্যাপারে।
সোনম কাপুর, দীপিকা পাডুকোন, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ও ইশা আম্বানির বিয়ের সাজের মধ্যে কী মিল আছে জানেন? যদি আপনি মনে করেন, তাঁদের সবার ডিজাইনার এক, তাহলে কিন্তু আপনি ভুল! আসলে একজনই এই বিশেষ দিনে তাঁদের শাড়ি পরিয়েছিলেন। আপনি কি তাঁকে চেনেন? তিনি ডলি জৈন। একজন পেশাদার শাড়ি ড্রেপার।
অর্থাৎ, তাঁর কাজই হল শাড়ি পরানো। কলকাতার এই বিশেষ শিল্পীর কিন্তু বলিউডের বিখ্যাত বিখ্যাত অভিনেত্রীও কিন্তু ডলি জৈনর ক্লায়েন্ট। ডলি জৈনর ব্যাপারে কিছু কথা আজ আলোচনা করা যাক।
“আগে মেয়েরা তাঁদের মা বা কাকিমার কাছে শাড়ি পরতে যেতেন। কিংবা স্থানীয় পার্লরের বিউটিশিয়ানদের কাছেও শাড়ি পরতে যেতেন। কিন্তু এখন তাঁরা বুঝতে পারেন যে, কোনও পেশাদার শিল্পী আরও ভালো করে শাড়ি পরাতে পারবেন। তাঁর কাজে কিছু অন্যরকম ছোঁয়া থাকবে। যা আর কারও শাড়িতে থাকবে না।”
ইকোনমিক টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন ডলি। তিনি মাত্র ১৮.৫ সেকেন্ডে শাড়ি পরাতে পারেন। ১২৫ ভাবে শাড়ি পরিয়ে লিমকা বুক অফ রেকর্ডসে নামও আছে তাঁর। পরবর্তীকালে নিজেই সেই সংখ্যা বাড়িয়েছেন। ৩২৫ ভাবে শাড়ি পরাতে পারেন তিনি।
দীপিকা পাড়ুকোন থেকে শুরু করে আলিয়া ভট্ট, একাধিক অভিনেত্রীর বিয়ের দিন শাড়ি পরিয়েছেন এই ডলি জৈন। নানা বলিউড অভিনেত্রী তাঁর ক্লায়েন্ট। তাঁর কাছে শাড়ি পরার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন তাঁরা। তবে শুধুই বলিউড অভিনেত্রী নয়, এমনকী আম্বানি পরিবারের মহিলারাও কিন্তু এই ডলি জৈনর কাছে শাড়ি পরে থাকেন।
ইশা আম্বানির বিয়ের দিন তাঁকে শাড়ি ড্রেপ করেছিলেন ডলি। এছাড়াও মুকেশ আম্বানির স্ত্রী নীতা আম্বানিকেও শাড়ি ড্রেপ করেন ডলি। নানা অনুষ্ঠানেই তা করে থাকেন। দীপিকা বা আলিয়া ঠিক যেভাবে শাড়ি পরতে ভালোবাসেন, সেভাবেই শাড়ি পরিয়ে দেন তিনি।
ডলি জৈন একজন গৃহবধু ছিলেন। যখন তিনি শাড়ি পরে আসতেন, তখন তাঁর শাড়ি ড্রেপিংয়ের প্রশংসা করত সবাই। এমনকী অন্যদেরও শাড়ি পরিয়ে দিতেন তিনি। এছাড়া বাকিদের সেভাবে শাড়ি পরাতে শেখাতেনও। ডলি একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, “আমি একজন কনেকে সাহায্য করছিলাম। তাঁর ওড়না এত ভারী ছিল যে অসুবিধা হচ্ছিল। আমি তাঁকে সেটা ম্যানেজ করতে সাহায্য করছিলাম।
সেই সময়ে আবু জানি সন্দীপ খোসলা আমার কাজ দেখেন। তা দেখে খুবই ইমপ্রেস হয়েছিলেন তাঁরা। এরপর তারকাদের কাছে আমায় রেকমেন্ড করতে থাকেন। আমি যখন শ্রীদেবীকে শাড়ি পরিয়েছিলাম, তিনি বলেছিলেন যে, আমার আঙুলে জাদু আছে। এটাকে একটি পেশা হিসেবে এগিয়ে নিয়ে যেতে। সেই সময় আমার মাথায় সেই পরিকল্পনা আসে প্রথমবারের জন্য।”
নানা ভাবেই শাড়ি পরাতে পারেন ডলি জৈন। আজ প্রায় ১৫ বছর ধরে এই পেশার সঙ্গে যুক্ত তিনি। আজ সারা ভারতেই তাঁর খুব নামডাক। তারকারা সবাই তাঁর থেকেই শাড়ি পরতে চান।
ডলির কথায়, “একজন মহিলাকে খুশি করা খুবই কঠিন কাজ। আর আমি প্রতিবারই তা করি। গত ১৫ বছর ধরে সকালে উঠে একটি ম্যানিকুইনকে শাড়ি পরানো অভ্যাস করি। যেমন একজন সঙ্গীতশিল্পী রেওয়াজ করেন।”
তিনি শাড়ি পরানোর সময় নানা ট্রিক কাজে লাগান। যেমন প্লিট ঠিক করার জন্য স্ট্রেটনার ব্যবহার করে থাকেন। আরও অনেক কিছুই করে থাকেন তিনি। তবে কত টাকা পারিশ্রমিক নেন ডলি জৈন? আসলে সেই কথা তিনি প্রকাশ করতে চাননি। কারণ তিনি তাঁর ক্লায়েন্টদের সঙ্গে একটি চুক্তি সাক্ষর করেন প্রতিবার। সে জন্য সেই পারিশ্রমিকের কথা তিনি জানাতে পারেন না। তবে তিনি সাধারণত ৩৫ হাজার টাকা থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত পারিশ্রমিক নেন বলে জানিয়েছেন সাক্ষাৎকারে। এটা একটু পরিবর্তন হলেও হতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।