জুমবাংলা ডেস্ক : বর্তমান সময়ে সাধারণ মানুষের জীবনে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়ের একটি হলো জ্বালানি তেলের দাম। এই দামে সামান্য পরিবর্তনও প্রভাব ফেলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য ও গণপরিবহন সেবার উপর। ৩১ মে ২০২৫ তারিখে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ থেকে প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জানানো হয় যে, জুন মাসের জন্য ডিজেল, পেট্রোল ও অকটেনের দাম কমানো হয়েছে, তবে কেরোসিনের দাম বাড়ানো হয়েছে।
Table of Contents
ডিজেল পেট্রোলের দাম কমলো: জুনে কিছুটা স্বস্তি
সরকারের ঘোষণায় বলা হয়েছে, ডিজেল পেট্রোলের দাম ১ জুন ২০২৫ থেকে নতুন হারে কার্যকর হবে। ডিজেলের দাম প্রতি লিটার ১০৪ টাকা থেকে ২ টাকা কমিয়ে ১০২ টাকা করা হয়েছে। পেট্রোলের দাম ১২১ টাকা থেকে ৩ টাকা কমিয়ে ১১৮ টাকা এবং অকটেন ১২৫ টাকা থেকে কমে ১২২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই হ্রাস সাধারণ ভোক্তাদের জন্য কিছুটা স্বস্তির কারণ হতে পারে, বিশেষ করে যাদের নিত্যযাতায়াতে ডিজেলচালিত যানবাহনের উপর নির্ভর করতে হয়।
কেরোসিনের দাম বৃদ্ধি: কারণ ও প্রভাব
অন্যদিকে, কেরোসিনের দাম প্রতি লিটার ১০৪ টাকা থেকে ১০ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা করা হয়েছে। সাধারণত ডিজেল ও কেরোসিনের দাম একত্রে সমন্বয় করা হয়, কিন্তু এবার এক ব্যতিক্রম চিত্র দেখা যাচ্ছে। জ্বালানি বিভাগ বলছে, কেরোসিনের দাম বৃদ্ধির পেছনে অন্যতম কারণ হচ্ছে ভেজাল প্রতিরোধ। অনেক সময় ডিজেলের সাথে কেরোসিন মিশিয়ে ভেজাল জ্বালানি তৈরি করা হয়, যা যন্ত্রপাতির ক্ষতি করে এবং দীর্ঘমেয়াদে পরিবেশেরও ক্ষতি ডেকে আনে। এই ভেজাল বন্ধ করতে কেরোসিনের দাম ডিজেলের চেয়ে আলাদা রাখা হয়েছে।
বিশ্ববাজারের সঙ্গে মিল রেখে দাম নির্ধারণ
বাংলাদেশ সরকার প্রতি মাসেই বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ওঠানামার ভিত্তিতে দেশের অভ্যন্তরে দাম নির্ধারণ করে। মে মাসে যেমন ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ১০৫ টাকা থেকে কমিয়ে ১০৪ টাকা করা হয়েছিল, এবার জুনে আরও পরিবর্তন এসেছে। এপ্রিল ও মার্চে সরকার জ্বালানি তেলের দাম অপরিবর্তিত রেখেছিল, কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন ও পেট্রোলের দাম সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছিল।
দামের পরিবর্তনে ভোক্তার প্রতিক্রিয়া
জ্বালানি তেলের দামের উপর সাধারণ জনগণের প্রতিক্রিয়া মিশ্র। যারা রিকশা, অটোরিকশা, বাইক কিংবা ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করেন, তাদের জন্য পেট্রোল ও অকটেনের দাম কমা স্বস্তির খবর হলেও কেরোসিন নির্ভর নিম্নআয়ের মানুষের জন্য এটি একটি বোঝা হয়ে দাঁড়াতে পারে। তবে জ্বালানি তেলের ভেজাল রোধে এটি একটি কার্যকর পদক্ষেপ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
পূর্ববর্তী দামের হালনাগাদ: জানুন বিস্তারিত
ফেব্রুয়ারিতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ১০৪ টাকা থেকে এক টাকা বাড়িয়ে ১০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। অকটেন ছিল ১২৬ টাকা, আর পেট্রোল ১২২ টাকা। মার্চ ও এপ্রিল মাসে এই দাম অপরিবর্তিত ছিল। মে মাসে এক টাকা করে কমিয়ে ডিজেল ও কেরোসিন ১০৪ টাকা করা হয়, অকটেন ও পেট্রোল যথাক্রমে ১২৫ এবং ১২১ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছিল। এই ধারাবাহিক হ্রাস- বৃদ্ধি জ্বালানি ব্যবস্থাপনার একটি কৌশলগত অংশ।
বিশ্লেষণ ও ভবিষ্যৎ পূর্বাভাস
বিশ্ববাজারে তেলের দাম আগামী মাসগুলোতে কেমন থাকবে, তা এখনও অনিশ্চিত। কিন্তু সামগ্রিকভাবে দেশের জ্বালানি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনার জন্য সরকারের এই পদক্ষেপগুলো প্রশংসনীয়। ভবিষ্যতে ডিজিটাল মনিটরিং এবং পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ব্যবহারে জোর দিলে আরও ইতিবাচক পরিবর্তন আশা করা যায়। অর্থনীতি বিভাগে এ বিষয়ে আরও বিশ্লেষণ পাওয়া যাবে।
ডিজেল পেট্রোলের দাম কমার ফলে সাধারণ জনগণের দৈনন্দিন ব্যয় কিছুটা হ্রাস পাবে বলে আশা করা যায়। একইসঙ্গে, কেরোসিনের দাম বৃদ্ধি ভেজাল প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। জ্বালানি খাতে এই স্বচ্ছতা ও সচেতনতা সময়োপযোগী এবং জনসাধারণের জন্য ইতিবাচক বার্তা বহন করে।
❓ প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQs)
✅ জুন মাসে ডিজেল ও পেট্রোলের দাম কত নির্ধারণ করা হয়েছে?
ডিজেল ১০২ টাকা এবং পেট্রোল ১১৮ টাকা প্রতি লিটার নির্ধারণ করা হয়েছে।
✅ কেরোসিনের দাম কেন বাড়ানো হয়েছে?
ভেজাল প্রতিরোধ এবং বাজারে কেরোসিনের ব্যবহারে স্বচ্ছতা আনতে দাম বাড়ানো হয়েছে।
✅ এই দাম কবে থেকে কার্যকর হবে?
১ জুন ২০২৫ থেকে এই দাম কার্যকর হবে।
✅ কীভাবে এই দাম পরিবর্তন নির্ধারণ করা হয়?
প্রতি মাসে বিশ্ববাজারের মূল্য ওঠানামার উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ সরকার দাম নির্ধারণ করে।
✅ পেট্রোলের দাম কমলে সাধারণ মানুষের কী লাভ?
গাড়ির জ্বালানির খরচ কমে, যা নিত্যযাতায়াত ও পণ্যের পরিবহন ব্যয়ে প্রভাব ফেলে।
✅ দাম পরিবর্তনে পরিবহন খাতে কী প্রভাব পড়বে?
পরিবহন ব্যয় সামান্য কমবে, ফলে পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে সহায়ক হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।