ডিএনএর ডাবল হেলিক্স বা দ্বি-সর্পিল কাঠামো আবিষ্কারকদের অন্যতম,নোবেল বিজয়ী মার্কিন বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন ৯৭ বছর বয়সে মারা গেছেন। বিংশ শতাব্দীর অন্যতম সেরা এই বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার আণবিক জীববিজ্ঞানে যুগান্তকারী অগ্রগতির পথ সুগম করে। কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরি বিবিসিকে ওয়াটসনের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছে।

দ্য নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ওয়াটসন চলতি সপ্তাহে লং আইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে (মৃত্যুপথযাত্রীদের জন্য বিশেষায়িত সেবা কেন্দ্র) মারা যান।
ওয়াটসন ১৯৫৩ সালে ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ফ্রান্সিস ক্রিকের সঙ্গে ডিএনএর কাঠামো আবিষ্কার করেন, যা বংশগতিবিদ্যার যুগের সূচনা করে এবং জৈবপ্রযুক্তি বিপ্লবের ভিত্তি স্থাপন করে। এই আবিষ্কারের জন্য তিনি ১৯৬২ সালে মরিস উইলকিনস ও ক্রিকের সঙ্গে যৌথভাবে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পান। সে সময় তারা বলেছিলেন, আমরা জীবনের রহস্য উন্মোচন করেছি।
তবে জাতি ও লিঙ্গ বিষয়ে করা মন্তব্যের কারণে ওয়াটসনের খ্যাতি ও সম্মান মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এক টিভি অনুষ্ঠানে তিনি দাবি করেছিলেন, শ্বেতাঙ্গ ও কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে গড় আইকিউ-এর পার্থক্যের পেছনে জিনগত কারণ রয়েছে।
২০০৭ সালে তিনি টাইমস পত্রিকাকে বলেছিলেন, তিনি আফ্রিকার ভবিষ্যৎ নিয়ে সহজাতভাবেই হতাশ। এই মন্তব্যের জেরে তিনি নিউইয়র্কের কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরিতে চ্যান্সেলরের পদ হারান। যেখানে তিনি কয়েক দশক ধরে কাজ ও গবেষণা করেছেন। ২০১৯ সালে আবারও জাতি ও বুদ্ধিমত্তার মধ্যে যোগসূত্রের ইঙ্গিত দিলে গবেষণাগারটি তার সম্মানসূচক উপাধিগুলো বাতিল করে দেয়।
ল্যাবরেটরিটি এক বিবৃতিতে জানায়, ড. ওয়াটসনের বক্তব্য নিন্দনীয় এবং বিজ্ঞান দ্বারা সমর্থিত নয়।
ওয়াটসন এবং ক্রিক ডিএনএর মডেল তৈরির জন্য এক্স-রে ক্রিস্টালোগ্রাফার রোজালিন্ড ফ্র্যাঙ্কলিনের সংগৃহীত প্রাথমিক তথ্য ব্যবহার করার জন্য ব্যাপক সমালোচমার শিকার হয়েছিলেন। তারা ফ্র্যাঙ্কলিনের অবদানকে পুরোপুরি স্বীকৃতি দেননি।
জাতি বিষয়ক মন্তব্যের পর বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায় থেকে একঘরে হয়ে পড়েছেন—এই কারণ উল্লেখ করে ওয়াটসন ২০১৪ সালে তার নোবেল পুরস্কারের স্বর্ণপদকটি নিলামে তুলে ৪.৮ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি করে দেন। একজন রুশ ধনকুবের পদকটি কিনে সঙ্গে সঙ্গেই তা ওয়াটসনকে ফিরিয়ে দেন।
উল্লেখ্য ওয়াটসন ১৯২৮ সালের এপ্রিলে শিকাগোতে জন্মগ্রহণ করেন এবং মাত্র ১৫ বছর বয়সে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য বৃত্তি লাভ করেন। তিনি ডিএনএর কাঠামো নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যেতে কেমব্রিজে যান, যেখানে তার সঙ্গে ক্রিকের পরিচয় হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



