লাইফস্টাইল ডেস্ক : স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় সাধারণত কেউই ট্যাপের পানি পান করেন না। আর ঘরের বাইরে বিভিন্ন খাবারের দোকানের পানি তো আরও ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে তখন বোতলজাত পানিতেই ভরসা। বোতলজাত পানির কোম্পানিগুলো তাদের পণ্যকে প্রায় শতভাগ বিশুদ্ধ বলেই দাবি করে। আবার অনেকে পানির বোতলগুলো বিভিন্ন কাজে দীর্ঘদিন ব্যবহার করেন। যদিও বিশ্বব্যাপী এ ধরনের বোতলকে ওয়ানটাইম প্লাস্টিক বলা হয়।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, বোতলজাত পানিতে জীবাণু দূষণ না থাকলেও এতে থাকে বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক কণা। যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় তিনটি পানির ব্র্যান্ডের প্লাস্টিকের বোতল নিয়ে গবেষণা করে দেখা গেছে, বোতলের ১ লিটার পানিতে ২৪ হাজার প্লাস্টিক কণা থাকে।
গত জানুয়ারির শুরুর দিকে প্রসেডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সে গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকেরা দেখেছেন, ১ লিটার প্লাস্টিকের বোতলের পানিতে প্লাস্টিকের ২৪ হাজার কণা (১ লাখ ১০ হাজার থেকে ৩ লাখ ৭০ হাজার অতিক্ষুদ্র কণার সমান) থাকে। এর প্রায় ৯০ শতাংশ ন্যানোপ্লাস্টিক (১ মাইক্রোমিটারের চেয়ে ছোট কণা)। আর বাকি ১০ শতাংশ মাইক্রোপ্লাস্টিক (৫ মিলিমিটারের চেয়ে বড় কিন্তু ১ মাইক্রোমিটারের চেয়ে বড়)। উল্লেখ্য যে, ১ মিলিমিটারের চেয়ে ১ মাইক্রোমিটার ১ হাজার গুণ ছোট।
গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, এর আগে প্রকাশিত বিভিন্ন পরিসংখ্যানের চেয়ে এই গবেষণায় বোতলজাত পানিতে মাইক্রোপ্লাস্টিকের মাত্রা অনেক বেশি দেখা যায়। এটি স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এ বিষয়ে আরও পরীক্ষা–নিরীক্ষা করতে হবে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মাইক্রোপ্লাস্টিক ও ন্যানোপ্লাস্টিকের ওপর বিশ্বব্যাপী মনোযোগ বেড়েছে। মেরু অঞ্চলের বরফখণ্ড থেকে পর্বতশৃঙ্গ পর্যন্ত এবং এমনকি আর্কটিক বায়ু (ঠান্ডা ও শুষ্ক বায়ু) ও মেঘেও এগুলো পাওয়া যায়। মাইক্রোপ্লাস্টিক ও ন্যানোপ্লাস্টিক বাস্তুতন্ত্রে অনুপ্রবেশ করে। খাবার ও নদী–সাগরের পানিতেও পাওয়া যায়।
ন্যানোপ্লাস্টিকগুলো অনেক ছোট হওয়ায় খুব সহজে ফুসফুস ও পরিপাকতন্ত্রে প্রবেশ করে। রক্তের সঙ্গে মিশে গিয়ে মস্তিষ্ক ও হৃৎপিণ্ডে পৌঁছে যায়। এমনকি প্লাসেন্টা বা অমরার মধ্যে প্রবেশ করে ভ্রূণেরও ক্ষতি করতে পারে।
নিরাপদ থাকতে করণীয়
গবেষণার সহ–লেখক ভূ–রসায়নের অধ্যাপক বেইজহান ইয়ান বলেন, যদি বোতলজাত পানিতে ন্যানোপ্লাস্টিক নিয়ে মানুষ উদ্বিগ্ন থাকে, তাহলে ট্যাপের পানির মতো বিকল্প বিবেচনা করাই যুক্তিযুক্ত।
আর কেউ যদি কলের পানিতে থাকা দূষিত পদার্থের বিষয়ে উদ্বিগ্ন হন, তাহলে একটি সাশ্রয়ী মূল্যের ফিল্টার ব্যবহার করতে পারে। খাওয়ার পানি বহন করার একটি ভালো বিকল্প হলো, পুনঃব্যবহারযোগ্য শক্ত কাচ বা ধাতব বোতল ব্যবহার করা। এগুলো বছরের পর বছর ধরে ব্যবহার করা যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।