লাইফস্টাইল ডেস্ক : সম্প্রতি আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরের প্রখ্যাত স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ব্রায়ান লেভিন প্রকাশ্যে এনেছেন এমন অভিজ্ঞতার কথা যা চমকে দিয়েছে গোটা বিশ্বের চিকিৎসক মহলকে। ডঃ ব্রায়ান জানিয়েছেন, আমেরিকাতে কৃত্রিম প্রজননের ক্ষেত্রে একটি নতুন প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। যে সব মহিলারা আইভিএফ পদ্ধতির মাধ্যমে মা হতে চাইছেন তাঁদের মধ্যে অনেকেই দাতার শুক্রাণু কতটা ভাল তা নিশ্চিত করতে কোটি কোটি টাকা খসাচ্ছেন।
সহজ ভাষায় বললে, তাঁরা শুক্রাণু গ্রহণের আগে পরীক্ষা করে দেখে নিতে চাইছেন কোন শুক্রাণুর প্রজনন ক্ষমতা কতটা। এই পরীক্ষায় খরচ হয় প্রায় এক লক্ষ মার্কিন ডলার। যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় আশি লক্ষ টাকারও বেশি। শুধু তাই নয়, দাতা আমেরিকান, একথা নিশ্চিত করতে বেশি টাকা খরচ করতেও রাজি হচ্ছেন তাঁরা। শুধু আমেরিকায় নয়, ব্রিটেন সহ পশ্চিম ইউরোপের বিভিন্ন দেশেও আমেরিকান দাতাদের শুক্রাণুর দাম সবচেয়ে বেশি বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। ওজন হিসাবে মাপলে এক গ্রাম সবচেয়ে ভাল মানের বীর্যের দাম চার হাজার ডলার পর্যন্ত হতে পারে বলে খবর। অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় সাড়ে তিন লক্ষের কাছাকাছি।
ভারতে অবশ্য এই ধরনের কাজের উপর বেশ কিছু বিধিনিষেধ আছে। অ্যাসিসটেড রিপ্রোডাকটিভ টেকনোলজি রেগুলেশন অ্যাক্ট ২০২১ অনুযায়ী শুক্রাণু দানের ক্ষেত্রে নৈতিকতা মেনে চলা আবশ্যিক। অ্যাসিসটেড রিপ্রোডাকটিভ টেকনোলজি অ্যান্ড সরোগেসি বোর্ড এই গোটা প্রক্রিয়ার উপর নজরদারি করে। সাধারণত যাঁরা ভারতে শুক্রাণু দান করেন তাঁদের সংশ্লিষ্ট ক্লিনিকের পক্ষ থেকে কিছু সাম্মানিক দেওয়া হয়। তবে এই ধরনের বিপুল টাকার আদানপ্রদান হয় না।
এ ছাড়াও ভারতে শুক্রাণু দান করার জন্য বেশ কিছু নিয়ম মানতে হয়-
* দাতা হওয়ার যোগ্যতা:
* দাতার বয়স ২১ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে হতে হবে।
* দাতাকে এইচআইভি, ক্ল্যামিডিয়া, গনোরিয়া, সিফিলিস এবং হেপাটাইটিস সি-এর মতো সংক্রামক রোগ থেকে মুক্ত থাকতে হবে।
* দাতার কোনও জিনগত ব্যাধি বা সিস্টিক ফাইব্রোসিসের মতো চিকিৎসাগত অবস্থার ইতিহাস থাকা চলবে না।
* দাতা নিয়মিত ধূমপায়ী, মাদক ব্যবহারকারী বা মদ্যপ হলে শুক্রাণু দান করা যাবে না।
* পরিচয় গোপন রাখা:
* দাতার পরিচয় এবং ঠিকানা জানার অধিকার ক্লিনিক বা দম্পতি কারও থাকবে না।
* অন্যান্য নিয়ম:
* স্ত্রী বা স্বামীর আত্মীয় বা পরিচিত বন্ধুর দ্বারা দানকৃত শুক্রাণু ব্যবহার অনুমোদিত নয়।
* রক্তের গ্রুপ এবং ব্যক্তির আরএইচ স্ট্যাটাস নির্ধারণ এবং রেকর্ড করা হবে।
* দাতার অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্য যেমন উচ্চতা, ওজন, বয়স, শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা, ত্বক ও চোখের রঙ, যেকোনো মানসিক ব্যাধি সহ বড় রোগের রেকর্ড এবং কোনও পারিবারিক ব্যাধির ইতিহাসের ক্ষেত্রে পারিবারিক পটভূমিও রেকর্ড করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।