লাইফস্টাইল ডেস্ক : রাত ঠিক ২টো বা ৩টে। চোখের পাতা আপনা থেকেই খুলে যায়। প্রায় প্রতি দিনই রাত ৩টে নাগাদ ঘুম ভাঙে অনেকেরই। কেন এমন হচ্ছে জানেন?

দেশের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ’-এর গবেষণা বলছে, রাত ২টো থেকে ৩টের মধ্যে ঘুম ভেঙে যাওয়ার ঘটনা অস্বাভাবিক নয়। অনেকেরই এমন হয়। তবে লাগাতার যদি এমন হতে থাকে তখন সেটি চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। ওই সময়ে শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে থাকে অনেকের। তা ছাড়া নানা রকম হরমোনের ক্ষরণ শুরু হয় রাত ২টো থেকে ৩টের মধ্যেই। বিশেষ করে ‘স্ট্রেস হরমোন’ কর্টিসোলের ক্ষরণ বাড়ে ওই সময়টাতেই। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, কর্টিসোলের মাত্রা সারা দিন কম থাকে, মধ্যরাতের পর থেকে ধীরে ধীরে তার ক্ষরণ বাড়ে। যাঁরা খুব বেশি মানসিক চাপে থাকেন অথবা উদ্বেগে ভোগেন, তাঁদের এই হরমোন ক্ষরণের মাত্রা বেড়ে যায়। তাই ওই সময়টাতেই ‘স্লিপ সাইকেল’-এ বদল আসে। ফলে ঘুম ভেঙে যায়।
হাইপারগ্লাইসেমিয়াও আরও একটি কারণ। ওই সময়েই রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে। প্রতি ডেসিলিটার রক্তে শর্করার মাত্রা ১০০ মিলিগ্রামের বেশি হলে তাকে হাইপারগ্লাইসেমিয়া বলে। আসলে গ্লুকোজ ভেঙে শক্তি তৈরি হয়। ভোর রাতের দিকে যদি কর্টিসোল ও অ্যাড্রিনালিন হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, তখন রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে পারে। যাঁরা রাতে ঘুমোনোর সময়ে প্রচণ্ড দুশ্চিন্তা করেন অথবা চা-কফি বা অ্যালকোহল বেশি পরিমাণে খান, তাঁদের শরীরে হরমোনের তারতম্য বেশি হয়। ফলে ‘স্লিপ সাইকেল’ বদলে যায়।
রাতে শোয়ার আগে বেশি ভাজাভুজি বা তেলমশলা দেওয়া খাবার খেলে অ্যাসিড রিফ্লাক্স হতে পারে। সে কারণেও ঘুম ভাঙতে পারে। তা ছাড়া যদি কেউ শুয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মোবাইল দেখেন বা অন্ধকার ঘরে মোবাইল বা ল্যাপটপে সিনেমা দেখেন, তা হলে বৈদ্যুতিন ডিভাইস থেকে বেরোনো নীল আলো রেটিনার যেমন ক্ষতি করবে, তেমনই ঘুমের হরমোন মেলাটোনিনের ক্ষরণেও তারতম্য হবে। ফলে ঘুম ভেঙে যাবে বার বার।
সে কারণেই রাতে শোয়ার আগে মেডিটেশন বা ধ্যান করার পরামর্শ দেওয়া হয়। সেটি নিয়মিত করলে উদ্বেগ কমবে, ঘুমও ভাল হবে। অন্তত ১৫ মিনিট ধ্যান অভ্যাস করতে পারলে ভাল হয়। আর শুতে যাওয়ার অন্তত ঘণ্টা দুয়েক আগে রাতের খাবার খেয়ে নিতে হবে। এতে হজমে গোলমাল হবে না, ঘুমেরও ব্যাঘাত ঘটবে না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



