বিনোদন ডেস্ক : কয়েক মাস ধরে একটি ছবিতে তাদের রক্ত ও ঘাম দেওয়ার পর অভিনেতারা তাদের সিনেমা রূপালী পর্দায় মুক্তির জন্য অপেক্ষা করেন। সেই সিনেমা যখন দর্শকদের প্রভাবিত করতে ব্যর্থ হয় এবং মুক্তির কয়েকদিনের মধ্যেই প্রেক্ষাগৃহ থেকে নামিয়ে দেয়, তখন সেটা যেকোন অভিনেতার জন্যই কষ্টের। সম্প্রতি কঙ্গনা রানাউত অভিনীত ‘ধাকড়’ সিনেমাটি এরকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলো। তবে ‘ধাকড়’ সিনেমাটিই প্রথম নয় এর আগেও বেশ কয়েকটি বড় বাজেটের সিনেমার প্রদর্শনী হতে দেখা গেছে।
প্রদর্শনী বাতিল হওয়ার সবচেয়ে বড় কারন হিসেবে দেখা গেছে দর্শকশূন্যতা। মুক্তির পর এই সিনেমাগুলোর প্রতি দর্শকদের আগ্রহে ভাঁটা পরার কারনে প্রেক্ষগৃহে প্রদর্শনী চালিয়ে যাওয়া কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় প্রেক্ষগৃহ মালিকদের কাছে। অনেক সময় দেখা গেছে মুক্তির কয়েকদিনের মধ্যেই সিনেমাগুলোর প্রদর্শনী বাতিল করে অন্য সিনেমা চালান প্রেক্ষগৃহ মালিকরা। দর্শকশূন্যতায় বাতিল হয়েছিলো প্রদর্শনী, এমন কয়েকটি বড় বাজেটের সিনেমা নিয়ে আলোচনা থাকছে এই প্রতিবেদনে।
০১। ধাকড়
দর্শকশূন্যতায় প্রদর্শনী বাতিল হওয়ার সর্বশেষ উদাহরণ হচ্ছে কঙ্গনা রানাউত অভিনীত ‘ধাকড়’ সিনেমাটি। অ্যাকশন গল্পের সিনেমাটি মুক্তির আগে বেশ আলোচিত হয়েছিলো আর সিনেমাটি নিয়ে বিভিন্ন সময় নিজের প্রত্যাশার কথাও জানিয়েছিলেন কঙ্গনা রানাউত। কিন্তু মুক্তির পর প্রেক্ষগৃহে দেখা গেছে পুরোপুরি উল্টো চিত্র। প্রথমদিন থেকেই দর্শকশূন্যতায় ভুগতে দেখা গেছে সিনেমাটিকে। এরপর মাত্র তিনদিনের মাথায় সিনেমাটির প্রদর্শনী বাতিল করে ‘ভুল ভুলাইয়া ২’ চালিয়েছেন প্রেক্ষগৃহ মালিকরা।
০২। জয়েশভাই জোয়ার্দার
‘ধাকড়’ সিনেমার কয়েক সপ্তাহ আগে মুক্তিপ্রাপ্ত রনভির সিং অভিনীত ‘জয়েশভাই জোয়ার্দার’ সিনেমাটির ক্ষেত্রেও দেখা গেছে একই চিত্র। দক্ষিণ সিনেমার সাফল্যের মধ্যে, রনভির সিং অভিনীত ‘জয়েশভাই জোয়ার্দার’ ভালো প্রত্যাশা নিয়ে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিলো। তবে মুক্তির পর সিনেমাটি দর্শকদের মন জয় করতে ব্যর্থ হয়েছে। দর্শকশূন্যতার কারনে সারা দেশে সিনেমাটির প্রায় ৩০ শতাংশ প্রদর্শনী বাতিল করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
০৩। ৮৩
দীর্ঘ অপেক্ষার পর গত বছরের ক্রিসমাসে মুক্তি পেয়েছিলো রনভির সিং অভিনীত বহুল প্রতীক্ষিত সিনেমা ‘৮৩’। ভারতের ১৯৮৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয়ের গল্প নিয়ে নির্মিত সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন কবির খান। ট্রেলার প্রকাশের পর সিনেমাটি নিয়ে সবার প্রত্যাশা ছিলো আকাশচুম্বী। যদিও এটিকে বছরের সবচেয়ে প্রতীক্ষিত চলচ্চিত্রগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছিল, কবির খানের পরিচালনায় দর্শকদের একটি পয়েন্টের পরে প্রেক্ষাগৃহে প্রলুব্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছিল৷ কম লোক সমাগমের কারণে, ছোট কেন্দ্রগুলিতে সিনেমাটির প্রদর্শনী বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এবং এর পরিবর্তে ‘স্পাইডার-ম্যান: নো ওয়ে হোম’ এবং ‘পুষ্প: দ্য রাইজ পার্ট ০১’ প্রদর্শন করা হয়েছিলো।
০৪। টিউবলাইট
এটি সবাইকেই হতবাক করে যখন সালমান খান অভিনীত তার ভক্তদের প্রেক্ষাগৃহে আকৃষ্ট করতে ব্যর্থ হয় এবং কবির খান পরিচালিত ‘টিউবলাইট’ ছিল এরকম একটি চলচ্চিত্র। ভারতের বেশ কিছু প্রেক্ষাগৃহ সিনেমাটির প্রদর্শনী-এর সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছিলো বলে জানা গেছে। এছাড়া কিছু কিছু কেন্দ্রে সিনেমাটির টিকেটের দামও কমিয়ে দেয়া হয়েছিলো কম সংখ্যক দর্শক সমাগমের কারণে। ‘ওয়ান্ডার ওম্যান’ এবং ‘ডেসপিকেবল মি ৩’-এর মতো হলিউড সিনেমাগুলো সেই শূন্যস্থান পূরণ করতে পর্দা দখল করতে দেখা গেছে।
দর্শকশূন্যতায় সিনেমার প্রদর্শনী বাতিল হওয়া নতুন কিছু নয়। তবে এখানে যে সিনেমাগুলোর কথা বলা হয়েছে তার প্রতিটি সিনেমাই ছিলো বড় তারকাদের নিয়ে বড় বাজেটে নির্মিত। ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ এরমত ব্লকবাস্টার সিনেমার পর সালমান খান এবং কবির খান জুটির ‘টিউবলাইট’ সিনেমাটির এই পরিণতি অনেকেরই কল্পনার অতীত ছিলো। এছাড়া ২০১৮ সালের ক্রিসমাসে মুক্তিপ্রাপ্ত ব্লকবাস্টার ‘সিম্বা’ সিনেমার রনভির সিং পরপর দুটি সিনেমার এমন পরিণতি দেখলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।