স্পোর্টস ডেস্ক : লিওনেল মেসিকে নিয়ে প্রশ্নটার উত্তর দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে যাওয়ার কথা ইন্টার মায়ামি কোচ হাভিয়ের মাচেরানোর। এক সময়ে আর্জেন্টিনা জাতীয় দল ও বার্সেলোনায় মেসির সতীর্থ মাচেরানোর প্রতি গত দিন দশেকে বারবার প্রশ্ন গেছে, মেসি কি আসলেই চোটগ্রস্ত নাকি এমনিই তাঁকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। ঠারেঠোরে অভিযোগ উঠেছে, এই মাসে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে আর্জেন্টিনার মহাগুরুত্বপূর্ণ দুই ম্যাচের কারণেই মেসি নিজেকে ঠিকঠাক রাখতে মায়ামির হয়ে মাঠে নামছেন না।
একই ধরনের প্রশ্নের উত্তর দিতে হলো ব্রাজিলে নেইমারের ক্লাব সান্তোসের কোচ পেদ্রো কাইসিনিয়াকেও। বাংলাদেশ সময় গতকাল রাত সাড়ে তিনটায় সাও পাওলোর রাজ্যভিত্তিক টুর্নামেন্ট পাওলিস্তা আ-উমেরের সেমিফাইনালে করিন্থিয়ানসের মাঠে ২-১ গোলে হেরে গেছে সান্তোস, এই ম্যাচে নেইমার খেলেননি। ক্লাবের পক্ষ থেকে জানানো হলো, নেইমারের বাঁ উরুতে অস্বস্তি ছিল। নেইমার নিজেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা-ই জানিয়েছেন। কিন্তু সেটা অনেকেরই যেন বিশ্বাস হলো না।
ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে কাইসিনিয়াকে যে প্রশ্নের উত্তর দিতে হলো, সেদিক থেকে বলা যায়, আর্জেন্টিনা আর ব্রাজিলের ম্যাচের আগে মেসি আর নেইমার যেন একই পথের যাত্রী। মেসির মতো নেইমারকে ঘিরেও অভিযোগ উঠেছে, ব্রাজিলের হয়ে খেলার জন্য নিজেকে ঠিক রাখতে ক্লাবের হয়ে খেলেননি নেইমার!
আর্জেন্টিনা আর ব্রাজিলের ম্যাচের অবশ্য এখনো দেরি আছে। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে এবার দুই দলেরই ম্যাচ খুব কঠিন। আর্জেন্টিনা আগামী ২২ মার্চ উরুগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচের পর ২৬ মার্চ খেলবে ব্রাজিলেরই বিপক্ষে। আর্জেন্টিনা ম্যাচের আগে ব্রাজিলের ম্যাচটি আগামী ২১ মার্চ কলম্বিয়ার বিপক্ষে। নেইমারের অবশ্য একদিক থেকে সুবিধা হলো, ব্রাজিলের দুই ম্যাচের আগে মাঝের এই কয়েকদিনে ক্লাব ফুটবলে সান্তোসের কোনো ম্যাচ নেই। তবে আর্জেন্টিনার ম্যাচের আগে মেসির ক্লাব ইন্টার মায়ামির আরও দুটি ম্যাচ আছে। সে দিক থেকে মেসি গা বাঁচিয়ে খেললেও তাতে লাভ আর কতটা হলো, সে প্রশ্ন থেকে যায়।
মেসির ক্ষেত্রে ইন্টার মায়ামির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, তাঁর চোট নেই, তবে মাঝে ইন্টার মায়ামির হয়ে দশ দিনের মধ্যে তিন ম্যাচ খেলে ফেলা ৩৭ বছর বয়সী মেসির চোটের আশঙ্কা প্রবল ছিল। প্রযুক্তির এ যুগে এসব ঝুঁকি বের করা আর কোনো ব্যাপারই নয়। ইন্টার মায়ামি তাই সর্বশেষ দুই ম্যাচের স্কোয়াডেই মেসিকে রাখেনি। আজ শার্লটের বিপক্ষে মায়ামির ১-০ গোলে জয়ের ম্যাচে মেসি বেঞ্চে ছিলেন বটে, তবে তাঁকে মাঠে নামানো হয়নি। কোচ মাচেরানো ম্যাচের পর ব্যাখ্যায় বলেছেন, ৩৮ মিনিটে গোলকিপার অস্কার উস্তারি লাল কার্ড দেখায় মায়ামি দশ জনের হয়ে পড়ে, এরপরও ৪৬ মিনিটে তাদেও আল্লেন্দের গোলে এগিয়ে যাওয়া মায়ামি মেসিকে নিয়ে তাই আর ঝুঁকি নেয়নি।
আর সান্তোসের ক্ষেত্রে নেইমারের না খেলার ব্যাখ্যা তো ম্যাচের আগেই দেওয়া হয়েছে। গত সপ্তাহে ব্রাগান্তিনোর বিপক্ষে সান্তোসের ২-০ গোলে জয়ের ম্যাচে পেশিতে টান পড়েছিল নেইমারের। সেই চোট থেকেই নেইমার সেরে ওঠেননি বলে দাবি সান্তোসের। নেইমার নিজেও ম্যাচের আগে ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ‘আজ যেকোনোভাবে মাঠে থাকতে চেয়েছিলাম, যেভাবে সম্ভব সেভাবে দলকে সাহায্য করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু গত সপ্তাহে (পেশিতে) অস্বস্তি বোধ করেছিলাম, সেটাই আজ আমাকে মাঠে নামতে দিল না। আজ সকালেই আমরা টেস্ট করেছি এবং সেখানে আবার ব্যথাটা টের পাই।’
এরপরও কিছু প্রতিবেদনে আভাস দেওয়া হয়, ২০২৩ সালের অক্টোবরের পর প্রথমবার ব্রাজিলের জার্সিতে খেলতে যাওয়া ৩৩ বছর বয়সী নেইমারকে জাতীয় দলের জন্য প্রস্তুত রাখতেই সান্তোসের হয়ে খেলানো হয়নি। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে সান্তোস কোচ পেদ্রো কাইসিনিয়া বলেছেন, ‘আমরা শুধু একটা ব্যাপার নিয়েই ভেবেছি, তা হলো, সে অস্বস্তিতে আছে। আর সে অস্বস্তিতে থাকলে ওকে আমি সান্তোসের হয়ে খেলানোর ঝুঁকি নেব না। আমি ব্রাজিল জাতীয় দল নিয়ে ভাবছি না। যে কোনো খেলোয়াড়ই যদি অস্বস্তি বোধ করে এবং (এরপরও খেলালে) সেটা থেকে চোটে পড়ার আশঙ্কা থাকে, তাহলে আমি তাকে নিয়ে ঝুঁকি নেব না।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।