জুমবাংলা ডেস্ক : সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে ১ জুলাই থেকে আন্দোলন করছেন কোটাবিরোধীরা। শুক্রবার (১২ জুলাই) রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে সমাবেশ করেছেন তারা।
এরই মধ্যে নতুন করে ১০ শতাংশ ধর্মীয় কোটা চালু করার বিষয়ে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দীন। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ নিয়ে একটি পোস্ট করেছেন তিনি।
ওই পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘এ দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা পিছিয়ে আছেন, যদি কোটা সংস্কার করতে হয়, তাহলে সব চাকরিতে ১০% ধর্মীয় সংখ্যালঘু কোটাও বিবেচনা করা উচিত।’
পোস্টের মন্তব্যের অংশে তিনি আরো লিখেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ কর্মকমিশন বরাবর যৌক্তিক হারে কৃষক-শ্রমিক মেহনতী মানুষের সন্তানদের জন্য কোটা ও পিছিয়ে পড়া ধর্মীয় সংখ্যালঘু কোটা চালুর দাবিতে শিগগিরই স্মারকলিপি দেবে।’
আরেকটি মন্তব্যে তিনি একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেন। পিএসসির বরাতে তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন রিপোর্ট ২০২০ অনুসারে বিগত ৩৫-৩৯তম বিসিএস পাঁচটা নিয়োগ পরীক্ষার পরিসংখ্যান : মোট নিয়োগ ১৪,৮১৩ জন, মেধা কোটা ৯,৮১৮ জন (৬৬.২%), জেলা কোটা ২,১২৪ জন, মহিলা কোটা ১,৪২৬ জন, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ১,২৯৮ জন (৮.৭%), ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কোটা ১৩১ জন, প্রতিবন্ধী কোটা ১৬ জন।
আশা করছি এই পরিসংখ্যান অনেক কিছুই পরিস্কার করবে!’
অধ্যাপকআ ক ম জামাল উদ্দীনের ওই পোস্টে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন ৯ শতাধিক ফেসবুক ব্যবহারকারী। আর মন্তব্য এসেছে ১৫৪টি। মন্তব্যকারীদের অধিকাংশকেই এ পোস্টের সমালোচনা করতে দেখা গেছে।
অরিত্র দাস অভি নামের একজন লিখেছেন, ‘সংখ্যালঘু হতে পারি কিন্তু প্রতিবন্ধী না যে কোটার দরকার হবে।
মেধার যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েই ঢাবিতে পড়ছি৷ ভবিষ্যতে মেধার সাক্ষর রেখেই কর্মক্ষেত্রে যাব। কোটার কলা ঝুলিয়ে সামনে সংখ্যালঘুদের সিমপ্যাথি পাওয়া যাবে না।’
অয়ন পাল তার মন্তব্যে লিখেছেন, ‘হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানরা যথেষ্ট যোগ্যতা নিয়ে চাকরিতে অংশগ্রহণ করছে। সম্পূর্ণ (কোটা) তুলে যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি দিক, সমস্যা নাই।’
আল-আমিন খান ফাহিম লিখেছেন, ‘সংখ্যালঘুরা আপনার কাছে কোটা চেয়েছে? তারাও এ দেশের নাগরিক।
মেধার জোরে সমতার ভিত্তিতে চাকরি পেয়ে সম্মানের সাথে চাকরি করবে। ফাও সিমপ্যাথী নেওয়া বাদ দেন স্যার।’
এর আগে গত ৬ জুলাই চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহশিক্ষামূলক বিতর্ক সংগঠন সোশিওলজিক্যাল ডিবেটিং সোসাইটির (এসডিএস) সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসাইনকে অব্যাহতি দিয়ে শাস্তি প্রদান করেন সংগঠনটির মডারেটর অধ্যাপক ড. আ ক ম জামাল উদ্দীন। এর প্রতিবাদে সংগঠনটিতে থাকা ২০২১-২২ সেশনের ২২ জন বিতার্কিক একযোগে পদত্যাগ করেন।
এ ছাড়া গত ২৬ জুন রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক সিনেট অধিবেশন চলাকালে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটার যৌক্তিকতা বোঝাতে পবিত্র কোরআনের সুরা আনফালের একটি আয়াতকে ‘প্রমাণ’ হিসেবে দেখিয়ে বক্তব্য দেন ঢাবির এই অধ্যাপক। এ সময় তিনি ২০১৮ সালে সংগঠিত কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সমালোচনা করেন। কোটাবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়দের ‘স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবির’কর্মী বলেও আখ্যা দেন তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।