দুবাইয়ের রাজকন্যা শেখ মাহরা আল মাকতুম। শরীরি সৌন্দর্যের কারণে বহু আগে নজর কেড়েছেন। রাজপরিবারের এই কন্যার শোবিজ অঙ্গনেও পদচারণা রয়েছে। রাজকীয় আয়োজনে বিয়ে করে যেমন আলোচনার জন্ম দিয়েছিলেন, তেমনই বিচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েও খবরের শিরোনাম হন মাহরা। প্রথম সংসার ভাঙার এক বছরের মাথায় মার্কিন র্যাপারের সঙ্গে বাগদান সেরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন। চলুন জেনে নিই, দুবাইয়ের এই রাজকন্যার আদ্যোপান্ত—
শেখ মাহরা কে
সংযুক্ত আর আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের কন্যা শেখ মাহরা। ২০০৬ সাল থেকে দুবাইয়ের শাসক এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন শেখ মোহাম্মদ। তার ভাই মাকতুম বিন রশিদের মৃত্যুর পর এই পদে আসেন তিনি। শেখ মোহাম্মদের একাধিক স্ত্রী রয়েছে। তার ঔরসজাত সন্তান ২৬ জন। শেখ মাহরা তাদেরই একজন। শেখ মাহরার মা হলেন গ্রিক সোশ্যালাইট জোই গ্রিগোরাকোস। ১৯৯৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি দুবাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন শেখ মাহরা। তার বয়স এখন ৩১ বছর।
শেখ মোহাম্মদ মূলত রিয়েল এস্টেট ডেভেলপমেন্ট থেকে বিপুল সম্পদ আয় করেছেন। দুবাইকে আধুনিক শহরে রূপান্তরের পেছনে অন্যতম কারিগর শেখ মোহাম্মদ। পাম আইল্যান্ডস ও বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন বুর্জ খলিফার মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন তিনি। ২০২৩ সালে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন শেখ মাহরা। তারপর বাবার পথ অনুসরণ করে উদ্যোক্ত হন। ‘মাহরা এম১’ নামে পারফিউম ব্র্যান্ড চালু করেন।
রাজকন্যার বিয়ে
২০২৩ সালের মে মাসে পারিবারিক আয়োজনে বিয়ে করেন শেখ মাহরা আল মাকতুম। তার বরও ওই রাজবংশেরই সদস্য। তার নাম শেখ মানা বিন মোহাম্মদ বিন রশিদ বিন মানা আল মাকতুম। শেখ মাহরার বর শেখ মানা একজন ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা। দুবাইয়ে আবাসন ব্যবসা ও প্রযুক্তি খাতে কয়েকটি সফল ব্যবসায়িক উদ্যোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
শেখ মাহরার নাটকীয় বিচ্ছেদ
২০২৩ সালে বিয়ে করেন শেখ মাহরা। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ইনস্টাগ্রামে বিবাহবিচ্ছেদের ঘোষণা দেন রাজকন্যা। এ পোস্টে শেখ মাহারা লেখেছিলেন, “প্রিয় স্বামী, যেহেতু আপনি অন্য সঙ্গীদের সঙ্গে ব্যস্ত, আমি আমাদের বিবাহবিচ্ছেদের ঘোষণা দিচ্ছি। আমি আপনাকে তালাক দিচ্ছি, আমি আপনাকে তালাক দিচ্ছি, আমি আপনাকে তালাক দিচ্ছি।” যদিও পরবর্তীতে পোস্টটি মুছে ফেলেন রাজকুমারী। জানা যায়, মাহরার বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছিলেন তার বাবা।
রাজকন্যাও একজন মা
শেখ মানা ও শেখ মাহরা দম্পতির বিচ্ছেদ হলেও তার একটি সন্তান রয়েছে। ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন শেখ মাহরা। কন্যার নাম রেখেছেন শেখ মাহরা বিনত মানা বিন মোহাম্মদ আল মাকতুম।
মাহরার নতুন প্রেমের গুঞ্জন
২০২৪ সালের অক্টোবরে গুঞ্জন চাউর হয়, মার্কিন গায়ক ফ্রেঞ্চ মন্টানার সঙ্গে প্রেম করছেন শেখ মাহরা। মূলত, মন্টানাকে নিয়ে দুবাইয়ে ঘোরাঘুরির ছবি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করার পর এই গুঞ্জন চাউর হয়। এরপর প্যারিস ফ্যাশন উইকে হাতে হাত রেখে অংশ নেন তারা; যা তাদের সম্পর্ককে জনসমক্ষে নিয়ে আসে। তারপর শেখ মাহরা ও মন্টানার বিশ্ব ভ্রমণ ও রেস্টুরেন্টে খাওয়ার ছবি প্রকাশ করে মার্কিন গণমাধ্যম টিএমজেড। তাছাড়া ডিজনি ওয়ার্ল্ড ঘোরাঘুরি ও প্যারিসে ভালোবাসার তালায় নিজেদের নাম লেখেন তারা। পরবর্তীতে সেই ছবি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেন।
ফ্রেঞ্চ মন্টানার আসল নাম করিম খারবুশ। মরক্কোয় জন্ম ও বেড়ে ওঠা খারবুশ ১৩ বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। ২০০০ সালের শুরুতে ‘ইয়াং ফ্রেঞ্চ’ নামে আনুষ্ঠানিক সংগীতজীবন শুরু করেন। ‘আনফরগেটেবল’, ‘নো স্টাইলিস্ট’ ও ‘ওয়েলকাম টু দ্য পার্টি’ এর মতো বিখ্যাত গানের এই জনক ‘ফ্রেঞ্চ মন্টানা’ নামে খ্যাতিলাভ করেছেন।
মাহরাকে প্রেমিকের বিয়ের প্রস্তাব
চলতি বছরের জুনে প্যারিস ফ্যাশন উইকে র্যাম্পে হাঁটার পর গায়ক মন্টানা মাহরাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। এরই মধ্যে তারা বাগদান সম্পন্ন করেছেন। গত ২৭ আগস্ট মন্টানার এক প্রতিনিধি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনোদন ও তারকাদের খবরবিষয়ক ওয়েবসাইট টিএমজেডকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। মরক্কোর বংশোদ্ভূত এই মার্কিন র্যাপারের প্রতিনিধি টিএমজেডকে জানান, গত জুনে প্যারিস ফ্যাশন সপ্তাহের সময় মন্টানা আনুষ্ঠানিকভাবে মাহরাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। তবে কবে তারা পাকাপাকিভাবে বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন, তা নিয়ে কিছু জানা যায়নি।
মন্টানা-মাহরার বিয়েতে দুই পরিবারই সম্মতি দিয়েছেন। এ বিষয়ে মন্টানার প্রতিনিধি বলেন, “বিয়ের পরিকল্পনা শুরু হয়েছে, তবে নির্দিষ্ট তারিখ ও আয়োজন এখনো চূড়ান্ত হয়নি। উভয় পরিবার এই সম্পর্কে খুশি ও সমর্থন জানিয়েছে।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।