জুমবাংলা ডেস্ক : নাটোরের সিংড়া উপজেলায় এক পায়ের আঙুল দিয়ে লিখে এবার দাখিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন রাসেল মৃধা। পেয়েছেন জিপিএ ৩.৮৮। শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়েও তাকে কোনো বাধাই পিছনে ফেলতে পারেনি। সব বাধা পিছনে ফেলে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হতে চান রাসেল।
রাসেল মৃধা সিংড়া উপজেলার শোলাকুড়া মহল্লার দিনমজুর আব্দুর রহিম মৃধার ছেলে। শোলাকুড়া ইসলামিয়া আলিম মাদরাসা থেকে এ বছর দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি।
প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ মাওলানা মো. মোতাররফ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রাসেলের জন্ম থেকে দুই হাত নেই, ডান পাও নেই। বাম পা থাকলেও স্বাভাবিকের চেয়ে ছোট। রাসেল ছোট থেকে স্বপ্ন দেখে পড়াশোনা শেষে বাবা-মার সব দায়িত্ব নেবে। সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে তার চেষ্টার কমতি নেই।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, অভাব-অনটনের মাঝেও রাসেলের লেখাপড়ার প্রতি স্পৃহা দেখে তার দরিদ্র বাবা-মা হাল ছাড়েনি। তার স্বপ্ন পূরণে সব রকম সহযোগিতা করছেন তারা। রাসেল পিএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন। সামনের দিনগুলোও সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে যেতে চান রাসেল।
রাসেল মৃধা বলে, ‘আমার দুটি হাত নেই, একটি পাও নেই। এক পা দিয়ে লিখে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলাম। দাখিল পাস করায় আমি খুব আনন্দিত। আমার লেখাপড়ার পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান মা-বাবার। তাদের পাশাপাশি শিক্ষকরাও আমাকে সহযোগিতা করেছেন। আমি উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশ ও জাতির সেবা করতে চাই ‘
তিনি আরও বলেন, ‘আমার অনেক ইচ্ছা লেখাপড়া করে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে চাকরি করবো। আমার বাবা-মার সব দায়িত্ব নিবো। তারা আমার জন্য অনেক কষ্ট করেছে।’
‘পা দিয়ে লিখে দাখিল পরীক্ষা দিচ্ছে রাসেল’- শিরোনামে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে বিষয়টি জেলা প্রশাসকের নজরে আসে। পরে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ সিংড়া পৌর এলাকার শোলাকুড়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে রাসেলকে দেখতে যান এবং তাকে আর্থিক সহায়তা দেন।
রাসেল মৃধার বাবা আব্দুর রহিম মৃধা বলেন, ‘লেখাপড়ার প্রতি ছেলের আগ্রহ দেখে দিনমজুরি করে পড়াশোনা করাচ্ছি। লেখাপড়া শিখে ছেলে একদিন আমাদের মুখ উজ্জ্বল করবে। তার ফলাফলে আমরা খুবই আনন্দিত। কষ্ট করে হলেও ছেলেকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে চাই। সরকারের কাছে একটাই দাবি, লেখাপড়া শেষে রাসেলকে একটি সরকারি চাকরি দিয়ে যেন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।