লাইফস্টাইল ডেস্ক : সুস্বাস্থ্যর জন্যে ঘুম অতি জরুরি। আবার ভালো ঘুমের জন্যে শোবার ভঙ্গিটাও গুরুত্ব রাখে। কেউ সটান হয়ে, কেউ উল্টো, কেউ বা কাত হয়ে ঘুমাতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। কিন্তু সঙ্গী-সঙ্গিনীর শোবার ভঙ্গিতে যে তাদের মধ্যকার সম্পর্কটাও স্পষ্ট হয়ে ওঠে, তা কি জানতেন? এ বিষয়টির জানান দিতে সম্পর্ক বিষয়ক মনোবিজ্ঞানীদের পরিচালিত বিভিন্ন গবেষণার কথা তুলে এনেছেন লিটল থিঙ্কস ডট কমের সিনিয়র লেখক এলিসি।
ঘুমানোর সময় অবচেতন মন সঙ্গী-সঙ্গিনীর বিষয়ে ঠিকই ক্রিয়াশীল থাকে। আর এ কারণেই নিজের অজান্তেই ঘুমের সময় তার প্রতি কিছু আচরণ প্রকাশ পায়। দুজনের শোবার ভঙ্গিতে অনেকটা বোঝা যায় তাদের মধ্যকার সম্পর্কটা কেমন। এখানে কিছু ধারণা দেয়া যাক। দুজনের শোবার ভঙ্গি অনুযায়ী সম্পর্কের ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে।
দ্য স্পুন
সঙ্গিনী একদিকে কাত হয়ে শুয়েছেন। সঙ্গী একইদিকে কাত হয়ে তাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ঘুমাচ্ছেন, দুজনের দেহ লেপ্টে রয়েছে। এ অবস্থাকে স্পুন বলা হচ্ছে। সম্পর্ক বিষয়ক মনোবিজ্ঞানী কোরিন সুইটের গবেষণায় বলা হয়, এ ভঙ্গির অর্থ সঙ্গী যেন তার পার্টনারের ঢাল। তাকে যেকোনো সমস্যা থেকে রক্ষা করতে প্রস্তুত। ঘুমানোর সময় তাদের অঙ্গভঙ্গি এ অর্থই প্রকাশ করে।
দ্য লুজ স্পুন
একই পদ্ধতি। তবে দুজনের দেহ স্পর্শ করে থাকে না। মাঝখানে কিছুটা ফাঁকা থাকে। তবে বোঝা যায়, তারা খুব শিগগিরই ওপরের পদ্ধতিতে চলে যাবেন। হয়তো সম্পর্ক খুব বেশি পরিপক্ক হয়নি। তাই একটু ফাঁকা স্থান রয়েই গেছে। তারা হয়তো আরো ভালো ঘুমের জন্যে সঠিক ভঙ্গিমায় ঠিকই চলে যাবেন।
দ্য চেজ
এটা দ্য স্পুনের উল্টোটা বলা যায়। সঙ্গী একদিকে কাত হয়েছেন। আর সঙ্গিনী পেছন থেকে জড়িয়ে রয়েছেন। এর অর্থ হয়তো সঙ্গী বিপরীত দিতে ঘুরে ঘুমাতে চাচ্ছেন, কিন্তু ঘুমের মধ্যে হয়ে উঠছে না। তবে ‘স্লিপ পজিশন্স: দ্য নাইট ল্যাঙ্গুয়েজ অব দ্য বডি’র লেখক স্যামুয়েল ডানকেল বলেন, এ ভঙ্গিতে ঘুমানোর অর্থ হতে পারে তারা দুজনই নিজের জন্যে একান্তভাবে কিছু সুবিধা চাইছেন।
দ্য ট্যাঙ্গেল
দুজন দুজনকে মুখোমুখি অবস্থায় একেবারে জড়িয়ে ধরে ঘুমানো। এটা চরম অন্তরঙ্গ এক ভঙ্গিমা। ধরা হয়, এটা ভালোবাসাবাসি শুরুর বা পরের অবস্থান। দুজনের মাঝেই প্রেম কাজ করছে। তবে নিউ ইয়র্কের সাইকোথেরাপিস্ট ফ্লিন ক্যাম্পবেলের মতে, একে সবসময়ের জন্যে ভালো ভাবার কারণ নেই। সম্পর্কে পরস্পরের প্রতি খুব বেশি নির্ভরশীলতা প্রকাশ পায়।
দ্য আনর্যাভেলিং নট
এ পদ্ধতির শুরু হয় ট্যাঙ্গেলের মাধ্যমে। কিন্তু মিনিট দশেক বাদেই তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে ঘুমান। এ পদ্ধতি কিন্তু আগেরটির চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। এ পদ্ধতির মাধ্যমে পরস্পরের প্রতি একইসঙ্গে ভালোবাসা এবং আত্মনির্ভরশীলতা প্রকাশ পায় বলে জানান ড. সুইট।
দ্য লিবার্টি লাভারস
দুজন দুদিকে ঘুরে আরামে ঘুমান এ পদ্ধতিতে। এর অর্থ দুজনই আরামের ঘুমের জন্যে সুবিধাজনক অবস্থান চাইছেন। এটা সত্যিকার অর্থেই ভালো বিষয়। সুইটের মতে, এ অবস্থায় দুজনের পিঠ স্পর্শ না করে থাকলে বোঝা যায়, দুজনই খুব কাছের এবং সম্পর্ক পালনে তাদের মধ্যে স্বাধীনতা আছে।
দ্য ব্যাক কিসারস
ওপরের পদ্ধতি, শুধু দুজনের পিঠ স্পর্শ করে থাকে। এটাও সম্পর্কের ভালো দিক ফুটিয়ে তোলে। এতে বোঝা যায়, দুজনই সম্পর্ক নিয়ে বেশ ঝামেলাবিহীন আছেন। তাদের মাঝে কোনো উদ্বেগ নেই। সাধারণত নতুন দম্পতিদের মাঝে এমনটা দেখা যেতে পারে। তবে দ্রুতই সময়ের সাথে ভঙ্গিমা বদলে যায়।
দ্য নাজল
এ ভঙ্গিমা খুবই মিষ্টি। এ পদ্ধতি একজন অন্যজনের বুঝে ওপর মাথা রেখে নিশ্চিন্তে ঘুম দেন। তাদের পা-গুলোও জড়িয়ে থাকে। ঘুমের এ অবস্থা দুজনের মধ্যে দেখভালের সম্পর্ক প্রকাশ পায়। একে অপরকে যত্নআত্তিতে রাখছেন। এ সম্পর্কে পারস্পরিক বিশ্বাসযোগ্যতা প্রবল, বলেন ড. সুইট। একাধারে বন্ধুত্বপূর্ণ এবং নিরাপত্তাবোধও ফুটে ওঠে এখানে।
কাজল আগারওয়ালের ভালোবাসা পাওয়া সেই ছেলে পাচ্ছেন আর্মিতে চাকরি
দ্য লেগ হাগ
উডের মতে, যদি সঙ্গিনী দূরত্ব বজায় রেখে শোবার পরও তার পা সঙ্গীর পায়ের সঙ্গে স্পর্শ করে রাখে তবে তাদের মধ্যে আবেগপ্রবণতা এবং কামনা রয়েছে। এ ভঙ্গিমার অর্থ, দুজনই পরস্পরের কাছ থেকে অনেক কিছুই পেতে পারেন। এর অর্থ দুজন জোড়া হিসেবে জীবনটাকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন এবং একে অপরের দেখভাল করবেন।
দ্য স্পেস হগ
যদি সঙ্গী চার হাত-পা ছড়িয়ে স্টারফিশের মতো ঘুমান এবং সঙ্গিনী পাশে বিচ্ছিন্ন হয়ে এলোমেলো ভঙ্গিমায় ঘুমান, এর অর্থ তারা দুজনই স্বার্থপরতা দেখাচ্ছেন। এসময়টাতে দুজন পরস্পরকে বিপরীত দিকে ঠেলে নিজের জায়গা করে নিতে চান। এ সম্পর্কে দুজনই দুজনকে নিয়ন্ত্রণ করতে চান এবং নিজে বেশি স্থান দখলে নিতে চান। তাদের দুজনেরই আসলে সততার সঙ্গে সম্পর্ক গুছিয়ে নেয়ার আলোচনায় বসা উচিত বলে মনে করেন ড. সুইট।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।