জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশ পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপগুলোর একটি। যদিও ভূ-উপরিভাগ সমতল, এটি তিনটি টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত—ভারতীয় প্লেট, ইউরেশীয় প্লেট এবং বার্মা মাইক্রোপ্লেট। পাশাপাশি একাধিক ভূমিকম্প সক্রিয় ফল্ট লাইনের উপস্থিতি বাংলাদেশকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
Table of Contents
সাম্প্রতিক ভূমিকম্প: আতঙ্ক বাড়ছে
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে পরপর তিনটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে, যা জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
- ৩ জানুয়ারি: রাত ১১টা ৫ মিনিটে ভারতের আসামে ৫.২ মাত্রার ভূমিকম্প, গভীরতা ১০ কিলোমিটার।
- ৪ জানুয়ারি: সকাল ৭টা ২৮ মিনিটে মিয়ানমার-চীন সীমান্তে ৪.৮ মাত্রার ভূমিকম্প।
- ৭ জানুয়ারি: সকাল ৭টা ৫ মিনিটে চীনের জিজাং অঞ্চলে ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্প, যা বাংলাদেশেও অনুভূত হয়।
বাংলাদেশের ভূমিকম্পের ঝুঁকি
বিশেষজ্ঞদের মতে, মধুপুর ফল্ট, ডাউকি ফল্ট এবং চট্টগ্রামের টেকটোনিক মুভমেন্টের কারণে দেশে ৭.৫ থেকে ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের আশঙ্কা রয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকম্প সক্রিয় ফল্টসমূহ:
- মধুপুর ফল্ট: বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় অংশে অবস্থিত, যা শক্তিশালী ভূমিকম্পের সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে।
- ডাউকি ফল্ট: ভারতের উত্তর-পূর্ব অংশ থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব অংশ পর্যন্ত বিস্তৃত, ভূমিকম্পের অন্যতম প্রধান কারণ।
- চট্টগ্রামের টেকটোনিক মুভমেন্ট: যা দেশের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে ভূমিকম্পের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
ভূমিকম্প ও বাংলাদেশ: ইতিহাস
গত ৫০ বছরে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য ভূমিকম্প হয়েছে।
- ১৮৯৭: শিলং প্লেটের ভূমিকম্প (৮.৪ মাত্রা), যা ঢাকাসহ বিশাল অঞ্চলে প্রভাব ফেলে।
- ১৯৯৭: চট্টগ্রামে ৬ মাত্রার ভূমিকম্প, শহরের বিভিন্ন স্থাপনায় ফাটল সৃষ্টি করে।
- ২০২৩: লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলায় ৫.৬ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
গবেষণা ও প্রযুক্তির অভাব
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাংলাদেশে ভূমিকম্প পূর্বাভাস ও ঝুঁকি মূল্যায়নে গবেষণা ও প্রযুক্তির অভাব রয়েছে।
- পর্যাপ্ত সিসমোমিটার ও জিপিএস স্টেশন নেই, যা প্লেট মুভমেন্ট পর্যবেক্ষণে বাধা সৃষ্টি করছে।
- ভূমিকম্প ঝুঁকি স্টাডির জন্য পর্যাপ্ত অর্থায়ন ও অবকাঠামো নেই।
করণীয়
ভূমিকম্পের ঝুঁকি কমাতে কিছু জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন:
- ভূমিকম্প সহনশীল ভবন নির্মাণ।
- নগর পরিকল্পনা ও বিল্ডিং কোড কঠোরভাবে অনুসরণ।
- জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও ভূমিকম্প প্রশিক্ষণ।
- সঠিক পূর্বাভাসের জন্য গবেষণা ও প্রযুক্তিগত উন্নয়ন।
বাংলাদেশে বড় ভূমিকম্পের সম্ভাবনা অস্বীকার করা যায় না। পর্যাপ্ত গবেষণা ও তথ্য সংগ্রহের ব্যবস্থা না থাকলে বিপর্যয় আরও বাড়বে। তাই এখনই কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।