জুমবাংলা ডেস্ক : রাষ্ট্রীয় প্রটোকল ব্যবহার করে নির্বাচনী প্রচারণার মাধ্যমে আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে মানিকগঞ্জ-৩ আসনের প্রার্থী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেককে সতর্ক করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের উদ্যোগ নেয় ইসি। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর আজ বৃহস্পতিবার মন্ত্রীকে সতর্ক করা হয়।
মানিকগঞ্জ-৩ আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ও সিনিয়র সহকারী জজ শর্মিষ্ঠা স্বাক্ষরিত তদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানিকগঞ্জ-৩ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জাহিদ মালেক গত ২৫ ডিসেম্বর নির্বাচনী এলাকা সাটুরিয়া উপজেলার ফুকুরহাটি ইউনিয়নের মজিবর রহমান উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ ও একই উপজেলার ফুকুরহাটি ইউনিয়নের পৃথক কয়েকটি নির্বাচনী জনসভায় অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় ব্যক্তিগত গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়ে এবং রাষ্ট্রীয় প্রটোকল ব্যবহার করে নির্বাচনী প্রচারণা চালান। এতে নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা-২০০৮ এর ১৪ ধারা লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হয়। যা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি তার সরকারি কর্মসূচির সঙ্গে নির্বাচনী কর্মসূচি বা কর্মকাণ্ড যোগ করতে পারবেন না এবং সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি তার নিজের বা অন্যের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় সরকারি যানবাহন, সরকারি প্রচারযন্ত্রের ব্যবহার বা অন্যবিধ সরকারি সুবিধাভোগী করতে পারবেন না।
এমনকি সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারী বা কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক বা কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ব্যবহার করতে পারবেন না। এই কাজের মাধ্যমে তিনি সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালার ১৪ ধারা লঙ্ঘন করেছেন।
এ বিষয়ে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে শোকজ করা হয়।
শোকজের লিখিত জবাবে প্রার্থী জাহিদ মালেক দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, আমার নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচন সংক্রান্ত প্রচারণায় আমার ব্যক্তিগত গাড়ি, ব্যক্তিগত জ্বালানি ব্যয় বহন এবং ব্যক্তিগত ড্রাইভার ব্যবহার করি। আমি কোনো সরকারি গাড়ি, সরকারি জ্বালানি এবং সরকারি ড্রাইভার ব্যবহার করি না। নির্বাচনী প্রচারণায় মন্ত্রীর গাড়িতে রাষ্ট্রীয় পতাকা থাকবে কি না এবং রাষ্ট্রীয় প্রটোকল ব্যবহার করতে পারবো কি না, সে বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা বা দিক নির্দেশনা পাইনি। এ ছাড়া নির্বাচনী আচরণ বিধিতে রাষ্ট্রীয় পতাকা এবং রাষ্ট্রীয় প্রটোকলের বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা না থাকায় বিষয়টি আমার অজানা ছিল। আমি গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে আমার নির্বাচনী কাজের ব্যবহৃত গাড়িতে রাষ্ট্রীয় পতাকা ব্যবহার বন্ধ করে এবং রাষ্ট্রীয় প্রটোকল নেওয়া বন্ধ করে নির্বাচনী প্রচারণা এবং গণসংযোগ করছি।
তিনি আরো জানান, ইসির নোটিশের বিষয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়ে থাকলে তা আমার জানার অজান্তে হয়েছে।
আমি যথাযথভাবে নির্বাচনী আচরণবিধি পালন করে নির্বাচনী প্রচারণা এবং গণ সংযোগ করব। ওই জবাবের প্রেক্ষিতে অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদনে সার্বিক বিবেচনায় জাহিদ মালেককে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ৯১ক এর (৬) (ক) বিধানমতে নির্বাচন আচরণ বিধি মেনে চলার জন্য নির্দেশনা প্রদানসহ এ সংক্রান্তে আরো সতর্ক থাকার পরামর্শ প্রদানের সুপারিশ করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।