জুমবাংলা ডেস্ক : “বন্যা, অতিবৃষ্টি ইত্যাদির কারণে ডিমের উৎপাদন হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি সবজিসহ কিছু পণ্যের উৎপাদন নষ্ট হয়েছে”, দাম বৃদ্ধি নিয়ে বলেন তিনি।
নিত্যপণ্যের দরে ঊর্ধ্বগতির মধ্যে কারওয়ানবাজার পরিদর্শনে গিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন সাংবাদিকদের প্রশ্ন করেছেন তিনি ডিম মেশিন দিয়ে তৈরি করবেন কি না।
ডিমের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ার মধ্যে এবার পাইকারি আড়তে বিক্রিই বন্ধ। খুচরায় কিনতে গিয়ে খালি হাতে ফিরছেন ভোক্তারা। এই পরিস্থিতিতে উপদেষ্টার কাছে এক সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল, ডিম নিয়ে এই পরিস্থিতি কেন তৈরি হয়েছে।
সালেহউদ্দিন জবাবে বললেন, “আপনি ডিম সাপ্লাই দেখেন না.. নাই তো। ডিম আপনার.. সারে চার কোটি, পাঁচ কোটি ডিম হয়। এখন থেকে ডিম কি আমি মেশিন দিয়ে তৈরি করব?”
সোমবার সন্ধ্যায় উপদেষ্টা কারওয়ানবাজারে গিয়ে চাল, ডাল, মুরগি, ভোজ্য তেলসহ নানা পণ্যের দাম খতিয়ে দেখেন। এর মধ্যে জানা যায়, আড়তে পাইকারিতে ডিম বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর কৃষিপণ্য বিপণন অধিদপ্তর খামার, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে ডিমের সর্বোচ্চ ‘ন্যায্য মূল্য’ ঠিক করে দেয়। কিন্তু সর্বোচ্চ যে খুচরা মূল্য নির্ধারণ হয়েছে, সে দরে ডিম খামার থেকেই কেনা যাচ্ছে না বলে ভাষ্য ব্যবসায়ীদের। কিন্তু তারা ‘নির্ধারিত’ মূল্যের চেয়ে বেশিতে বিক্রি করায় তাদেরকে জরিমানা করা হচ্ছে।
জরিমানার প্রতিবাদে কারওয়ানবাজারের পাশে তেজগাঁওয়ের আড়তে রোববার থেকে ডিম বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের আড়তেও ডিম পাওয়া যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে খুচরায় ডিম পাওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
২০২২ সালে ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে টানা প্রায় দুই বছর দুই অঙ্কের ঘরে থাকা মূল্যস্ফীতি মানুষের জীবনকে কঠিন করে তুলেছে। তুমুল গণ আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাজার পরিস্থিতি সহনীয় হবে বলে ব্যাপকভাবে আশা করা হচ্ছিল।
তবে তেমনটি হয়নি। বরং ডিম আর সবজির দামে তৈরি হয়েছে বিস্ময়। ভারত থেকে আমদানিতেও ডিমের বাজারে প্রভাব পড়ছে না, হালি ঠেকেছে ৬০ টাকায়, বাজারে পেঁপে ছাড়া ১০০ টাকা কেজির কমে সবজি পাওয়াই কঠিন হয়ে গেছে।
উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন বলেন, “বন্যা, অতিবৃষ্টি ইত্যাদির কারণে ডিমের উৎপাদন হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি সবজিসহ কিছু পণ্যের উৎপাদন নষ্ট হয়েছে। যার ফলে সাপ্লাই চেইনে কিছুটা ঘাটতির কারণে এসব পণ্যের মূল্য কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।”
বাজারে বিক্রেতাদের কাছে তিনি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ পরিস্থিতির তথ্য জানতে চান। ব্যবসায়ীদের ‘যৌক্তিক’ লাভ করার অনুরোধও জানান তিনি।
মেসার্স রিফাত জেনারেল স্টোরে গিয়ে বেশ কিছু পণ্যের দাম জানতে চাইলেন উপদেষ্টা। মূল্য তালিকা টানানো আছে কিনা তাও দেখলেন।
হিমু ট্রেডার্সের বিক্রেতা আব্দুল জব্বার বাণিজ্য উপদেষ্টাকে জানান, মিলাররা মাল ‘আটকে রাখছে’, সরবরাহ সংকট আছে।
“মিলে মাল যতদিন আটকে রাখবে আমাদের ডেমারেজ দিতে হয়। যদি সাতদিন মাল না দেয় তাহলে ১৪ হাজার টাকা ডেমারেজ হয়।”
পরে সাংবাদিকদেরকে সালেহউদ্দিন বলেন, “উৎপাদনকারী, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতার মূল্যের ব্যবধান যেন ‘সহনীয়’ পর্যায়ে থাকে তা টাস্কফোর্স কর্তৃক মনিটরিং করা হচ্ছে। কেউ ‘অতি মুনাফা’ বা সুযোগ বুঝে মূল্য বৃদ্ধি করলে কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।”
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম উদ্দিন ও জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।