আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অর্থনৈতিক মন্দায় পড়েছে পুরো বিশ্ব। মিশরও তার ব্যতিক্রম নয়। দেশটির মূল্যস্ফীতি রেকর্ড ছাড়িয়েছে। এ অবস্থায় সরকারের একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মুরগির পা খাওয়ার পরামর্শ দিলে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। সমালোচনাকারীরা বলেন, এখন আমরা মুরগির পায়ের যুগের প্রবেশ করেছি।
করোনা মহামারির কারণে বড় ধরনের আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছে পর্যটনভিত্তিক দেশগুলো। মিশর তার অন্যতম। এর পর রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে আরেক দফা বিপর্যয়ের মুখে পড়ে আরব বিশ্বের এ দেশটি। গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ মূল্যস্ফীতির কবলে পড়েছে দেশটি। ফলে সাধারণ খাদ্যপণ্যও মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। ২০২১ সালে যে মুরগির দাম ছিল ৩০ মিশরীয় পাউন্ড (১১৭ টাকা), এ সপ্তাহের শুরুতে সেই এক কেজি মুরগি কিনতে হয়েছে ৭০ মিশরীয় পাউন্ডে (২৫১ টাকা)। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিতে শুরু করেছে।
এ অবস্থায় কিছুদিন আগে মিশরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর নিউট্রিশন পুষ্টির ঘাটতি পূরণে বিকল্প খাবারের একটি তালিকা প্রকাশ করে, যে তালিকায় রয়েছে মুরগির পা, গবাদিপশুর খুরসহ আরও অনেক কিছু। সরকারি প্রতিষ্ঠানের এ তালিকায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন অনেক মিশরীয়। কারণ তাদের দেশে মাংসজাতীয় খাবারের মধ্যে সবচেয়ে কম দাম মুরগির পায়ের। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এটিকে বর্জ্য হিসেবেই বিবেচনা করে তারা। পুষ্টির জন্য সেটিকেই খেতে বলায় চটেছেন তারা।
নতুন রাজধানী বানাচ্ছে মিশর
মিশরের গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মোহাম্মদ আল-হাশিমি বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লেখেন, আমরা মুরগির পায়ের যুগে প্রবেশ করেছি। দেশের যে কী অবস্থা, তা এতেই ফুটে উঠেছে।
এদিকে সরকারের পক্ষ থেকে মুরগির পা খেতে বলার পর দেখা দিয়েছে আরেক সমস্যা। এক কেজি মুরগির পায়ের দাম বেড়ে ২০ মিশরীয় পাউন্ডে গিয়ে পৌঁছেছে, যা আগের দামের দ্বিগুণ। ফলে মুরগির পা দিয়ে পুষ্টি সংগ্রহেও সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে শ্রীলঙ্কার মতো বেশ কিছু মেগা প্রকল্প হাতে নিয়ে ফেঁসে গেছে সিসির দেশ মিশর। তাদের হাতে থাকা মেগা প্রকল্পগুলো হচ্ছে, আফ্রিকার সবচেয়ে উঁচু টাওয়ার নির্মাণ, মরুভূমির মধ্যে একটি নতুন রাজধানী গড়ে তোলা ইত্যাদি।
বিগত বছরগুলোতে বেশ কিছু অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে গেছে মিশর। ফলে আইএমএফসহ বিভিন্ন সংস্থা ও দেশের কাছ থেকে ঋণ করেছে দেশটি। ফলে ঋণের বোঝায় ডুবতে চলেছে দেশটি। এর পাশাপাশি দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা দেশটি থেকে তাদের অর্থ তুলে নিচ্ছেন। অন্যদিকে মিশরীয় মুদ্রার দামও গত কয়েকদিনে অর্ধেক হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে আইএমএফ জানিয়েছে, মিশরের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই গুরুতর অবস্থায় রয়েছে। চলতি বছরে মিশরের মোট অর্থনীতির ৮৫ দশমিক ৬ শতাংশই ঋণ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।