ধর্ম ডেস্ক : প্রতি বছর ঈদ আসে আমাদের জীবনে আনন্দ, ভালোবাসা এবং ইসলামের মহত্ব নিয়ে। ঈদের নামাজ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত যা মুসলিমদের জন্য অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। তবে অনেকেই জানেন না ঈদের নামাজে কয় তাকবীর সহীহ হাদিস অনুযায়ী পড়া উচিত। এই বিষয়ে বিশুদ্ধ হাদিসসমূহ আমাদের স্পষ্ট দিকনির্দেশনা দিয়েছে।
Table of Contents
ঈদের নামাজের ফিকহ: সহীহ হাদিস অনুযায়ী তাকবীরের সংখ্যা
ঈদের নামাজে অতিরিক্ত তাকবীর সংযোজন করা হয় যা নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে থাকে না। সহীহ হাদিস থেকে জানা যায়, নবী করিম (সা.) ঈদের নামাজে প্রথম রাকাতে তিনটি অতিরিক্ত তাকবীর এবং দ্বিতীয় রাকাতেও তিনটি অতিরিক্ত তাকবীর দিতেন। এই হাদিসটি সহীহ আবু দাউদ এবং ইবনে মাজাহ-এ উল্লেখ আছে।
তবে কেউ কেউ সাত ও পাঁচ তাকবীরের বর্ণনাও পেয়েছেন। ইমাম শাফেয়ি (রহ.) অনুসারীরা প্রথম রাকাতে সাত তাকবীর এবং দ্বিতীয় রাকাতে পাঁচ তাকবীর পড়ার মতামত দেন। এটা মূলত বিভিন্ন সাহাবীদের আমল থেকে উদ্ভূত। তবে সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য মত হলো, ঈদের নামাজে প্রথম রাকাতে ৭ এবং দ্বিতীয় রাকাতে ৫ অতিরিক্ত তাকবীর।
এখানে ঈদের নামাজে কয় তাকবীর সহীহ হাদিস অনুযায়ী জানতে হলে হাদিস গ্রন্থসমূহ যেমন বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজি ইত্যাদি পর্যালোচনা করা আবশ্যক।
ঈদের নামাজের পদ্ধতি: সহীহ হাদিসের আলোকে
ঈদের নামাজ দুই রাকাত। এটি আদায় করতে হয় জামাতের মাধ্যমে। নামাজ শুরু হওয়ার পর, প্রথম রাকাতে সাতটি তাকবীর বলা হয় ক্বিরাতের আগে, এরপর সূরা ফাতিহা ও অন্য একটি সূরা পড়া হয়। দ্বিতীয় রাকাতে, রুকুতে যাওয়ার আগে পাঁচটি তাকবীর বলা হয়।
এই পদ্ধতি বিভিন্ন সহীহ হাদিস থেকে প্রমাণিত। যেমন, ইমাম মালেক, ইমাম আহমদ, এবং ইমাম শাফেয়ির বর্ণনায় এটি এসেছে। নবীজির (সা.) আমলে সাহাবীরা এভাবেই ঈদের নামাজ আদায় করতেন।
যেহেতু ঈদের নামাজে কয় তাকবীর সহীহ হাদিস অনুযায়ী তা নির্ধারণ করা গুরুত্বপূর্ণ, তাই মুসলমানদের উচিৎ সহীহ হাদিসের ভিত্তিতে নামাজ পড়া এবং ভ্রান্ত পদ্ধতি থেকে বিরত থাকা।
তাকবীরের ফযিলত ও তাৎপর্য
তাকবীর বলার মাধ্যমে আল্লাহর মহত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করা হয়। ঈদের নামাজে অতিরিক্ত তাকবীর যুক্ত করা হয়েছে যেন মুসলমানরা ঈদের আনন্দেও আল্লাহকে স্মরণে রাখে। এই তাকবীরগুলো আমাদের ঈমান মজবুত করে এবং আত্মিক প্রশান্তি দেয়।
ঈদের নামাজে ভুল তাকবীর: কী করণীয়?
অনেক সময় অজ্ঞতাবশত কেউ ভুলভাবে তাকবীর পড়ে ফেলেন। ইসলাম একটি সহজ ধর্ম, তাই ইচ্ছাকৃত ভুল না হলে তা মাফযোগ্য। তবে সঠিকভাবে জানা এবং শিখে নেওয়া প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য। ভুল হলে ইমামের পিছনে ঠিকভাবে পড়া এবং পরে কুরআন ও হাদিস পড়ে নিজেকে সংশোধন করা উচিত।
FAQs: প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলি
- প্রশ্ন: ঈদের নামাজে মোট কতটি তাকবীর পড়া হয়?
উত্তর: সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য মতে, প্রথম রাকাতে সাতটি এবং দ্বিতীয় রাকাতে পাঁচটি অতিরিক্ত তাকবীর পড়া হয়।
- প্রশ্ন: এই তাকবীরগুলোর হাদিসে প্রমাণ আছে কি?
উত্তর: হ্যাঁ, সহীহ হাদিসসমূহে এই তাকবীরের সংখ্যা স্পষ্টভাবে বর্ণিত আছে।
- প্রশ্ন: যদি কেউ ভুল করে তাকবীর কম বা বেশি পড়ে ফেলে, তাহলে কি নামাজ ভেঙে যায়?
উত্তর: না, ইচ্ছাকৃত না হলে নামাজ ভঙ্গ হয় না তবে পরবর্তী সময়ে জ্ঞান অর্জন করা উচিত।
- প্রশ্ন: ঈদের নামাজে কুনুত পড়া হয় কি?
উত্তর: না, ঈদের নামাজে কুনুত পড়া হয় না।
ঈদের নামাজ কি ফরজ না ওয়াজিব? ইসলামিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিস্তারিত ব্যাখ্যা
সহীহ হাদিস অনুযায়ী ঈদের নামাজের তাকবীর
ঈদের নামাজ মুসলমানদের একটি বড় আনন্দ ও ইবাদতের উপলক্ষ। সহীহ হাদিস অনুযায়ী নামাজ আদায় করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। ঈদের নামাজে কয় তাকবীর সহীহ হাদিস অনুযায়ী তা জানা ও পালন করা আমাদের ঈমানী দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত। চলুন আমরা সবাই সহীহ জ্ঞান অর্জন করে ঈদের নামাজ সুন্দরভাবে আদায় করি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।