ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম ছয় তাকবীরে
ঈদুল ফিতর মুসলমানদের সবচেয়ে আনন্দঘন ধর্মীয় উৎসবগুলোর একটি। দীর্ঘ এক মাস রোজা রাখার পর এই দিনটি আসে উৎসব ও খুশির বার্তা নিয়ে। ঈদুল ফিতরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো ঈদের নামাজ, বিশেষ করে ছয় তাকবীরসহ নামাজ পড়ার পদ্ধতি যা অনেক মুসলমানের জন্য জ্ঞান অর্জনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিত জানবো ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম ছয় তাকবীরে পড়ার নিয়ম, নিয়ত, এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে।
ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম (ছয় তাকবীরসহ)
ঈদুল ফিতরের নামাজ দুই রাকাত বিশিষ্ট একটি ওয়াজিব নামাজ। এটি আদায় করার বিশেষ কিছু নিয়ম রয়েছে যা অন্যান্য সাধারণ নামাজ থেকে আলাদা। ছয় তাকবীরের মাধ্যমে এই নামাজকে বিশেষ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ করা হয়েছে। এই ছয় তাকবীর ঈদের নামাজে অতিরিক্ত তাকবীর হিসেবে ধরা হয়, যা মূল রাকাতের আগে বা মাঝে বলা হয়।
Table of Contents
নামাজ শুরু করার পূর্বে নিয়ত করতে হয়: “আমি দুই রাকাত ঈদের নামাজ ছয় তাকবীরসহ আল্লাহর জন্য আদায় করছি, ইমামের অনুসরণে।” এরপর তাকবীরে তাহরিমা দিয়ে নামাজ শুরু হয়।
- প্রথম রাকাত: নিয়তের পর ইমাম তাকবীর বলবেন এবং জামাত তাকবীর বলে হাত বেঁধে নিবেন। তারপর অতিরিক্ত তিন তাকবীর বলা হবে। প্রত্যেক তাকবীরের মাঝে সামান্য বিরতি থাকবে। এরপর সূরা ফাতিহা এবং অন্য একটি সূরা পড়ে রুকু ও সেজদা আদায় করা হবে।
- দ্বিতীয় রাকাত: রাকাত শুরু করে সূরা ফাতিহা ও অন্য একটি সূরা পড়া হবে। এরপর অতিরিক্ত তিন তাকবীর বলা হবে এবং তারপর রুকুতে যাওয়া হবে।
এইভাবে ছয় তাকবীর সম্পন্ন করে ঈদের নামাজ আদায় করা হয়। অনেক মাজহাবে সাত তাকবীরও বলা হয়, তবে আমাদের দেশে সাধারণত ছয় তাকবীর প্রচলিত।
ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ত
ঈদুল ফিতরের নামাজ পড়ার পূর্বে নিয়ত করা জরুরি। নিয়ত হচ্ছে মনস্থির করার একটি অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া যা মুখে উচ্চারণ করাও সুন্নাত। নিচে নিয়তের বাংলা উচ্চারণ দেওয়া হলো:
আমি নিয়ত করিতেছি দুই রাকাত ঈদের নামাজ ছয় তাকবীরসহ আল্লাহর উদ্দেশ্যে, পিছনে ইমামের অনুসরণে।
এই নিয়তের মাধ্যমে আমরা ইবাদতের উদ্দেশ্য ও পদ্ধতি স্পষ্ট করি, যা নামাজকে পূর্ণতা দেয়। নিয়ত ছাড়া কোনো ইবাদত গ্রহণযোগ্য নয়, তাই নামাজের আগে সঠিক নিয়ত করাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ঈদের নামাজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য
ঈদের নামাজ মুসলমানদের জন্য একতা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম। একত্রে জামাতে এই নামাজ আদায় করার মাধ্যমে সমাজের সব শ্রেণির মানুষ একত্রিত হন। ঈদুল ফিতরের নামাজের মাধ্যমে আমরা রমজানের সংযমের প্রশিক্ষণকে বাস্তব জীবনে প্রতিফলিত করি।
নামাজের পরে খুতবা ও করণীয়
ঈদের নামাজের পর ইমাম খুতবা প্রদান করেন, যা শুনা সুন্নাতে মুআক্কাদা। খুতবায় ঈদের গুরুত্ব, রমজানের শিক্ষাগুলো এবং মুসলমানদের করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। নামাজ শেষে একে অপরের সাথে কোলাকুলি ও শুভেচ্ছা বিনিময় করা ঈদের অন্যতম ঐতিহ্য।
প্রশ্নোত্তর: ঈদুল ফিতরের নামাজ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
- প্রশ্ন: ছয় তাকবীরের সময় কী বলা হয়?
উত্তর: প্রতিটি তাকবীরের সময় “আল্লাহু আকবার” বলা হয় এবং দুই হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠানো হয়। - প্রশ্ন: ঈদের নামাজ কখন পড়া হয়?
উত্তর: সূর্য উদয়ের পর থেকে জোহরের আগ পর্যন্ত সময়ে ঈদের নামাজ পড়া যায়। - প্রশ্ন: ছয় তাকবীর না বললে নামাজ কি সহীহ হবে?
উত্তর: অতিরিক্ত তাকবীর ঈদের নামাজের অন্যতম অংশ, ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দিলে নামাজ সহীহ হবে না। - প্রশ্ন: মহিলারা কি ঈদের নামাজ পড়তে পারেন?
উত্তর: হ্যাঁ, মহিলারা ঈদের নামাজ পড়তে পারেন। তবে তাদের জন্য ঘরে পড়াই উত্তম।
https://inews.zoombangla.com/eid-ul-fitr-prayer-rules-al/
ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম ছয় তাকবীরে পড়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত যা মুসলমানদের জন্য আনন্দ ও আত্মশুদ্ধির বার্তা নিয়ে আসে। সঠিক নিয়ম অনুযায়ী এই নামাজ আদায় করলে আল্লাহর নৈকট্য লাভ সম্ভব হয়। আসুন, আমরা সবাই শুদ্ধ নিয়তের মাধ্যমে ঈদের নামাজ আদায় করে ঈদুল ফিতরের পূর্ণতা অর্জন করি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।