আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মরক্কোর বিখ্যাত পর্যটক ও পণ্ডিত ইবনে বতুতা সম্পর্কে পড়াশোনা শুরু করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ও বিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী ইলন মাস্ক। চতুর্দশ শতকের মহান এই পর্যটকের বিষয়ে আগ্রহের কথা নিজেই জানিয়েছেন জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক্স’র (সাবেক টুইটার) এই মালিক।
উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কো। আর এই মরক্কোর প্রখ্যাত পর্যটক ইবনে বতুতা। একটানা ত্রিশ বছর বিশ্বের বিভিন্ন অংশে ভ্রমণ করেছেন তিনি। এক্ষেত্রে তার সময়ের বা আগের সব পর্যটককেও ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন। নিজের সে সব ভ্রমণকাহিনী নিয়ে গ্রন্থ লিখেছেন তিনি। সেই ইবনে বতুতা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেছেন বলে জানিয়েছেন ইলন মাস্ক।
মূলত এক্স তথা টুইটারে জনপ্রিয় কনটেন্ট নির্মাতাদের জন্য আয়ের সুযোগ চালু হয়েছে। নতুন এ উদ্যোগের আওতায় এক্স ব্যবহারকারীদের যেসব কনটেন্টে বিজ্ঞাপন দেখানো হবে, সেগুলো থেকে আয়ের নির্দিষ্ট অংশ দেয়া হবে।
আর ব্যবহারকারীদের অন্যান্য কন্টেন্টের পাশাপাশি ভ্রমণ বিষয়ক কন্টেন্টও বেশি বেশি শেয়ারের পরামর্শ ও উৎসাহ দিচ্ছেন ইলন।
বুধবারই (১৬ আগস্ট) এ বিষয়ে এক্স তথা টুইটারে একটি পোস্ট দেন তিনি। সেখানে তিনি বলেন, ‘যুগে যুগে বহু সংস্কৃতির ভ্রমণ বিষয়ক গল্পগুলো নিয়ে ‘দ্য এক্সপ্লোরারস’ তথা পর্যটক বিষয়ক পডকাস্ট শোনার জন্য সুপারিশ করছি।’
সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে আমি নিজেও আশ্চর্যজনকভাবে ও ব্যাপকভাবে বিশ্বভ্রমণ করা ইসলামি অভিযাত্রী ইবনে বতুতা সম্পর্কে পড়াশোনা করছি।’
ইবনে বতুতা যে সব জায়গা সফর করেছিলেন তার বেশিভাগই ছিল মুসলিম অধ্যুষিত দেশ। ‘আর রিহলা’ নামক গ্রন্থে নিজের সেসব ভ্রমণকাহিনীগুলো লিপিবদ্ধ করে গেছেন তিনি।
রিহলা একটি আরবি শব্দ, যার বাংলা অর্থ ভ্রমণকাহিনী। ‘আর রিহলা’ গ্রন্থে বতুতার বাংলাদেশ ভ্রমণের কথাও পাওয়া যায়। তার ঐতিহাসিক বইয়ে তৎকালীন বাংলার সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, আবহাওয়া, জলবায়ু ও প্রাকৃতিক অবস্থার সম্পর্কে জানা যায়।
ইবনে বতুতা নিজে একজন ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি ছিলেন এবং ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিদের প্রতি আকর্ষণ অনুভব করতেন। মাত্র ২১ বছর বয়সেই তিনি বিশ্বভ্রমণের জন্য বের হয়ে যান এবং ২২ বছর বয়সে মক্কায় হজ্ব পালন করেন।
তিনি ১৩২৫-১৩৫৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালে বিশ্ব ভ্রমণ করেন। তিনি ১৩৩৩ খ্রিস্টাব্দে দিল্লিতে আসেন এবং তৎকালীন দিল্লির সুলতান মুহম্মদ বিন তুঘলকের অধীনে দীর্ঘ প্রায় আট বছর কাজীর পদে কাজ করেন। এরপরই তিনি ১৩৪৫ অথবা ১৩৪৬ সালে ফখর উদ্দীন মোবারক শাহের শাসনকালে বাংলায় আসেন।
ইবনে বতুতা তার ‘আর রিহলা’ গ্রন্থে বলেছেন, ‘দীর্ঘ তেতাল্লিশ রাত্রি সমুদ্রের বুকে কাটিয়ে আমরা বাঙ্গালা (বাংলা) দেশে পৌঁছলাম। এ বিশাল দেশে প্রচুর চাল উৎপন্ন হয়। সারা পৃথিবী ঘুরে আমি এমন কোনো দেশ দেখিনি যেখানে বাংলার চেয়ে জিনিসপত্রের মূল্য কম। পক্ষান্তরে এটি একটি অন্ধকার দেশ। খোরাসানের লোকেরা বলে, বাংলা ভালো জিনিসে পরিপূর্ণ একটি নরক।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।