বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : দীর্ঘ টালবাহানার পর বৃহস্পতিবার টুইটার অধিগ্রহণ করেছেন ইলন মাস্ক। আর তার পরই সংস্থার সিইও পরাগ আগরওয়াল, ‘চিফ ফিনানশিয়াল অফিসার’ (সিএফও) নেড সেগালকে ছাঁটাই করেছেন তিনি।
বেনোজলের মতো সব কিছুকে স্বাগত জানাতে তিনি রাজি নন। টুইটারের নতুন মালিক হওয়ার পর এই বার্তা দিয়েছিলেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। ‘মাইক্রোব্লগিং সাইট’ অধিগ্রহণ করে বৃহস্পতিবারের সেই বিবৃতির পর শুক্রবার টেসলাকর্তার টুইটে ‘স্বাধীনতা’র বার্তা পাওয়া গেল। মাস্ক লিখলেন, ‘পাখি এখন মুক্ত।’ প্রসঙ্গত, টুইটারের লোগোতে নীল রঙের একটি পাখির ছবি রয়েছে।
দীর্ঘ টালবাহানার পর বৃহস্পতিবার টুইটার অধিগ্রহণ করেছেন মাস্ক। আর তার পরেই সংস্থার সিইও পরাগ আগরওয়াল, ‘চিফ ফিনানশিয়াল অফিসার’ (সিএফও) নেড সেগালকে ছাঁটাই করেছেন তিনি। এই ঘটনাপ্রবাহে ইলনের ‘দ্য বার্ড ইজ় ফ্রিড’, অর্থাৎ, ‘পাখি এখন মুক্ত’ টুইট-বার্তা আলাদা তাৎপর্য পেয়েছে।
আবার টুইটারে যে কোনও বিষয় নিয়ে যে ভাবে তর্কবিতর্ক চলে এবং উপভোক্তারা স্বাধীন ভাবে যেমন নিজেদের মতপ্রকাশ করে থাকেন, মাস্কের হাতে মালিকানা যাওয়ার পর তার পরিণতি কী হবে, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে বিভিন্ন মহলে। কারণ, বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে মাস্ক লিখেছেন, ‘টুইটার কখনওই সব কিছুর জন্য মুক্ত হতে পারে না, যেখানে যা খুশি বলা যেতে পারে।’
লক্ষণীয়, অতীতে টুইটারকে ব্যবহার করে বহু বার অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। এমনকি, কারও সম্পর্কে অশালীন মন্তব্য করে টুইটারে সরব হতেও দেখা গিয়েছে নেটাগরিকদের। ওই ধরনের ঘটনায় লাগাম টানতেই মাস্কের এই বক্তব্য কি না, তা নিয়ে চর্চার মধ্যেই ‘পাখি মুক্ত’ হওয়ার যে বার্তা দিলেন ইলন, তা আলাদা মাত্রা পেয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত এপ্রিল মাসে ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলার ব্যয়ে টুইটার কেনার কথা ঘোষণা করেছিলেন ইলন। কিন্তু ভুয়ো অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার ক্ষেত্রে টুইটার যথাযথ পদক্ষেপ করছে না বলে দাবি করে সেই চুক্তি থেকে সরে আসেন মাস্ক। তার পরেই হু-হু করে সংস্থার শেয়ারের দর পড়তে থাকে। এর পরেই আইনি লড়াই শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত মাস্ক টুইটার কিনতে পারবেন কি না, তা নিয়েও সংশয় দেখা যায়।
আমেরিকার আদালতের নির্দেশানুযায়ী শুক্রবারের মধ্যে ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের অধিগ্রহণ চুক্তি চূড়ান্ত করতে হত মাস্ককে। এই প্রেক্ষাপটে বুধবার আচমকাই সান ফ্রান্সিসকোয় টুইটারের সদর দফতরে হাজির হন মাস্ক। টুইটারের দফতরে মাস্কের প্রবেশেও চমক ছিল। হাতে বেসিন নিয়ে টুইটারের দফতরে ঢুকতে দেখা যায় মাস্ককে। এ নিয়ে একটি ভিডিয়োও টুইট করেন তিনি।
এর পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টুইটার অধিগ্রহণের কথা বিবৃতি দিয়ে জানান বিশ্বের অন্যতম এই ধনকুবের। শুধু মাত্র অর্থ উপার্জনের জন্য যে তিনি টুইটার কেনেননি, সে কথা স্পষ্ট করে মাস্ক লিখেছেন, ‘মানবতার স্বার্থেই টুইটার অধিগ্রহণ করেছি।’ সেই সঙ্গে আগামী দিনে সমস্ত পক্ষের স্বাধীন মতপ্রকাশের একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম তৈরির প্রচেষ্টায় যে তিনি ব্রতী থাকবেন সে বার্তাও দিয়েছেন মাস্ক। পাশাপাশি, এ-ও উল্লেখ করেছেন, ‘বর্তমানের পরিস্থিতি বিপজ্জনক। যেখানে নেটমাধ্যম কট্টর দক্ষিণপন্থী ও কট্টর বামপন্থীরা কয়েকটি গোষ্ঠীতে ভাগ হতে চলেছে। যা সমাজে ঘৃণা ও বিভাজন বাড়াবে।’
এই প্রেক্ষাপটে টুইটারের আনুষ্ঠানিক মালিক হওয়ার পর তাঁর ‘স্বাধীনতা’ সম্পর্কে সাম্প্রতিক টুইটটি অর্থবহ বলেই মনে করা হচ্ছে। আপাতত গোটা বিশ্ব মশগুল মাস্কের ‘পাখি’ মুক্ত আকাশে উড়ে গিয়ে কী করবে, তা নিয়েই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।