স্পোর্টস ডেস্ক : পাকিস্তানের সেমিফাইনালের স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় টস জিতে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং নেওয়ার পরই। কারণ আগে ব্যাটিং করে ২৮৭ রানে জিতলে পাকিস্তানের সেরা চারে ওঠার সুযোগ ছিল, যা একেবারে অসম্ভব। তবুও মাথা উঁচু করে বিদায় নেওয়ার লক্ষ্য হয়তো ছিল তাদের। সেটা হলো না। কেবল তিন থেকে ছয় নম্বর ব্যাটার এবং শেষ জুটি লড়াই করতে পেরেছিল। এছাড়া অন্যদের অসহায় আত্মসমর্পণে হার মানতে হলো বাবর আজমদের। ৯৩ রানের জয়ে বিশ্বকাপের শেষটা রাঙালো ইংল্যান্ড।
অন্যদিকে হারতে হারতে ক্লান্ত ইংল্যান্ড টানা দুটি জয়ে বিশ্বকাপ শেষ করলো উচ্ছ্বসিত হৃদয় নিয়ে। এই ম্যাচ জিতে বিশ্বকাপের সেরা আটটি দলের মধ্যে থেকে ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলাও নিশ্চিত করলো তারা। ৯ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে সাতে গত আসরের চ্যাম্পিয়নরা।
৩৩৮ রানের লক্ষ্য নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামে পাকিস্তান। রান তাড়া করতে নেমেও শেষ চারে ওঠার গাণিতিক সমীকরণ ছিল, এজন্য ৬.৪ ওভারে লক্ষ্য পূরণ করতে হতো, যা একইসঙ্গে হাস্যকর এবং অসম্ভব। শেষ চারের স্বপ্নভাঙার হতাশা নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে ডেভিড উইলির তোপে পড়ে ১০ রানে দুই ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিক ও ফখর জামান বিদায় নেন।
বাবর ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু ৫১ রানের বেশি করতে পারেননি তারা। বাবর (৩৮) গাস অ্যাটকিনসনের শিকার হন।
রিজওয়ান দলগত স্কোর একশ হওয়ার কিছুক্ষণ পরই বিদায় নেন। তারপরই নামে ধস। ৩ উইকেটে ১০০ রান করা দলটি দুইশতে যাওয়ার আগেই ৯ উইকেট হারায়। রিজওয়ান (৩৬) ও সৌদ শাকিল (২৯) দ্রুত ফিরে যাওয়ার পর কেবল আগা সালমান লড়াই করেন। শাহীন শাহ আফ্রিদি (২৫) তার সঙ্গে ৩৬ রানের জুটিতে সঙ্গ দেন।
পরপর দুই ওভারে এই দুই ব্যাটারকে ফেরায় ইংল্যান্ড। আগাকে ৫১ রানে বেন স্টোকসের ক্যাচ বানিয়ে উইলি শততম ওয়ানডে উইকেট নেন।
১৯১ রানে ৯ উইকেট পড়ার পর মোহাম্মদ ওয়াসিম ও হারিস রউফ হারের ব্যবধান কমাতে থাকেন। ৪৪তম ওভারে তাদের ৩৫ বলে ৫৩ রানের জুটি ভেঙে দেন ক্রিস ওকস। ২০০৩ সালের পর বিশ্বকাপে দশম উইকেটে এটাই সর্বোচ্চ জুটি। ২৩ বলে তিনটি করে চার ও ছয়ে ৩৫ রান করে আউট হন হারিস, ৩১তম উইকেট নিয়ে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের শীর্ষ উইকেটশিকারি হিসেবে ইয়ান বোথামকে (৩০) টপকে যান ওকস। ১৬ রানে অপরাজিত ছিলেন ওয়াসিম। ২৪৪ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান।
ব্যাট হাতে ১৫ রান করার পর ১০ ওভারে ৫৬ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন উইলি। বিশ্বকাপ চলাকালে টুর্নামেন্ট শেষ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর ঘোষণা দেন ইংলিশ অলরাউন্ডার। শনিবার দেশের জার্সিতে জীবনের শেষ ম্যাচে পেলেন সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার।
ডেভিড মালান ও জনি বেয়ারস্টোর ৮২ রানের উদ্বোধনী জুটিতে দারুণ শুরু করেছিল ইংল্যান্ড। তৃতীয় ওভারে জীবন পাওয়া মালানকে ১৪তম ওভারে রিজওয়ানের ক্যাচ বানান ইফতিখার আহমেদ। জনি বেয়ারস্টো হাফ সেঞ্চুরি করে বেশিদূর যেতে পারেননি। হারিস রউফের বলে ৫৯ রানে আগার ক্যাচ হন।
তারপর জো রুট ও স্টোকসের ১৩২ রানের জুটিতে বড় স্কোরের ভিত গড়ে ইংল্যান্ড। শাহীনের বলে একবার জীবন পেলেও তারই শিকার হন স্টোকস। ৭৬ বলে ইনিংস সেরা ৮৪ রানে বোল্ড হন তিনি। ইনিংসের তৃতীয় ফিফটি করেন রুট, তাকে ৬০ রানে থামান শাহীন।
হ্যারি ব্রুক ও জস বাটলারের ৪৫ রানের জুটিতে তিনশ পার করে ইংল্যান্ড। তাদের জুটি ভেঙে যায় ৪৭তম ওভারে। ব্রুক ১৭ বলে দুটি করে চার ও ছয়ে ৩০ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন। বাটলার ২৭ রানে পরের ওভারে রানআউট হন।
শেষ দিকে আগ্রাসী খেলতে গিয়ে দ্রুত উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। শেষ চার ওভারে ৩৪ রানেরর ব্যবধানে পাঁচ উইকেট পড়ে যায় তাদের। ওয়াসিমের টানা দুই ওভারে তিন ব্যাটার ফিরে যান, যার মধ্যে হারিস নেন অন্য দুটি উইকেট। দলগত পারফরম্যান্স দেখিয়ে ইংল্যান্ড ৯ উইকেটে করে ৩৩৭ রান।
এক বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ৫৩৩ রান দেওয়ার অযাচিত রেকর্ড গড়েছেন হারিস। পেছনে ফেলেছেন ২০১৯ সালে ৫২৬ রান দেওয়া ইংলিশ স্পিনার আদিল রশিদকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।