আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সৌদি আরব সরকার বাংলাদেশসহ বিদেশী শ্রমিকদের মধ্যে যেসব কর্মী নিজ দেশে ছুটি কাটিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্য ফিরে কাজে যোগদান করতে পারছেন না, তাদের আবার দেশটিতে নতুন করে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। সৌদি সরকারের এক ঘোষণায় এমন তথ্যের কথা দেশটিতে থাকা বাংলাদেশ দূতাবাস প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছে। তবে বিলম্বে তথ্য জানানোর কারণে দূতাবাসের কর্মকাণ্ড নিয়ে কর্মীরা নেতিবাচক মন্তব্য করে চলেছেন।
প্রায় এক সপ্তাহ আগে সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে জানানো হয়, সৌদি প্রবাসী শ্রমিকদের মধ্য যারা ছুটিতে দেশে গিয়ে কোনো কারণে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফিরে কাজে যোগদান করতে পারেনি, তারা এখন থেকে এক্সিট রি এন্ট্রি ভিসা এক্সপায়ার হওয়ার পর যেকোনো সময় নতুন কাজের ভিসায় আবার সৌদি আরবে যেতে পারবেন। এক্ষেত্রে বলা হচ্ছে, পূর্বের স্পন্সর বা কোম্পানির অধীনেই সৌদিতে প্রবেশ করতে হবে কিংবা এক্সিট রি এন্ট্রি ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে তিন বছর পরে আবার প্রবেশ করতে পারবে এমন শর্ত দেশটির সরকার রহিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
দূতাবাস থেকে এমন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর দেশ-বিদেশে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশীরা নেতিবাচক মন্তব্য করছেন। কেউ কেউ আবার ধন্যবাদ জানিয়ে সৌদি সরকারের আরবিতে দেয়া নতুন ঘোষণাটি বাংলায় অনুবাদ করে প্রকাশের অনুরোধ জানিয়েছেন।
সৌদি প্রবাসী আবু কাউছার এ প্রসঙ্গে বলছেন, দূতাবাস কর্মকর্তারা ঘুম থেকে কখন জেগেছেন? প্রবাসীদের এত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেরিতে প্রকাশ করেছে। আপনাদের আগে আমপাবলিক আগে তথ্য প্রকাশ করেছে। আকাশ আহমেদ এর জবাবে বলছেন, চার দিন পর স্যারেরা জানতে পেরেছেন। এটা ব্রকিং নিউজ ছিল। তাহের তালুকদার নামে এক প্রবাসী মজা করে বলার চেষ্টা করেন, আমার খুব ইচ্ছে বাংলাদেশ এম্বাসিতে কাজ করার। লোক লাগলে জানাবেন প্লিজ।
পারভেজ আলম মিয়াজি দূতাবাস কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, অনেক পরে আপনাদের ঘুম ভাঙছে। তবে মোহাম্মদ আলমগীর আলম দূতাবাসের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে বলেন, সৌদি পাসপোর্ট অফিসের গুরুত্বপূর্ণ খবর প্রকাশ করার জন্য আপনাদেরকে ধন্যবাদ। তবে সরকারের পরিপত্র মতে অনেক প্রবাসী পাসপোর্ট সংশোধনী দিয়ে ভীষণ বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে। বছর পেরিয়ে গেলে এখনো পাসপোর্টগুলো ‘পেন্ডিং ফর সেন্ট্রাল রি ইস্যু ইনভেস্টিগেশন’ এ পড়ে আছে। যাহা দেখার কেউ নাই। দয়া করে আপনারা ঢাকার সাথে একটু যোগাযোগ করেন।
এর আগে প্রবাসীদের সৌদি আরব যাওয়ার ক্ষেত্রে কাজ সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে এবং সংশ্লিষ্ট পেশায় প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।
গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর জাতীয় প্রবাসী দিবস-২০২৩ উপলক্ষে রিয়াদের বাংলাদেশ দূতাবাসে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ পরামর্শ দিয়েছিলেন।
আলোচনা সভায় রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন প্রবাসীবান্ধব সরকার কর্তৃক প্রবাসীদের কল্যাণে গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগের জন্য কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্য বলেন, বাংলাদেশ দূতাবাস কর্মীদের শিক্ষা ও কারিগরি দক্ষতা উন্নয়নের বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ দূতাবাসের মধ্যস্থতায় জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) এবং সৌদি সরকার অনুমোদিত তাকামল ফর বিজনেস সার্ভিসেস কোম্পানির মধ্যে স্কিলস ভেরিফিকেশন প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ চুক্তির আওতায় ২৯টি পেশায় বাংলাদেশ থেকে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সৌদি সরকার প্রদত্ত দক্ষতার সনদ নিয়ে অধিক বেতনে সৌদি আরবে কাজ করতে পারবেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, এছাড়া যাদের উচ্চ শিক্ষার আকাক্সক্ষা থাকা সত্ত্বেও যারা পড়াশুনা শেষ করতে পারেননি দূতাবাসের উদ্যোগে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে এসএসসি, এইচএসসি এবং ডিগ্রি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে শিক্ষাগত যোগ্যতা বৃদ্ধি করতে পারবেন।
অভিবাসীরা ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২১.৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স প্রেরণ করেছেন। একই সময়ে সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে ৩.০৭ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স প্রেরিত হয়েছে যা মোট রেমিট্যান্সের ১৬ শতাংশ। তবে সৌদিতে অধিক হারে দক্ষকর্মী নিয়োগ করা হলে আরো বেশি রেমিট্যান্স প্রেরণের সুযোগ রয়েছে বলে দূতাবাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।