বর্তমানে বাংলাদেশে পাসপোর্ট আবেদনকারী নাগরিকদের জন্য ই-পাসপোর্ট পদ্ধতি কার্যকর করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়াটি আগের তুলনায় অনেক সহজ, দ্রুত এবং প্রযুক্তিনির্ভর। এবার আপনি ঘরে বসেই অনলাইন আবেদন করতে পারবেন, সঙ্গে রয়েছে বায়োমেট্রিক, ছবি এবং তথ্য যাচাইয়ের সুবিধা এক জায়গায়।
কী কী কাগজপত্র লাগবে ই-পাসপোর্ট আবেদনের জন্য?
সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এখন আর কোনো কাগজপত্র সত্যায়ন করতে হয় না।
আবেদনকারীর বয়সভিত্তিক প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
- ১৮ বছরের নিচে:
- অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ (BRC – ইংরেজি ভার্সন)
- পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র
- ১৮-২০ বছর:
- এনআইডি অথবা জন্মনিবন্ধন
- ২০ বছরের ঊর্ধ্বে:
- শুধুমাত্র এনআইডি কার্ড
- অতিরিক্ত কাগজপত্র (যদি প্রযোজ্য হয়):
- পুরাতন পাসপোর্ট (মূল কপি ও ফটোকপি)
- পেশা বা ঠিকানা প্রমাণপত্র
- সরকারি কর্মকর্তা হলে GO/NOC/প্রত্যয়নপত্র
- বিবাহিতদের জন্য বিবাহ সনদ বা নিকাহনামা
- তথ্য সংশোধনের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত সনদ
ই-পাসপোর্টের জন্য অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া
১. ভিজিট করুন www.epassport.gov.bd
২. নতুন অ্যাকাউন্ট খুলুন
৩. নির্ধারিত অনলাইন ফর্মে ব্যক্তিগত তথ্য পূরণ করুন
৪. পাসপোর্টের ধরন নির্বাচন করুন:
- ৪৮ বা ৬৪ পৃষ্ঠার
- ৫ বা ১০ বছরের মেয়াদ (১৮ বছরের নিচে ও ৬৫ বছরের উপরে শুধুমাত্র ৫ বছর মেয়াদ)
৫. সাবমিট করার পর প্রিন্ট কপি বের করুন
ফি পরিশোধ ও অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুকিং
ফি জমার উপায়:
- অনলাইন পেমেন্ট
- ব্যাংক চালান (A-Challan)
ফি ও ডেলিভারি টাইপ অনুযায়ী নির্ধারিত মূল্য (৪৮ পৃষ্ঠা, ৫ বছর মেয়াদ):
ডেলিভারি টাইপ | সময়সীমা | ফি (টাকা) |
---|---|---|
সাধারণ | ২১ দিন | ৪,০২৫ |
জরুরি | ১০ দিন | ৬,৯০০ |
অতি জরুরি | ২ দিন | ৮,৬২৫ |
এছাড়াও: ফি’র সাথে ১৫% VAT প্রযোজ্য।
ফি জমা দেওয়ার পর, আবেদনপত্র প্রিন্ট করে অনলাইনে অ্যাপয়েন্টমেন্ট স্লট বুক করতে হবে।
পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিতি ও বায়োমেট্রিক কার্যক্রম
নির্ধারিত তারিখে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে যা যা সঙ্গে নিতে হবে:
- অনলাইন আবেদন ফরমের প্রিন্ট কপি
- সকল মূল কাগজপত্র ও ফটোকপি
- ফি জমার রশিদ
পাসপোর্ট অফিসে যা যা করা হয়:
- ডিজিটাল ছবি তোলা
- ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়া
- আইরিশ স্ক্যান
- ডিজিটাল স্বাক্ষর
গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা
- পাসপোর্ট অফিসে ছবি তোলার জন্য আলাদা করে ছবি লাগবে না
- ই-পাসপোর্টের ব্যক্তিগত তথ্য (নাম, জন্ম তারিখ, এনআইডি নম্বর ইত্যাদি) পরিবর্তনযোগ্য নয়
- দালাল বা মধ্যস্থতাকারীর সাহায্য নেবেন না
- সহায়তার জন্য কল করুন ১৬৪৪৫ (পাসপোর্ট কল সেন্টার)
সংক্ষেপে ই-পাসপোর্ট আবেদনের ধাপসমূহ
১. প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ
২. www.epassport.gov.bd ওয়েবসাইটে আবেদন
৩. অনলাইনে ফি পরিশোধ অথবা ব্যাংক চালান
4. অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক
৫. নির্ধারিত তারিখে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে বায়োমেট্রিক ও অন্যান্য কার্যক্রম সম্পন্ন করা
বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট আবেদন এখন আগের তুলনায় অনেক সহজ, ঝামেলাহীন এবং সময় সাশ্রয়ী। অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসেই আবেদন করা, অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া এবং দ্রুত ডেলিভারির সুবিধা থাকায় এটি নাগরিকদের জন্য একটি অত্যন্ত ইতিবাচক উদ্যোগ। সঠিক তথ্য দিয়ে আবেদন করে সহজেই আপনার ই-পাসপোর্ট সংগ্রহ করুন।
যেকোনো প্রশ্ন থাকলে বা প্রক্রিয়ায় সমস্যায় পড়লে সরকারি ওয়েবসাইট বা হেল্পলাইন ১৬৪৪৫-এ যোগাযোগ করুন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।