আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান সম্প্রতি নেদারল্যান্ডসের হেগে অনুষ্ঠিত ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন। তিনি পৃথকভাবে বৈঠক করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জের সঙ্গে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা
ডেইলি সাবাহ জানায়, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারের সঙ্গে বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। বৈঠকে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, ইরান ও ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির চুক্তি মেনে চলবে। তিনি বলেন, গাজা সংকটকে আরও ভয়াবহ করতে দেওয়া উচিত নয়।
এরদোয়ান জোর দিয়ে বলেন, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন মেনে নেওয়া যায় না। তুরস্কের প্রধান লক্ষ্য হলো গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করা এবং সেখানে মানবিক সহায়তা নিরবচ্ছিন্নভাবে পৌঁছানো।
সিরিয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, তুরস্ক দেশটির আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। একই সঙ্গে সিরিয়ায় ইসরায়েলের হামলা আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে বলেও সতর্ক করেন তিনি। এরদোয়ান আশা প্রকাশ করেন, সিরিয়ায় সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন হলে সেখানে অবস্থানরত শরণার্থীদের স্বেচ্ছামূলক প্রত্যাবর্তন সহজ হবে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও এরদোয়ান গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, এই সংকটের ন্যায়ভিত্তিক ও স্থায়ী সমাধানে তুরস্ক অঙ্গীকারবদ্ধ। তুর্কি প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ব্রিটেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ৩০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করা হবে, বিশেষ করে প্রতিরক্ষা শিল্পে সহযোগিতা বাড়ানো হবে।
এই বৈঠকে এরদোয়ানের সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াসার গুলার, গোয়েন্দা প্রধান ইব্রাহিম কালিন, প্রেস সেক্রেটারি ফাহরেত্তিন আলতুনসহ আরও শীর্ষ কর্মকর্তারা।
জার্মান চ্যান্সেলরের সঙ্গে বৈঠক
এরপর প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে মের্জ জানান, তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে মধ্যস্থতার জন্য এরদোয়ানকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, “আমি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানকে অনুরোধ করেছি যেন তিনি তার প্রভাব ব্যবহার করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনকে আলোচনার টেবিলে আনেন, যাতে এই ভয়াবহ যুদ্ধের অবসান ঘটানো যায়।”
ফরাসি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ
পরে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে বৈঠক করেন। উভয় নেতা একে অপরকে আন্তরিকভাবে শুভেচ্ছা জানান। তবে বৈঠকের বিস্তারিত আলোচনার বিষয়বস্তু সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়নি।
এই তিনটি বৈঠকই আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে তুরস্কের সক্রিয় ভূমিকাকে আবারও দৃশ্যমান করেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।