লাইফস্টাইল ডেস্ক : রুটিনমাফিক ভোর ছয়টায় অ্যালার্ম বেজে ওঠে। সেটি বন্ধ করে ঘুম ভাঙতে ভাঙতে সাড়ে ছয়টা। বিছানায় শুয়ে, গড়িয়ে কেটে যায় আরও এক ঘণ্টা। রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়েও লাভ হয়নি, ফল একই!
এই যদি হয় আপনার রোজকার অবস্থা, তাহলে আশঙ্কা রয়েছে যে আপনি ডাইসেনিয়ায় আক্রান্ত।
কী এই ডাইসেনিয়া
অনিদ্রা বা ইনসমনিয়ার কথা তো কমবেশি সবাই জানে। সে তুলনায় ‘ডাইসেনিয়া’ টার্মটি একেবারেই আনকোরা। ঘুম থেকে ওঠার পর সকালে বিছানা ছাড়তে যখন কেউ যখন অসুবিধার সম্মুখীন হয়ে থাকে, সেটিই হলো ডাইসেনিয়া।
সহজ কথায়, এটি হলো বিছানায় শুয়ে থাকার প্রবল ইচ্ছা বা আকাঙ্ক্ষা। এর সঙ্গে দেখা দেয় ক্লান্তিভাব। সময়মতো ঘুম থেকে না ওঠায় উদ্বিগ্নতাও এসে যুক্ত হয়। রাতে বারবার ঘুম ভেঙে যায়, আবার মুখে ‘আর ৫ মিনিট ঘুমিয়ে নেই’ বললেও কোনোভাবেই সেই ঘুম পরে সম্পূর্ণ হয় না।
গোড়াতেই গলদ থেকে যাওয়ায় দিনের বাকি কাজগুলোও রয়ে যায় অসম্পূর্ণ। এর প্রভাব পড়ে ব্যক্তিজীবনে, সামাজিক পরিসরে, কর্মক্ষেত্রে। আক্রান্ত ব্যক্তি আস্তে আস্তে খিটখটে হয়ে ওঠেন। কোনো কাজে মনোযোগ দিতে পারেন না, তার মধ্যে আত্মবিশ্বাসের অভাব দেখা দেয়, ভোগেন সিদ্ধান্তহীনতায়।
ডাইসেনিয়াকে হালকাভাবে নেওয়ার জো নেই। চিকিৎসকদের কেউ কেউ ইদানিং মনে করছেন থাইরয়েড, রক্তশূন্যতা, অবসাদ বা হৃদরোগের লক্ষণ হতে পারে এই রোগ।
ডাইসেনিয়ার আবার বিভিন্ন পর্যায় রয়েছে। অবস্থা তীব্র আকার ধারণ করলে রোগীর সময়জ্ঞান লোপ পেতে পারে। তখন শুধু সকালে নয়, দিনের একটা লম্বা সময় তাকে হয়তো বিছানাতে দেখা যেতে পারে, যা তাঁর রোজকার রুটিন আর জীবনযাপনে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। মনে রাখা প্রয়োজন, নিছক অলসতা বা উৎসাহের অভাবে কেউ দিনের পর দিন এমন আচরণ করে না। এর জন্য বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি।
ডাইসেনিয়া বনাম ডিপ্রেশন
ডাইসেনিয়াকে অনেকেই সহজাত ক্লান্তির সঙ্গে মিলিয়ে ফেলবেন। কিন্তু ক্লান্ত বোধ করা, আর ডাইসেনিয়ায় ভোগা এক নয়। এই রোগটি স্বাভাবিক ক্লান্তির ঊর্ধ্বে। তবে ডাইসেনিয়াকে বিষণ্নতার মতো মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার সঙ্গে যুক্ত করা যেতে পারে। সকালে বিছানা ছেড়ে ওঠার ‘যন্ত্রণা’র সঙ্গে যদি আপনি লাগাতার মন খারাপ, কোনো কিছুতে আগ্রহ খুঁজে না পাওয়া, মনোযোগহীনতা প্রভৃতি উপসর্গে ভোগেন তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বাঞ্ছনীয়।
করণীয়ডাইসেনিয়াকে পুরোপুরি নির্মূল করা খুব সহজ নয়। তবে জীবনযাপনে বদল এনে কিছুটা উপকার পেতে পারেন। প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যান এবং সকালে একই সময়ে ঘুম থেকে উঠুন। খাওয়াদাওয়া, ঘুম, কাজ সবকিছু রুটিন মেনে করার চেষ্টা করুন। কফি খাওয়ার অভ্যাস পরিহার করুন। ঘুমের ঘণ্টাখানেক আগে মোবাইল ফোন বা ল্যাপটপ ব্যবহার পরিহার করুন; এর বদলে যোগব্যায়াম চর্চা করতে পারেন।
তথ্যসূত্র: আর্গোমোশন
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।