আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই পাকিস্তানে শুরু হয়েছে নির্বাচনি দামামা। ৮ ফেব্রুয়ারির ভোটের দিনে এবার ভাগ্য পরীক্ষার মাঠে থাকছে দেশটির প্রধান ১৩ দল। পাকিস্তানে মোট নিবন্ধিত দল ১৬৭টি। এর মধ্যে ক্রীড়ানক ভূমিকায় থাকা প্রভাবশালী এই ১৩ দলের হাতেই ‘মসনদ দখল’র তির।
জনপ্রিয়তার দিক থেকে পাকিস্তানে এখন শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। ক্রিকেটের মাঠ থেকে রাজনীতিতে আসা পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের হাতে গড়ে উঠেছে দলটি।
খান কারাগারে বন্দি থাকায় বর্তমানে দলের নেতৃত্বে রয়েছেন দেশটির আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ গোহর আলী খান। ২০১৮ সালের আগস্টে ক্ষমতায় বসেন খান। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যেই দেশটির সেনাবাহিনী তার বিরুদ্ধে চলে যাওয়ায় ২০২২ সালের এপ্রিলে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হন।
এর পর থেকেই তার বিরুদ্ধে ১৫০টিরও বেশি মামলা করা হয়েছে। খানের দলের নির্বাচনি প্রতীক ক্রিকেট ব্যাটও ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। ফলে দলের প্রার্থীরা এখন স্বতন্ত্র হিসাবে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য হয়েছেন। তবে এসব প্রতিবন্ধকতার পরও দেশজুড়ে খানের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে।
কিন্তু জনপ্রিয়তায় এগিয়ে থাকলেও পাকিস্তানের বড় একটি অংশের মানুষ মনে করেন আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া গণপরিষদ নির্বাচনে দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন নওয়াজ শরিফ।
সম্প্রতি পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম উর্দু নিউজের এক জরিপে বলা হয়, পাকিস্তানে এখনো সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)।
জরিপে অংশ নেওয়া ভোটারদের মধ্যে ৩৩ দশমিক ৭ শতাংশ মনে করেন, পাকিস্তানে এখনো সবচেয়ে জনপ্রিয় দল পিটিআই। অংশগ্রহণকারী ভোটারদের মধ্যে ২৩ শতাংশের পছন্দের দল মুসলিম লীগ-নওয়াজ।
জরিপে দলগতভাবে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ এগিয়ে থাকলেও প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের নেতা নওয়াজ শরিফ।
জরিপে অংশ নেওয়া ৩৪ দশমিক ৮ শতাংশ ভোটার মনে করেন, পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। বিপরীতে ২৯ দশমিক ৮ শতাংশ ভোটার মনে করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
তবে জনপ্রিয়তার বিচারে ইমরান খান ও তার দল পিটিআই অনেকটাই এগিয়ে থাকলেও বাস্তবতা হলো—দলটির নেতা-কর্মীদের নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে খোদ সরকারের তরফ থেকেই। দলটির প্রতীক পর্যন্ত কেড়ে নেওয়া হয়েছে তথাকথিত ‘দলীয় শৃঙ্খলার’ অভিযোগ তুলে। ইমরান খানকে চার মামলায় যথাক্রমে ৩ বছর, ১০ বছর, ১৪ বছর ও ৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার আগে থেকেই পিটিআই নেতাকর্মীদের ব্যাপক ধরপাকড় করা হয়েছে। নির্বাচনি প্রচারেও তাদের সশরীরে খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। এবার পিটিআই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে হাতিয়ার বানিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে পাল্টা জবাব এবং নির্বাচনি প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। দলের অনেক মাঝারি সারির নেতা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। যদিও তাদের বেশিরভাগই পরীক্ষিত নন এবং দলীয় প্রতীকে নয় বরং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তারা ভোটের ময়দানে নেমেছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।