জুমবাংলা ডেস্ক : দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের বহুল আকাঙ্ক্ষিত আরেকটি স্বপ্নের দুয়ার খুলেছে। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশে সবকিছু স্মার্ট হবে এটাই আমাদের লক্ষ্য।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ঢাকা-ভাঙ্গা অংশের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মাওয়া রেলস্টেশন প্রাঙ্গণ থেকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধ করেছিল, কিন্তু আজ নিজের টাকায় পদ্মা সেতু করে বাংলাদেশ সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে।
দেশের সকল জেলাকে রেল নেটওয়ার্কের আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা নিয়েছি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত-সমৃদ্ধ, আরামদায়ক, সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব রেল যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হবে।
নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের মেয়াদেই সবচেয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। তাই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কেউ যাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং মানুষের ভাগ্য নিয়ে খেলতে না পারে সে ব্যাপারে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে একটি মানুষও ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে ৮ লাখ ৪০ হাজার ভূমিহীন ও গৃহহীনকে ভূমি ও গৃহ দিয়েছি। মডেল মসজিদ করে দিয়েছি সব জেলা উপজেলায়।
তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য দেশকে আরও উন্নত করা। ছাত্র ছাত্রীদের বিনামূল্যে বই দিচ্ছি। আড়াই কোটি শিক্ষার্থী বৃত্তি-উপবৃত্তি পাচ্ছে। যাতে দেশটা এগিয়ে যায়। প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছি। ল্যাব করে দিয়ে কম্পিউটার শিক্ষা দিচ্ছি। লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং কর্মসূচির মাধ্যমে ৬ লক্ষ্য ফ্রিল্যান্সারকে প্রশিক্ষিত করছি। তারা ইউনিয়নে বসে দেশ বিদেশের কাজ করে উপার্জন করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, রেলের সার্বিক উন্নয়নে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। আমরা সাড়ে ১৪ বছরে ৮৭৩ কিলোমিটার নতুন রেল লাইন নির্মাণ করেছি। ২৮০ কিলোমিটার মিটারগেজ রেলপথকে ডুয়েলগেজে রূপান্তর করা হয়েছে। ১৩৯১ কিলোমিটার লাইন পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। এক হাজার ৩৭টি নতুন রেল সেতু নির্মাণ ও ৭৯৪টি রেল সেতু পুনর্নির্মাণ করেছি। ১৪৬টি নতুন স্টেশন ভবন নির্মাণ ও ২৩৭টি স্টেশন ভবন পুনর্নির্মাণ করেছি। অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় গুরুত্ব দিয়েছি। আশা করি, ৩ থেকে ৪ বছরেরর মধ্যে বাংলাদেশে রেল যোগাযোগ আরও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে।
তিনি আরও বলেন, ২১ বছর পর আমরা সরকার গঠন করি। তখন থেকেই জনগণের সেবা শুরু করি। এর আগের ২৯ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা কেনো মানুষের জন্য কিছু করতে পারেনি? আসলে তারা স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাস করে না। তারা চায় না, স্বাধীন দেশটি এগিয়ে যাক।
এদিকে মাওয়া-ভাঙ্গায় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে কেন্দ্র করে পুরো জেলাসহ আশপাশের জেলা-উপজেলাতেও বইছে উৎসবের আমেজ। সর্বস্তরের নেতাকর্মী সমর্থকদের মধ্যে বইছে রেল উদ্বোধন এবং দলীয় নেত্রীর আগমনী ঈদ আনন্দের উচ্ছ্বাস। তার আগমনকে সামনে রেখে ভাঙ্গাজুড়ে শুরু হয়েছে সাজ সাজ রব।
পদ্মা সেতুর রেল লিংক প্রকল্প সূত্র থেকে জানা যায়, মাওয়া স্টেশন থেকে ভাঙ্গার দূরত্ব ৪২ কিলোমিটার। এর মধ্যে পদ্মা সেতু ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। মাওয়া প্রান্তে মাওয়া স্টেশন থেকে সেতু পর্যন্ত ভায়াডাক্ট (উড়ালপথ) ৩ দশমিক ১৫ কিলোমিটার আর শরীয়তপুর প্রান্তে সেতু থেকে শিবচরের পদ্মা স্টেশন পর্যন্ত ভায়াডাক্ট ৪ কিলোমিটার। মাওয়া স্টেশন থেকে পদ্মা স্টেশন পর্যন্ত ১৩ দশমিক ৩ কিলোমিটার অংশ (ভায়াডাক্ট ও পদ্মা সেতুর অংশ) পাথরবিহীন রেলপথ।
শরীয়তপুর প্রান্তে পদ্মা সেতুর পর চার কিলোমিটার দূরত্বে মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় এ প্রান্তের প্রথম স্টেশন। এর পাঁচ কিলোমিটার পর শিবচরের পাচ্চর এলাকায় শিবচর স্টেশন। এরপর ভাঙ্গা জংশন ও ভাঙ্গা পুরোনো স্টেশন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।