জুমবাংলা ডেস্ক : পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (এডিশনাল আইজিপি) ড. শামসুদ্দোহা খন্দকার অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। শুধু শামসুদ্দোহা একা নন, তার স্ত্রী ফেরদৌসী সুলতানারও রয়েছে বিপুল পরিমাণ সম্পদ।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বলছে, এ দম্পতি জ্ঞাত আয়বহির্ভূত বিপুল সম্পদের মালিক। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ১ হাজার ২৭ শতক জমি আছে তাদের নামে। দলিলে এসব জমির দাম ৭০ কোটি টাকা দেখানো হলেও আদতে বাজারদর প্রায় ৫০০ কোটি টাকার বেশি হবে। গত ১৮ মার্চ আদালত তার এসব সম্পত্তি জব্দ করার আদেশ দেয়। পরদিন তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করলে ঐ আদেশ স্থগিত হয়ে যায়।
রাজধানীর গুলশানে অন্তত ২০০ কোটি টাকা দামের সরকারি জমি ও বাড়ি নিজের করে নিতে নানা ধরনের চেষ্টা চালাচ্ছেন। শামসুদ্দোহা ২০১১ সালে প্রেষণে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান পদে বসেন। ২০১৯ সালে তার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। ঐ মামলায় স্ত্রী ফেরদৌসী সুলতানাও আসামি। মামলাটি এখনো চলমান। এ ছাড়া তার রয়েছে হরেক রকমের ব্যবসা-বাণিজ্য। তিনি ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির মালিকদের অন্যতম একজন। ২০২১-২২ সালের পরিষদে শামসুদ্দোহা ছিলেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান।
দুদকের তদন্তে শামসুদ্দোহার নামে রাজধানীর খিলক্ষেত ও ঢাকার নবাবগঞ্জে ৩৫টি দলিলে ৫৬৩ শতকের বেশি জমির খোঁজ পাওয়া গেছে। এসব জমির বেশির ভাগই নবাবগঞ্জের কলাকোপায়। দলিলে এসব স্থাবর সম্পদের দাম ৪০ কোটির মতো হলেও বর্তমান বাজারদর প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। এর বাইরে তার একটি কৃষিখামার ও গ্রিন পার্ক রয়েছে। দলিলে এ দুটির দাম প্রায় ৪ কোটি টাকা। শামসুদ্দোহার স্ত্রী ফেরদৌসী সুলতানা খন্দকারের নামে রাজধানীর নিকুঞ্জে তিন কাঠা, খিলক্ষেতে ২২ কাঠা, গুলশানের বিভিন্ন মৌজায় ৫৩ কাঠা জমির তথ্য পেয়েছে দুদক। এগুলোসহ গাজীপুর ও নবাবগঞ্জের বিভিন্ন মৌজায় মোট ৩২টি দলিলে তার নামে ৪৬৪ শতক জমি রয়েছে। দলিলে এসব জমির দাম ৩০ কোটি টাকার কিছু বেশি হলেও বর্তমান বাজারদর শতকোটি টাকার ওপরে।
গুলশানের ১৩৫ নম্বর রোডের এসইএস (এ) ৬ নম্বর প্লটে এক বিঘা জমির ওপর নির্মিত ডুপ্লেক্স বাড়িটির বাজারদর ২০০ কোটি টাকার কম নয়। গেল আট বছর সেই সরকারি বাড়িটি অবৈধভাবে দখলে রেখেছেন এই শামসুদ্দোহা। এ সময়ে তিনি কোনো ভাড়া তো দেনইনি, উলটো বাড়িটি তাকে বরাদ্দ দেওয়ার জন্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। তবে তিনি পূর্বাচলে আরেকটি প্লট পাওয়ায় মন্ত্রণালয় সে আবেদন নাকচ করে দেয়। তবু তিনি বাড়িটি ছাড়েননি। তাকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদে আবাসন পরিদপ্তর একবার ম্যাজিস্ট্রেটও নিয়োগ দেয়। তবে পুলিশের প্রভাবশালী লোক হওয়ায় সে প্রক্রিয়াও থেমে যায়। এরপর আবাসন পরিদপ্তর আর কখনো তাকে বাড়ি থেকে তাড়ানোর সাহস দেখায়নি।
এ ব্যাপারে শামসুদ্দোহার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, তার এক মেয়ে ও ছোট ছেলে কানাডায় পড়াশোনা করে। বেনজীরকাণ্ড নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা ওঠার পর, পরিবার নিয়ে কানাডা বেড়াতে গেছেন তিনি। সূত্র : ইত্তেফাক
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।