জুমবাংলা ডেস্ক : সিলেট মহানগর জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার রাত ৮টার দিকে সিলেট নগরীর জিন্দাবাজারস্থ আল-হামরা শপিং সেন্টারের রিচমন্ড হোটেলের কনফারেন্স রুমে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল হক মাহবুব জুবায়ের, সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, সেক্রেটারি শাহজাহান আলী, সিলেট রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী চন্দ্রনাথানন্দজী মহারাজ, সিলেট বৌদ্ধ বিহারধ্যক্ষ শ্রীমৎ সংঘ্যানন্দ মহাথের, সিলেট প্রেসবিটারিয়ান মিশনমন্ডলীর সভাপতি ডিকন নিঝুম সাংমা, সিলেট জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোপীকা শ্যাম পূরকায়স্থ, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মৃত্যুঞ্জয় ধর ভোলা, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মলয় পুরকায়স্থ, সিলেট জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট বিজয় কৃষ্ণ বিশ্বাস, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক রজত কান্তি ভট্টাচার্য, সিলেট মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রদীপ দেবসহ প্রমুখ।
সভায় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতারা বলেন, ৫ আগস্টের পরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করা হয়েছিল। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আমাদের সঙ্গে থেকে আমাদের সান্ত্বনা দিয়েছে। ইসলাম ধর্মে বাজে লোকদের জায়গা নেই। আমরা ধর্মীয়ভাবে সহনশীল হবো, রাজনৈতিক বিষয় রাজনীতিবিদরা বুঝবেন। বিগত সরকারের আমলে আমাদের কিছু দাবি-দাওয়া ছিল তারা তা মেনে নেয়নি। সংখ্যালঘুদের কোনো ফাউন্ডেশন দেওয়া হচ্ছে না। কল্যাণ ট্রাস্ট করে রেখেছে। সংখ্যালঘুরা নাগরিক অধিকার পাচ্ছে না। দ্রুত নির্বাচন দেওয়া উচিত। দেবোত্তর সম্পত্তিরসহ আমাদের ৮টি দাবি যাতে বর্তমান সরকার মেনে নেয় এ জন্য জামায়াতের ইসলামীর আমির যাতে হিন্দু সম্প্রদায়কে সহযোগিতা করেন।
এ সময় জামায়াতের নেতারা বলেন, বিগত সময়ে রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন সম্প্রদায়, পক্ষ বিপক্ষ উপস্থাপন করে নিজ নিজ স্বার্থে ব্যবহার করেছেন। জুলাই বিপ্লবের পরবর্তী সময়ে আমরা বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে চাই। সংখ্যালঘু নির্যাতন ঘটনা অধিকাংশ ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচার। কিছু ঘটনা ঘটেছে রাজনৈতিক কারণে, তবে তাও আমরা সাপোর্ট করি না। আইনের ভিত্তিতে সবাইকে চলা উচিত। মানুষ মানুষের জন্য। মানুষ মানুষকে মানুষ হিসেবে গণ্য করবে কোনো ধর্ম হিসেবে কাউকে বিবেচনা করা উচিত না। আমরা প্রাইমারি থেকে সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ পর্যন্ত হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ পাশাপাশি বেঞ্চে বসি। যুগ যুগ ধরে আমরা এক ধর্মের মানুষ আরেক ধর্মের মানুষের সামাজিক অনুষ্ঠানে যাই। কোনো সাম্প্রদায়িক ঘটনায় ঐ দোষী দায়ী, ধর্ম দায়ী না।
তারা আরো বলেন, শেখ মুজিব রহমান ১৯৭২ সালে বললেন, এ দেশে যারা থাকবেন তাদের বাঙালি হয়েই থাকতে হবে। এটার পরেই পাহাড়ে যে ঝামেলাটা শুরু হলো এখনো রয়েছে। ধর্ম চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় না। আমরা মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখবো। এ দেশকে গড়ে তুলতে সবার অবদান রয়েছে। মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। একজন নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর তার সম্পদ কমবে আমরা এমন বাংলাদেশ চাই। রাজনীতিকে অনেকে ব্যবসা বানিয়েছে। আগস্টের পর চাঁদাবাজি ও মামলা বানিজ্যের শুধু ফ্লাগ পরিবর্তন হয়েছে। আমরা বিগত সরকারের আমলে সবচেয়ে নির্যাতিত হয়েছি। আমাদের দলের নিবন্ধন কেড়ে নিয়েছিল, নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। আমাদের ওপর সবচেয়ে নির্যাতন করা হয়েছিল। ৫ তারিখ আমরা সব নেতাকর্মীকে সবধর্মের প্রতিষ্ঠান পাহারা দিতে বলেছি। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে কথা বলে আসতেছি। দুর্গাপূজার সময় আমরা সহযোগিতা করেছি। এখন অনেকে চাঁদাবাজি করে দখলবাজি করে। আমরা কারো সম্পদের দিকে হাত বাড়াতে না করেছি। যেসমস্ত দাবি দাওয়া আপনারা করেছেন তা দেখবো।
জামায়াত নেতারা বলেন- আমরা সংখ্যালঘু সংখ্যাগুরু এরকম সংজ্ঞায় বিশ্বাসী না। সবাই এদেশের নাগরিক। জামায়াতে ইসলামী একমাত্র সংগঠন যারা নিজেদের সদস্যদের মাসিক চাঁদায় চলে। আমরা সব সম্প্রদায়ের মানুষ জাতীয় স্বার্থে এক হয়ে কাজ করবো, শান্তির বাংলাদেশ গড়বো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।