ছাত্রদল-ছাত্রলীগের মারামারি, ভিডিও ধারণ করায় প্রবাসীকে পিটিয়ে হত্যা

জুমবাংলা ডেস্ক : রাজনৈতিক প্রতিহিংসার মারপিটের ঘটনার ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারণ করার অপরাধে মালয়েশিয়া প্রবাসীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের বিরুদ্ধে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনায় জড়িতদের কঠিন শাস্তির দাবি জানিয়েছেন পারিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারী) গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের তিনশুনিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। ওই এলাকার গিয়াস উদ্দিনের একমাত্র ছেলে মো. এনামুল হক (৩৫)। তিনি দীর্ঘদিন মালয়শিয়া প্রবাস জীবন পার করে গত তিন মাস আগে ছুটিতে বাড়ি আসেন। চলতি মাসে তার মালয়শিয়া চলে যাওয়ার কথা ছিলো। এনামুল এর স্ত্রী ও ৬ বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।

জানাগেছে, গত ১৩ জানুয়ারী সোমবার ভাকোয়াদী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এনআইডি স্মার্ট কার্ড বিতরণ কার্যক্রম চলছিলো। চাঁদপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি মো. ফরিদ (২২) স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ করতে গেলে চাঁদপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের (২০-৩০) জন নেতাকর্মীরা হামলা করে। এতে গুরুতর আহত হয় ফরিদ। মারপিটের ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারণ করার অপরাধে ছাত্রদল নেতা রবিন, বকুল সহ তাদের সহযোগিরা এনামূলের মোবাইল ছিনিয়ে নেয় এবং বেধরক মারপিট করে তাকে গুরুতর আহত করে। স্থানীয়ের সহযোগীতায় প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি আসার পর অবস্থার অবনতি হলে শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এনামুল কে। ১৫ জানুয়ারী বুধবার দিবাগত মধ্য রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।

স্থানীয় আওলাদ হোসেন জানায়, ওই দিন আনুমানিক দেরটার দিকে ছাত্র দলের লোকজন এসে ফরিদকে ধরে একটি রোমের ভিতরে নিয়ে ডেগারের মতন কি দিয়ে (ধারালো অস্ত্র) দিয়ে চার-পাঁচটা ফার মারে। ওই ঘটনা এনামুল একটু ভিডিও করে। সেই অপরাধে এনামুল কে বেধড়ক মারপিট করে এবং তার মোবাইল ছিনিয়ে নেয় অভিযুক্তরা।

নিহতের স্ত্রী নাজমীন আক্তার বৃষ্টি বলেন, গত সোমবার জাতীয় পরিচয় পত্রের খোঁজ নিতে ভাকোয়াদি স্কুলে যায় তার স্বামী এনামুল। সেখানে একটি মারামারি হচ্ছিল। এনামুল পাশে দাড়িয়ে ভিডিও করার অভিযোগে তার স্বামীকে কয়েকজন মারধর করে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন বলে জানায়।

এবিষয়ে কাপাসিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামাল হোসেন আমাদের সময় কে জানান, ছাত্রদল বনাম ছাত্রলীগের মারপিটের ঘটনা এনামুল মোবাইলে ভিডিও ধারণ করার অপরাধে ছাত্রদলের ছেলেরা তাকে কিল, ঘুঁষি ও কেচা মারপিট করেছে। এতে তার মৃত্যু হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা হবে।

ওসি আরও জানান, এনামুল ছয় বছর মালয়েশিয়া প্রবাশে থেকে কিছুদিন পূর্বে দেশে এসেছে। রাজনীতির সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই। উৎসুক জনতার মত সে ভিডিও ধারণ করেছিল। এটাই তার অপরাধ।