সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ও হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের ছেলে নবীনূর দেওয়ানসহ ১৫ জনের নামে চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে। মামলার পরও বন্ধ হয়নি চাঁদাবাজি। তবে পুলিশ বলছেন,তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এঘটনায় গতকাল শনিবার রাতে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের বাল্কহেড মালিক ও বালু ব্যবসায়ী রাজু আহম্মেদ বাদি হয়ে হরিরামপুর থানায় মামলা করেন।
আসামীরা হলেন, জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক এবং হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমানের ছেলে নবীনূর দেওয়ান (২৭) ও একই উপজেলার বহলাতলীর জিন্নাল দেওয়ানের ছেলে তারেক দেওয়ান (৪৩), আকতার হোসেনের ছেলে আবজাল হোসেন (৪৭), গোপীনাথপুরের শহিদ মাদবরের ছেলে রবিউল ইসলাম (৩৩), কইলা মিয়ার ছেলে নাসির মিয়া (২২), দাসকান্দির বয়ড়ার মৃত দেওয়ান শামসুর রহমানের ছেলে টিপু দেওয়ান (৪৫) মোশাররফ পোদ্দারের ছেলে মামুন পোদ্দার (২৭) এবং কালই এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে মোহাম্মদ এরশাদ (৫০) সহ অজ্ঞাত প্রায় ১৫জন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ইজারাকৃত বালুমহাল থেকে বালু উত্তোলন করে বাল্কহেডের মাধ্যমে নদীপথে ফ্লাইওভার ও মেট্টোরেল এবং বরিশাল, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বালু দিয়ে আসছেন রাজু আহম্মেদ। কিন্তু সম্প্রতি হরিরামপুরের বয়ড়া ইউনিয়নের আন্দারমানিক খেয়াঘাটের পদ্মা নদীতে কয়েকটি বালুবাহী বাল্কহেড আটক করে বাল্কহেডের কর্মচারীদের মারধর করে ও প্রতিটি বাল্কহেড থেকে ২৫-৩০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে আসামীরা এবং চাঁদা না দিলে হত্যা করে নদীতে ফেলে দেওয়ার হুমকিও দেয়। সেই সঙ্গে চাঁদা না দিলে হরিরামপুর থেকে আমাীদের বালু নিয়ে বিক্রি করতে হবে। আসামীদের ভয়ে কয়েকদিন বাল্কহেড বন্ধ থাকায় আর্থিকভাবে ক্ষতি হয়েছে এবং এই নৌপথে বাল্কহেডের কর্মচারীরা আসতে ভয় পাচ্ছে। পরে বিষয়টি বাল্কহেড মালিক ও গণ্যমান্যদের সাথে আলোচনা করে শনিবার রাতে হরিরামপুর থানায় মামলা করা হয়।
বাল্কহেড মালিক ও বালু ব্যবসায়ী রাজু আহম্মেদ জানান, হঠাৎ করে হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর দেওয়ানের ছেলে নবীনূর দেওয়ানের নেতৃত্বে একদল ব্যক্তি নদীতে বাল্কহেডে আটক করছে এবং চাঁদা দাবি করছে। সারা দেশের ৫’শ বাল্কহেড চলাচল করে। এর মধ্যে হরিরামপুরে পদ্মা দিয়ে প্রতিদিন ৫-৭টি বাল্কহেড চলাচল করে আর এসব বাল্কহেড থেকে ২৫-৩০ হাজার করে টাকা চাঁদা দাবি করছে। দেশের কোথাও তো চাঁদা দিতে হয় না, অথচ হরিরামপুরে চাঁদার জন্য বাল্কহেড আটক করে রাখছে চাঁদাবাজরা। অভিযোগের পরও বাল্কহেড আটক করে চাঁদা দাবি করছে বলেও তিনি জানান।
অভিযুক্ত নবীনূর দেওয়ান মোবাইল ফোনে জানান,আমার বিরুদ্ধে এটা সর্ম্পূণ মিথ্যা অভিযোগ। এলাকায় আমাদের সম্মানহানীর জন্য এধরনের কাজ করা হয়েছে। তবে বালুর ব্যবসা সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক এবং হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান অসুস্থ্য থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন কুমার আদিত্য বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত চলছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।