সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গণপরিবহণ থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগে দুই জনকে আটকের পর মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। চাঁদাবাজির অভিযোগে আটক হওয়া ওই দুই যুবকের নাম ওয়াসিম (৩৫) ও রাসেল (৩০)। তারা মানিকগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি মো: জাহিদুর রহমান জাহিদের অনুসরাী।
জানা গেছে, মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌরসভা কর্তৃক ইজারাকৃত পার্কিং চার্জ ব্যতিত প্রতিটি গাড়ি থেকে প্রতিদিন অবৈধভাবে মোটা অঙ্কের টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। মালিক সমিতি ও শ্রমিক সমিতির নামে তোলা হয় এসব চাঁদা। ঈদকে সামনে রেখে এই চাঁদাবাজির পরিমাণ কয়েকগুণ বেড়ে যায়। লাগামহীন এ চাঁদাবাজির কারণে অতিষ্ট হয়ে বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে মানিকগঞ্জ সদর থানা পুলিশকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানালে চাঁদাবাজির সময় দুই যুবককে হাতেনাতে আটক করে থানায় নিয়ে যায় মানিকগঞ্জ সদর থানার উপ-পরিদর্শক মাসুদুর রহমান। পরে তাদের কাছ থেকে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেয়া হয় বলে জানা যায়।
বাস চালক জহির বলেন, প্রতিদিনই বাসস্ট্যান্ডে ২০০ টাকা করে দিতে হয়। ঈদ উপলক্ষে বখশিস বাবদ ১০০ টাকাসহ মোট ৩০০ টাকা দিতে হয়। এসব টাকা নেয় বাস মালিক সমিতির সভাপতির লোকজন। এর বাইরে পার্কিং চার্জ তো আছেই।
আরেক বাস চালক জসিম উদ্দিন বলেন, সকালে প্রথম ট্রিপ দেয়ার সময়ই ৩০০ টাকা জিপি দিতে হয়েছে। এই জিপি না দিলে রোডে গাড়ি চালানো যায়না। নেতারা ঝামেলা করে।
স্থানীয় হকার কলিমুদ্দিন বলেন, দুপুরবেলা পুলিশ দুই জনকে আটক করে হ্যান্ডকাফ পড়িয়ে নিয়ে গেছে। তারা সবসময় গাড়ি থেকে টাকা তুলতো।
সজীব নামের একজন জানান, পৌরসভা থেকে ইজারা নেয়া বাবদ পার্কিং চার্জ আদায়ের কাজ করেন তিনি। বাস মালিক সমিতির লোকজন পার্কিং চার্জ আদায়ে বিভিন্নভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতো। যাদেরকে পুলিশ আটক করেছে তারা বাসস্ট্যান্ডের সকল গাড়ি থেকে নিয়মিত চাঁদা তুলতো।
নিয়ম বর্হিভূতভাবে অতিরিক্ত জিপি আদায়ের বিষয়ে জানতে জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি মো: জাহিদুর রহমান জাহিদের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ফলে এ বিষয়ে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
উপ-পরিদর্শক মাসুদুর রহমান জানান, বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চাঁদাবাজি করছে এমন খবর পেয়ে ওসি স্যারের নির্দেশে তাদের আটক করা হয়েছিল।
বিষয়টি নিয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রউফ সরকার বলেন, বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে এমন খবর পেয়ে ফোর্স পাঠিয়ে দুইজনকে আটক করা হয়েছিল। পরে খোঁজখবর নিয়ে এ অভিযোগের কোন সত্যতা পাইনি। জানতে পেরেছি পৌর পার্কিংয়ের ইজারা নিয়ে নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ঝামেলা আছে। ভবিষ্যতে তারা যাতে চাঁদাবাজি না করে সেই মর্মে একটি মুচলেকা নিয়ে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।