জুমবাংলা ডেস্ক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলেও গাজীপুরে আওয়ামী লীগ নেতাদের চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি।
গাজীপুর শহরের রাজবাড়ীর ঢাল এলাকার দক্ষিণ পাশে অবস্থিত একটি সরকারি পুকুরের দুই পাশে গড়ে ওঠা অবৈধ দোকান উচ্ছেদের মৌখিক নোটিশকালে এর প্রমাণ পাওয়া যায়।
গাজীপুর মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র অবস্থিত বিশালাকৃতির সরকারি পুকুর কচুরিপানা ও ময়লা আবর্জনায় ভরা একটি পুকুর রয়েছে। জেলা প্রশাসক নাফিস আরেফিনের উদ্যোগে পুকুরটিতে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শুরু করা হয়। পুকুরে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চলাকালে পুকুরের উত্তর পাশে ও পূর্ব পাশের কোনায় গড়ে ওঠা অবৈধ দোকান এবং দোকান থেকে পুকুরে আবর্জনা ফেলার বিষয়টি দৃষ্টগোচর হয়।
ওই সময়ে গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. কায়সার খসরু, গাজীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) অভ্র জোতি বড়াল, গাজীপুর সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুকসানা খাইরুন্নেসাসহ বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ওই পুকুরের পূর্বপাড়ে সদর হাসপাতাল রোডের পশ্চিম পাশে ও পুকুরের উত্তর পারে জয়দেবপুর-রাজবাড়ী সড়কের দক্ষিণ পাশে সরকারি জায়গা দখল করে বেশ কিছু অবৈধ দোকানপাট গড়ে উঠেছে। এসব দোকান বছরের পর বছর পাশের ফুটপাথ দখল করে জনগণের চলাচলে দুর্ভোগ সৃষ্টি করছে এবং ময়লা আবর্জনা পুকুরে ফেলছে।
সরকারি নথিপত্র অনুযায়ী এটি সরকারি জায়গা এবং দোকানপাটগুলো অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে। এসব দোকান উচ্ছেদে সচেতন মহল দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিল; কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাবশালী নেতারা এসব দখলে জড়িত থাকায় বিগত সময়ে কোন জেলা প্রশাসক এগুলো উচ্ছেদে সাহস পাননি।
পুকুর পরিষ্কার কাজ চলাকালীন উপস্থিত জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ওই দোকানগুলোর বিষয়ে খোঁজখবর নিতে যান। দোকানগুলো সরেজমিন পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা এ দোকানের ভাড়াকে নেয়, দোকানের মালিককে এসব জানতে চান।
তখন বেশ কয়েকজন দোকানদার জানান, তারা এই দোকানগুলোতে ভাড়া থাকেন। আর এসব দোকানে ভাড়া নেন স্থানীয় আইবুবুর রহমান ও জামাল উদ্দিন গংরা। তারা জামানত দিয়ে দোকান নিয়েছেন।
এ সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের জানানো হয়, কয়েক দিনের মধ্যে এসব মালামাল যেন তারা সরিয়ে নেন। পুকুর পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার পর পুকুরের চারপাশ পরিস্কার রাখা ও নগরের সৌন্দর্য বর্ধনের লক্ষ্যে পুকুরের চারপাশ অবৈধ দখলমুক্ত করার জন্য উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এসব দোকান থেকে ভাড়া উত্তোলনের বিষয়ে যে দুজনের নাম পাওয়া গেছে, তাদের মধ্যে জামাল উদ্দিন, গাজীপুর ক্রীড়া সংস্থার স্বঘোষিত সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের ঘনিষ্ঠজন। তিনি ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদকের নাম ভাঙিয়ে গাজীপুর মহানগরীর শহিদ বরকত স্টেডিয়ামের বেশ কিছু দোকানপাট ভাড়া দিয়ে টাকা উত্তোলন করেন।
আইয়ুবুর রহমান গাজীপুর মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সদর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে শক্তিশালী প্রার্থী মাসুদ রানা এরশাদের ভাই। অনুসন্ধানে জানা যায়, শহরের বিভিন্ন পয়েন্টের অন্তত ১০টি সিএনজি স্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি হয় তাদের নামেই।
এ বিষয়ে গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল করিম রনি বলেন, শেখ হাসিনা পালালেও তার সময়ের প্রথা রয়ে গেছে। চিহ্নিত চাঁদাবাজদের গ্রেফতার করে সরকারি সব জায়গা দখলমুক্ত করা উচিত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।