জুমবাংলা ডেস্ক : ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) নেতা মাইকেল চাকমা বলেন, ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল ঢাকার কল্যাণপুর বাস স্ট্যান্ডের কাছে ফুটওভার ব্রিজ এর কাছাকাছি সোনালী ব্যাংকের দ্বিতীয় তলায় থেকে একজন আমার নাম ধরে ডাক দেয়।
কিছু অপরিচিত লোক সিভিল ড্রেস পড়া প্রায় ৭/৮জন ছিল। এর পরে আমি তাদের দিকে তাকানোর পর কয়েকজন এসে আমাকে কলার ধরে টানতে শুরু করে। তাদের মধ্যে কেউ কোমরের বেল্ট ধরে। এরই মধ্যে একজন ফোন দিয়ে দ্রুত গাড়ি রেডি করতে বললে খুব তাড়াতাড়ি সাদা মাইক্রোবাস চলে আসে।
এরপর তারা আমাকে গাড়িতে উঠায় এবং আমার হাতে পুলিশের হ্যান্ডকাপ লাগায়। তারা আমার মুখ কালো কাপড় দিয়ে বেঁধে দেয়। কিন্তু আমার চোখ বাঁধার আগে আমি ওয়াকিটকি দেখেছিলাম। আমাকে যেখানে বসানো হয়েছিলো। তার পিছনে একজন লোক বসা ছিলো। সেখানে ৮/১০টা বাটন মোবাইল ছিল।
বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলির কার্যালয়ে তিনি এ অভিযোগ দায়ের করেন।
তিনি আরো বলেন, গাড়িতে উঠানোর পর আমাকে প্রায় ৪০/৫০ মিনিটের মতো ড্রাইভ করে এক জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। ওখান থেকে আমাকে আরেকটা জায়গা নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আমি প্রায় ৫বছর ৪মাস এর মতো ছিলাম। সেটি আমার কাছে অনেক বড় জায়গা মনে হয়েছে। ওখানে কয়েকটি রুম ছিল। আমাকে তিনটা ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রায় এক থেকে দেড় মাস পর্যন্ত আমাকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর তারা আমার কাছ থেকে পুরো বায়োডাটা নিয়ে ছিলো। সেখানে আমার সহ আমার পরিবারের পুরো তথ্য নিয়ে ছিল।
২০১৩ সালে খাগড়াছড়িতে শেখ হাসিনার একটা সমাবেশ ছিল। আমাদের ছাত্র সমাজ এই সমাবেশ করে। সেই সমাবেশের কারণে তার অনুষ্ঠান ২টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা বিকাল ৪টায় শুরু হয় এবং সেখানে তিনি বলেন, আজকে যারা সমাবেশ ডেকেছে তাদের আমাকে দেখে নিবো।
পরে প্রধান কৌঁসুলি মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা মাইকেল চাকমার অভিযোগ আমলে নিয়েছি। এখন থেকেই তার অভিযোগের তদন্ত শুরু করব।” যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, তাদের মধ্যে শেখ হাসিনা ছাড়া আরও কয়েকজন রয়েছেন বলে জানান তাজুল।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দুদিন পর তার খোঁজ মেলে। গত ৭ অগাস্ট এক বিবৃতিতে ইউপিডিএফের প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের প্রধান নিরন চাকমা দাবি করেন, ওইদিন ভোরের দিকে চট্টগ্রামের একটি স্থানে চোখ বাঁধা অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া হয় মাইকেল চাকমাকে।
ইউপিডিএফের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি নুতন কুমার চাকমা এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, ‘ফ্যাসিস্ট’ আওয়ামী লীগ সরকারের নির্দেশে মাইকেল চাকমাকে তুলে নিয়ে দীর্ঘ পাঁচ বছরের বেশি সময় বন্দি করে রাখা হয়।
মাইকেল চাকমাকে উদ্ধারের দাবিতে ইউপিডিএফ ও তার সহযোগী সংগঠন এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিরাও উদ্বেগ প্রকাশ করে মাইকেল চাকমার সন্ধান দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছিল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।