জুমবাংলা ডেস্ক : পবিত্র রমজান মাস এবং ঈদুল ফিতরকে টার্গেট করে কয়েকটি চক্র বাজারে জাল নোট ছড়িয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘বিশেষ অফার’ দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অনলাইনে বিভিন্নভাবে বিক্রি করা হচ্ছে জাল নোট। ‘অগ্রিম অর্ডার’ নিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় এজেন্টদের মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে হোম ডেলিভারিও।
এই সদস্যরা দাবি করেছে, সারা দেশে জাল নোট ছড়ানোর কাজে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরোক্ষ মদত রয়েছে। তাদের ‘ব্যাকআপ’ ছাড়া এ ধরনের ব্যবসা চালানো সম্ভব নয় বলেও দাবি করে তারা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপ খুলে জাল নোট সরবরাহের জন্য গ্রাহক সংগ্রহ করা হচ্ছে। যে কেউ এসব গ্রুপে জয়েন হতে পারছে। গ্রুপগুলোতে তাদের বিভিন্ন তথ্য আদান-প্রদান হচ্ছে। পরে অনেককে সরাসরি যুক্ত করা হচ্ছে জাল নোট ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন এনক্রিপ্টেড অ্যাপে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এক লাখ টাকার জাল নোটের জন্য খরচ করতে হচ্ছে ১০ হাজার টাকা। তবে সেই ১০ হাজার টাকা একবারে দিতে হচ্ছে না। প্রথম ধাপে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ৩ হাজার টাকা অগ্রিম পাঠিয়ে দিলেই ২ দিনের মধ্যে কুরিয়ারের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে লাখ টাকার জাল নোট। সেগুলো হাতে পাওয়ার পর বাকি ৭ হাজার টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হচ্ছে। তবে বেশি পরিমাণে নোট অর্ডার করলে অগ্রিম টাকা কম দিলেও চলে।
পরিচয় না প্রকাশের শর্তে জাল নোট চক্রের সদস্যরা জানিয়েছেন, রেডএক্স কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে হোম ডেলিভারি দিয়ে থাকেন তারা। মূলত টি-শার্টের ভেতরে বেঁধে কার্টুনে ভালোভাবে প্যাকেট করা হয়। গিফট হিসেবে পাঠানো হয় যা বাইরে থেকে ধরার কোনও উপায় থাকে না। আর অনেক সময় কুরিয়ার সার্ভিসের লোকজনকে হাত করা থাকে। সবচেয়ে বড় কথা, প্যাকেটের গায়ে একটা নম্বর থাকে। যে নম্বর দেখলেই ভেতরে কী আছে, তা জিজ্ঞাসাও করে না কুরিয়ার সার্ভিসের লোকেরা।
যেসব জাল নোট তারা সরবরাহ করে থাকে, তা শুধু ব্যাংক ছাড়া আর কেউ দেখে বুঝতে পারবে না বলে দাবি কলেন এই চক্রের এক সদস্য। বলেন, নোটগুলোতে জলছাপ এমনভাবে দেওয়া, যা খালি চোখে বোঝার কোনও উপায় নেই। খোলা মার্কেটে তাদের অনেক এজেন্ট রয়েছে। যারা কোনও ঝামেলা ছাড়াই নিয়মিত জাল টাকা বিক্রি করছে। ৮ বছরের বেশি সময় ধরে চক্রগুলো ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও দাবি তাদের।
ওই সদস্য আরও বলেন, পুলিশ নিয়া কোনও টেনশন নেই। এজেন্ট হলে পুলিশ কিছুই করতে পারবে না। আর খোলা মার্কেটে ধরা পড়লেও কিছু হবে না। পুলিশসহ ওপর মহলে আমাদের লোক আছে। লোক না থাকলে এই ব্যবসা করা সম্ভব না।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অপরাধ বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার ড. খন্দকার মহিউদ্দিন বলেন, জাল নোট চক্রের সঙ্গে যারা জড়িতরা প্রায় সময়ই এমন তথ্য দেয় যে এই ব্যবসাটি পরিচালনার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহায়ক হিসেবে কাজ করছে। এখন পর্যন্ত এ ব্যবসার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনও সদস্যের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের বিরুদ্ধে এরকম অভিযোগ কেউ করলে তা খতিয়ে দেখা হয়। এছাড়া জাল নোট কোন প্রক্রিয়ায় গ্রাহকদের কাছে পৌঁছাচ্ছে এসব বিষয়ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।