জুমবাংলা ডেস্ক : খেজুর গুড়ের জন্য বিখ্যাত ফরিদপুর জেলা। যে কারণে এ জেলার গুড়ের প্রতি সবারই আলাদা আগ্রহ থাকে। দাম যত বেশিই হোক, ফরিদপুরের গুড় পেলে কোনো কথা নেই! আর এই সুযোগটাকেই কাজে লাগিয়েছে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। নকল খেজুর গুড় তৈরির কারখানা খুলে বসেছেন নিজ বাড়িতেই। এ গুড় তারা ‘আসল খেজুর গুড়’ বলে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করে আসছিলেন চড়া দামে। এমন খবর পেয়ে ওই কারখানায় অভিযান চালান ভ্রাম্যমাণ আদালত।
রোববার (২১ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে নগরকান্দা উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের খোয়াজের ডাংগী গ্রামে অভিযান পরিচালনা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সোনিয়া হোসেন জিসান।
এ সময় নকল গুড় তৈরিকালে আলম শেখ (৪১) ও জলিল শেখ (৫৬) নামে দুই ব্যক্তিকে নগদ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। নকল খেজুরের গুড়সহ গুড় তৈরিতে ব্যবহৃত প্রায় আড়াই লাখ টাকা মূল্যের ১২১ ড্রাম ভেজাল গুড় তৈরির কাঁচামাল জব্দ করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সোনিয়া হোসেন জিসান জানান, আলম শেখ ও জলিল শেখ দীর্ঘদিন ধরে ফরিদপুরের ঐতিহ্যবাহী খেজুরের গুড়ের নামে নকল খেজুরের গুড় তৈরি করে বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে আসছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের কারখানায় অভিযান চালানো হয়।
তিনি আরও জানান, তাদের দুই জনকে জরিমানা করা হয়েছে। ১২১ ড্রাম ভেজাল খেজুরের গুড় জব্দ করা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের দুইজনকে সতর্ক করা হয়েছে। নকল পণ্য তৈরির কারখানায় এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই দুই ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে নকল খেজুরের গুড়ের ব্যবসা করে আসছিলেন। নিজ বাড়িতেই নকল খেজুরের গুড় তৈরি করতেন। ভারত থেকে এক ধরনের কেমিকেল (গাদ) নিয়ে আসতেন তারা। এরপর ওই গাদের সঙ্গে চিনি, স্যাকারিন ও খেজুরের গুড়ের ফ্লেভার ব্যবহার করে গুড় তৈরি করতেন। ক্ষতিকারক কেমিকেল ব্যবহার করে বানানো গুড় বাজারজাত করতেন।
স্থানীয় বাসিন্দা কাশেম বলেন, ‘আমরা তো বিষয়টি জানতামই না। ওরা এলাকার মানুষের কাছে খুব বেশি বিক্রি করতো না। দেশের বিভিন্ন স্থানে এ গুড় সরবরাহ করতো। গুড়ে যে উপাদানগুলো ব্যবহার করতো তা খুবই ক্ষতিকারক।’
আরেক বাসিন্দা আসলাম মোল্লা বলেন, ‘সারা দেশে ফরিদপুরের খেঁজুর গুড়ের চাহিদা থাকায় এ ধরনের ভেজাল গুড় তৈরি করতো তারা। সাধারণত যে পরিমাণ খেজুর গাছ রয়েছে, তাতে এক বেলার গুড়ের চাহিদাও মেটে না। মানবদেহের ক্ষতির পাশাপাশি ফরিদপুরেরও সুনাম নষ্ট করছে এরা। এদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।