জুমবাংলা ডেস্ক : উত্তরবঙ্গের দ্বিতীয় বৃহত্তম আমের হাট রাজশাহী জেলার বানেশ্বর বাজারে মৌসুমের শেষে আমদানি বেড়েছে আমের। এছাড়া জেলার বিভিন্ন বাজারে মিলছে আম। একইসাথে আমদানি বাড়ায় বাজারে সস্তায় বিক্রি হচ্ছে নাক ফজলি, ফজলি, আশ্বিনা জাতের বড় আম। আমের রাজা ল্যাংড়া না থাকায় ফজলির দখলে বাজার! অন্যদিকে বেশ চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে আম্রপালি আম।
বুধবার (২৯ জুন) দুপুরে বানেশ্বরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাজারে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ল্যাংড়া আম। বড় জাতের আমের মধ্যে বিক্রি হচ্ছে ফজলি আর আশ্বিনা। দাম তুলনামূলক অনেকটাই কম।
বানেশ^র থেকে আম কিনে রাজশাহীর প্রাণকেন্দ্র সাহেববাজার মাস্টারপাড়া কাঁচাবাজারে বিক্রি করছেন শহিদুল ইসলাম। আম কিনেছিলেন ১০ মণ। বিক্রি হয়েছে আনুমানিক ৬ মণ। বাঁকি আম নিয়ে বসে আছেন ক্রেতার অপেক্ষায়।
অন্য আমের দাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাজারে এ নাক ফজলি আম আমার কাছে ছাড়া কোথাও পাবেন না। ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। কিনেছি একটু কম দামে। বানেশ্বরে ফজলি আম বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১১০০ টাকা মণ হিসেবে। বাজারে সবচেয়ে বেশি আম রয়েছে আম্রপালি আর ফজলি। আশি^নাও ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা মণ। আম্রপালি বিক্রি হচ্ছে ২২’শ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত।
আরেক আম ব্যবসায়ী আব্দুল গাফফার বলেন, আম আর বেশিদিন থাকবে না। মানুষের আম কেনার আগ্রহ আছে। কিনছে ৪ কেজি ৫ কেজি করে। মৌসুমী ফল চলে গেলে আর পাবেনা এমন ভেবে অনেকে কেজিখানেক বেশি করেই কিনছে।
তিনি আরোও বলেন, সবজি কিনতে এসে আম কিনছে অনেকে। ২টা আমেই কেজি হচ্ছে। আর একটু ছোট সাইজের হলে ৩টাতে কেজি হচ্ছে। দামও অল্প। ৩০ টাকা কেজি আম না কিনে মানুষ আর কত কমলে কিনবে! আমরা ৮০০ টাকা মণ কিনলে গাড়িভাড়া আছে আবার একটা মানুষ বসে থেকে বিক্রি করছি। এটা চিন্তা করলে দাম বাড়ানো দরকার। কিন্তু আমরা অল্প লাভে ছেড়ে দিচ্ছি।
রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে রাজশাহী জেলায় ১৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে আম আবাদ হয়েছে, ফলনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ১৭ হাজার টন, যার বাজারমূল্য প্রায় ৮৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা। গত বছর ১৭ হাজার ৬৮৬ হেক্টর জমিতে আম আবাদ হয়েছিল। হেক্টরপ্রতি গড় ফলন হয়েছিল ১১ দশমিক ৯৬ টন। মোট উৎপাদন হয়েছিল ১ লাখ ৭৯ হাজার ৫৪০ দশমিক ৫৩ টন আম, যার বিক্রয়মূল্য ছিল প্রায় ৭১ কোটি ৮১ লাখ ৬২ হাজার ১২০ টাকা।
বাজারের অবস্থা জানতে চাইলে বানেশ্বর আম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব সাইফুল ইসলাম বলেন, চাঁপাইয়ের কানসাটের পরেই বানেশ্বর বাজার। প্রতিবছর কয়েক কোটি টাকার আম বেঁচাকেনা হয় এখানে। বাজারে এখন আম্রপালি, ফজলি আর আশ্বিনা আম আছে। অল্প আছে ল্যাংড়া। বাজারে আমের আমদানি বেশি। ক্রেতা সে তুলনায় কম।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, বাজারে সর্বপ্রথম গুটি জাতের আম আগে আসে। পর্যায়ক্রমে গোপালভোগ, ল্যাংড়া, ফজলি, আশ্বিনা আম বাজারে আসে। এরপর বাজারে আসে খিরসাপাত, হিমসাগর ও লখনা। সর্বশেষ আশি^না আর ফজলি আম বাজারে আসে। এছাড়া দু-একটা আম আছে যেগুলো মৌসুমের শেষে বিক্রি হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।