বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : অনলাইন পরিসরে যোগাযোগের জন্য আমরা একে অপরকে হরহামেশাই তথ্য আদান প্রদান করে থাকি। এতে করে নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থেকে যায় ‘ম্যাসিজিং প্ল্যাটফর্মে’। যা থেকে ব্যক্তিগত তথ্য চুরি বা ফাঁসের ঝুঁকি তো থাকেই। তাই অনলাইন পরিসরে নিজের তথ্যকে নিরাপদ রাখতে ব্যবহার করা যায় নানা ধরনের এনক্রিপটেট সফটওয়্যার বা মেসেজিং প্ল্যাটফর্মের বেশ কিছু ফিচার।
২০২১ সালে পরিচালিত এক সমীক্ষা অনুযায়ী, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই ৪১ শতাংশ তথ্য ফাঁস হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মেসেজিং প্ল্যাটফর্মে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদান-প্রদানে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধির প্রেক্ষিতে এই সংখ্যাকে আশঙ্কাজনকই বলা চলে।
এ ধরনের নিরাপত্তা লঙ্ঘন যে কারো জন্যই বেশ ক্ষতিকর; বিশেষ করে, প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে এর ফল হতে পারে আরও শোচনীয়। তাই, মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশনগুলোর মধ্যে যথাযথ নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য অন্তর্ভুক্ত করে ব্যবহারকারীদের তথ্য সুরক্ষিত রাখা ও তাদের গোপনীয়তা রক্ষা করা অত্যাবশ্যক। এই সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কিছু টুল রয়েছে, যার মধ্যে একটি হল ‘এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন।’
এর মাধ্যমে, প্রেরিত তথ্য এনক্রিপ্ট করা হয়, যা শুধুমাত্র প্রেরক ও প্রাপকই দেখতে পারেন। তা সত্ত্বেও এই এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন ব্যবহারকারীদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা প্রদানের জন্য যথেষ্ট নয়। ফোন চুরি, ডিভাইস আনলক করতে বাধ্য করা, অসৎ উদ্দেশ্যে স্ক্রিনশট নেয়া কিংবা স্পাইওয়্যার বসানোসহ এমন অনেক পরিস্থিতিই আছে যা আমাদের ব্যক্তিগত তথ্যকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।
সেক্ষেত্রে মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশন ব্যাবহারে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যবহৃত কিছু ফিচার:
ডিসঅ্যাপিয়ারিং মেসেজ
এই ফিচারের ক্ষেত্রে মেসেজ আদান-প্রদানের পর একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্তই মেসেজগুলো দেখা যায়। নির্দিষ্ট সময়ের পর মেসেজগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে মুছে যায়। ব্যবহারকারীরা নিজেদের সুবিধামতো এ সময় নির্দিষ্ট করে দিতে পারবেন। টাইমারের মাধ্যমে যেকোনো গোপনীয় তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়তা করছে এই ফিচার। এ ধরনের ফিচার রয়েছে ইমো ও স্ন্যাপচ্যাটে।
সিক্রেটচ্যাট
এর মাধ্যমে চ্যাট উইন্ডো থেকে বের হয়ে যাওয়া মাত্রই সম্পূর্ণ উইন্ডো মুছে যায়। প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষেত্রে তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষায় এই ফিচার বেশ কার্যকর। এ ধরনের ফিচার রয়েছে ইমো ও টেলিগ্রামে।
টাইম মেশিন
এই ফিচারের মাধ্যমে সময় নির্বিশেষে যেকোন কথোপকথন চ্যাট হিস্ট্রি থেকে ডিলিট করা যায়। এতে করে ব্যবহারকারীদের নিজেদের ব্যক্তিগত তথ্যের ওপরে নিয়ন্ত্রণ থাকে, যা মেসেজিং অ্যাপগুলোকে আরও সুরক্ষিত করে। এ ধরনের ফিচার রয়েছে ইমোতে।
ব্লক স্ক্রিনশট ফর কলস
চমৎকার এ ফিচারের মাধ্যমে আপনি যে কাউকে ভিডিও কল চলাকালীন স্ক্রিনশট নেয়া থেকে বিরত রাখতে পারবেন। অযাচিত স্ক্রিনশট নেয়া যেকোন কারও জন্যই বেশ ক্ষতিকারক হতে পারে, বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে। সেক্ষেত্রে, এ ফিচারের মাধ্যমে নিজের ব্যক্তিগত তথ্যসমূহ সুরক্ষিত করা যায় খুব সহজেই। এ ধরনের ফিচার রয়েছে ইমো ও হোয়াটসঅ্যাপে।
তথ্য নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা নিশ্চিত করতে ইমোসহ অন্যান্য সোশ্যাল মেসেজিং অ্যাপগুলো নিজেদের প্ল্যাটফর্মে প্রয়োজনীয় সব ফিচার যুক্ত করতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিটি প্ল্যাটফর্মেরই একটি সামাজিক দায়িত্ব রয়েছে, যা মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অসংখ্য তথ্য আদান-প্রদানের যুগে আমরা বাস করছি; তাই, ব্যক্তিগত ও কর্মজীবনের সুরক্ষায় এ সময় ডেটা নিরাপত্তা নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সুতরাং, নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সচেতন হতে হলে ব্যবহারকারীদের সঠিক মেসেজিং প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহার করা উচিত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।