আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সুদহার বড় প্রভাব বিস্তার করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদহার বাড়ানো শুরু হয় দেশটিতে। যদিও বর্তমানে এ হার বাড়ানো কিছু সময়ের জন্য স্থগিত রয়েছে এবং সার্বিক অর্থনীতি স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে। তবে শেয়ারবাজার এখন খুবই উত্তপ্ত। যা রিজার্ভ ব্যাংকের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষক ও অর্থনীতিবিদরা। ফলে চলতি বছরের শেষ নাগাদ ফেডারেল রিজার্ভ হয়তো সুদহার আবারও বাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা মনে করেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে আরও কাজ করতে হবে। কেননা কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ আর্থিক অবস্থার বেশ কয়েকটি ব্যবস্থা এমনভাবে পরিবর্তিত হয়েছে, যা থেকে অর্থনৈতিক সংযম কমানোর ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
শেয়ারের দাম থেকে শুরু করে সরকার, ব্যবসা ও পরিবারের জন্য ঋণের খরচের পরিমাপ পর্যন্ত সবকিছু বিবেচনায় নেয়া আর্থিক পরিস্থিতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক নীতি চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ফেডারেল রিজার্ভের কাঙ্ক্ষিত স্বল্পমেয়াদি সুদহারের পরিবর্তনগুলো বৃহত্তর অর্থনীতিতে প্রয়োগ করার জন্য বাজারের ওপর নির্ভর করতে হয়। এ হিসাব ব্যবস্থায় বর্তমান শিথিলতার অর্থ হলো বাজার ও ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক পৃথক পথে হাঁটতে শুরু করেছে।
পাইপার স্যান্ডলারের গ্লোবাল পলিসির প্রধান বেনসন ডারহাম বলেছেন, “ঢিলেঢালা আর্থিক অবস্থা স্পষ্টতই নিকট-মেয়াদি প্রবৃদ্ধি বাড়ায় এবং অর্থনীতিতে ফেডারেল রিজার্ভ যে সংযম আরোপের চেষ্টা করছে তার বিরুদ্ধে যেতে উৎসাহিত করতে পারে।”
সম্প্রতি ফেডারেল রিজার্ভ প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, জুনে আর্থিক অবস্থা বেড়ে মে মাসের দশমিক ৬০৩ রিডিং থেকে দশমিক ৪৫৮-এ দাঁড়িয়েছে। তবে সূচকটি এখনো ২০২২ সালের আগস্টের পর থেকে সর্বনিম্নে। সূচকে আর্থিক পরিস্থিতি বৃদ্ধিতে সহায়তা করছে বা বৃদ্ধিকে বাধা দিচ্ছে কিনা তা বর্ণনা করে।
অন্যদিকে গোল্ডম্যান স্যাকসের ঘনিষ্ঠ পর্যবেক্ষণে আর্থিক অবস্থার সূচক মে মাস থেকে মোটামুটি ধীরগতিতে স্বাভাবিক হচ্ছে বলে জানানো হয়। একই অবস্থা গত বছরের আগস্টের শেষের দিকেও দেখা গেছে। জুলাইয়ের শেষের দিকে শিকাগো ফেডারেলের সর্বশেষ সূচকটিও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে।
২০২২ সালের মার্চ থেকে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক স্বল্পমেয়াদি সুদহার বাড়ানোর আগ্রাসী প্রচারণায় নেমেছে। চলতি সপ্তাহে এক-চতুর্থাংশ শতাংশীয় পয়েন্ট বৃদ্ধির পর ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক তার লক্ষ্যমাত্রা শূন্যের কাছাকাছি থেকে ৫ দশমিক ২৫ ও ৫ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে নিয়ে গেছে। বন্ধকি ঋণ বেড়েছে প্রায় ৭ শতাংশ। একই সময়ে বেড়েছে অন্যান্য ঋণের খরচও। অন্যান্য মুদ্রার তুলনায় ডলারের দাম বাড়ায় অন্তত কিছু সময়ের জন্য সুদহার বৃদ্ধির ধাক্কা লেগেছে স্টক মার্কেটেও। কঠোর আর্থিক পরিস্থিতি অর্থনীতির লাগাম টেনে ধরার ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের চাওয়া বাস্তবায়নে সহায়ক হয়েছে। বিশেষক করে কয়েক দশকের মধ্যে মূল্যস্ফীতি চড়া হওয়ার প্রবণতাকে দমাতে।
কিন্তু ঘটনাগুলো এখন অন্যভাবে স্থানান্তরিত হচ্ছে। ফলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অর্থনীতিতে কড়াকড়ি আরোপের সময় শেষ হওয়ায় ফেডারেলের টার্গেট পূরণে সমস্যা হতে পারে। সূত্র: রয়টার্স
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।