বিনোদন ডেস্ক : ঢালিউডের একাধিক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত নায়ক ফেরদৌস আহমেদের জন্মদিন আজ। ১৯৭৪ সালের ৭ জুন কুমিল্লার তিতাসে তার জন্ম। ৫০ পেরিয়ে ৫১ বছরে পা দিলেন তিনি।
জন্মদিন উপলক্ষ্যে কোনো বছরই তেমন কোনো আয়োজন রাখেন না এই তারকা। দিনটি স্ত্রী-সন্তান, মা ও খুব কাছের কিছু প্রিয়মুখদের নিয়ে ঘরোয়াভাবে উদযাপন করেন। আজকের দিনটাও একইভাবে কাটানোর পরিকল্পনা রয়েছে ফেরদৌসের।
জন্মদিনে সবার কাছে দোয়া চেয়ে অভিনেতা বললেন, ‘সবার দোয়া ও ভালোবাসা নিয়ে আজকের দিনটি ভালোভাবে কাটাতে চাই। সবার দোয়ায় আগামী দিনগুলোতে ভালো কাজও করতে চাই। পরিবার পরিজন নিয়ে ভালো থাকতে চাই।’
জন্মদিনে বাবার কথা স্মরণ করে ফেরদৌস বলেন, ‘এই দিনটিতে আমার বাবার কথা খুব মনে পড়ে। ছোটবেলায় নিজের জন্মদিনে বাবার কাছে নানারকম বায়না থাকতো আমার। হয়তো বাবা বেঁচে থাকলে এখনো কোনো না কোনো বায়না থাকতো বাবার কাছে। তবে ছোটবেলার বায়না ছিল এক রকম, এখন থাকতো অন্যরকম বায়না। তাই এই দিনটি আসলে ভীষণ মিস করি বাবাকে।’
এদিকে, বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ১২টার পর থেকেই জন্মদিনের অসংখ্য শুভেচ্ছা বার্তা পেয়েছেন নায়ক ফেরদৌস। এখনো পাচ্ছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রিয় তারকার ছবি পোস্ট করে তাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন দুই বাংলার দর্শকই। আরও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং জানাচ্ছেন নায়কের সহকর্মীরা।
ফেরদৌস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে পড়াশুনা করেছেন। তবে তিনি অভিনয়কে পেশা হিসেবে বেছে নেন। প্রথমে কাজ করেন র্যাম্প মডেল হিসেবে। ১৯৯৬ সালে প্রয়াত নৃত্য পরিচালক আমির হোসেন বাবুর হাত ধরে তার চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু। তখন আমির হোসেন বাবু পরিচালক হিসেবে নাচভিত্তিক একটি চলচ্চিত্র ‘নাচ ময়ূরী নাচ’ নির্মাণের পরিকল্পনা করছিলেন। সেটি করতে গিয়েই তিনি আকর্ষণীয় দৈহিক সৌষ্ঠবের অধিকারী ফেরদৌসকে আবিষ্কার করেন।
কিন্তু আমির হোসেন বাবু সেই ছবির কাজ আর শুরু করতে পারেননি। এরপর প্রয়াত সুপারস্টার নায়ক সালমান শাহর আকস্মিক মৃত্যুর কারণে তার অভিনীত অসমাপ্ত ‘বুকের ভেতর আগুন’ ছবির জন্য প্রথমবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান ফেরদৌস। ১৯৯৭ সালে ছবিটি পরিচালনা করেন ছটকু আহমেদ। তিনি ছবির গল্পে কিছুটা পরিবর্তন করে ফেরদৌসকে কাজ করার সুযোগ দেন।
এরপর ১৯৯৮ সালে এককভাবে নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন অঞ্জন চৌধুরী পরিচালিত পৃথিবী ‘আমারে চায় না’ ছবির মধ্য দিয়ে। একই বছর ফেরদৌস ব্যাপকভাবে আলোচিত ও জনপ্রিয় হয়ে উঠেন ভারতের চলচ্চিত্রকার বাসু চ্যাটার্জি পরিচালিত যৌথ প্রযোজনার ছবি ‘হঠাৎ বৃষ্টি’র মাধ্যমে। এই ছবিতে অভিনয় করে তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
এরপর থেকে একাধারে বাংলাদেশ ও ভারতের বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে থাকেন ফেরদৌস। এছাড়া ‘মিট্টি’সহ বলিউডের দুটি হিন্দি ছবিতেও তাকে দেখা গেছে তাকে।
ফেরদৌস তার ক্যারিয়ারে চারটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন। অভিনয়ের বাইরে তাকে নানা পণ্যের বিজ্ঞাপনে দেখা গেছে। এছাড়া বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ফেলদৌসের জুড়ি নেই। এর মধ্যে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ এবং ‘মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার’-এর আসরে তাকে একাধিকবার উপস্থাপকের ভূমিকায় দেখা গেছে।
প্রযোজনায়ও নাম লিখিয়েছেন এই নায়ক। ২০১২ সালে ‘হঠাৎ সেদিন’ এবং ২০১৪ সালে ‘এক কাপ চা’ সিনেমা দুটি তিনি প্রযোজনা করেন।
তবে এখন ফেরদৌসের বেশি ব্যস্ততা রাজনীতির মাঠে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের টিকিটে তিনি ঢাকা-১০ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে এখন তার ব্যস্ততার শেষ নেই। প্রতিদিনই কোনো না কোনো সভা-সেমিনার বা অনুষ্ঠানে হাজির থাকতে হয়। খোঁজ খবর নিতে হয় সংসদীয় আসনের মানুষের।
ব্যক্তিগত জীবনে স্ত্রী তানিয়া আহমেদ এবং দুই সন্তান ছেলে নুজহাত ফেলদৌস ও মেয়ে নুজরান ফেরদৌসকে নিয়ে নায়ক ফেরদৌস আহমেদের সংসার। তার স্ত্রী তানিয়া পেশায় বিমানের একজন পাইলট। ২০০৩ সালের ৯ ডিসেম্বর তারা বিয়ে করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।