জুমবাংলা ডেস্ক : কয়েক দিন আগে ছেলে এবং ছেলের বউ একটি কাপড়ের ব্যাগ হাতে দিয়ে বাসে তুলে দেন। এ সময় তাকে বলেছেন, ‘আর বাসায় ফিরো না। চোখ যেদিকে যায় সেদিকে চলে যাও।’ বৃদ্ধা মা ছেলের কাছে তার মোবাইল নম্বরটি চাইলে তাও দেননি।
বাসে ওঠার পর গন্তব্য বলতে না পারায় চালক তাকে হিলি সি পি মোড়ে নামিয়ে দেন। সাত দিন ধরে আছেন এক বাড়ির বারান্দায়। পরিচয় বলতে দুটি কথাই বলেন তিনি। বাড়ি ঢাকাতে, নাম শাকিলা বেগম।
বয়স আশির আশপাশ। সঙ্গে একটি ব্যাগ। এ ছাড়া কিছুই নেই। সাত দিন ধরে এই বৃদ্ধা ছিলেন দিনাজপুরের হাকিমপুর হিলি স্থলবন্দর এলাকার সি পি মোড়ে।
তাকে বারান্দায় ঠাঁই দিয়েছেন মোড়ের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম সুইট। এই বৃদ্ধ মাকে নিয়ে শনিবার (২২ জুলাই) বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসে।
প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আজ রবিবার উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় তাকে ‘সাফল্যের গল্প শোনাবো ফাউন্ডেশন’ বৃদ্ধাশ্রমে রংপুরে পাঠানো হয়েছে। বিকেল সাড়ে ৫টায় ওই বৃদ্ধা মাকে বৃদ্ধাশ্রমের নিজস্ব গাড়িতে রংপুরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ হারুন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত রায়, ভাইস চেয়ারম্যান শাহিনুর রেজা শাহীন, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শ্যামল কুমার দাস, হাকিমপুর থানার ওসি আবু সায়েম মিয়া, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মাসুদ রানা ও গণমাধ্যম কর্মী জাহিদুল ইসলাম জাহিদ।
উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বলেন, ‘গতকাল (শনিবার) রাতে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে বৃদ্ধার বিষয়ে জানার পর আমি নিজেই মর্মাহত। আজ উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় তাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে তার শরীর অনেক দুর্বল।’
হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত রায় বলেন, ‘বৃদ্ধা দীর্ঘ সাত দিন থেকে একই জায়গায় খেয়ে না খেয়ে অবস্থান করেছেন। তার শরীর দুর্বল। তাই তাকে গতকাল রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে জেলা প্রশাসক, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে পরামর্শ করে বৃদ্ধার দেখভালের জন্য বা যতদিন সঠিক ঠিকানা না পাওয়া যাচ্ছে ততদিনের জন্য সমাজসেবা কতৃক নিবন্ধনকৃত বৃদ্ধাশ্রমে ওই বৃদ্ধাকে পাঠানো হয়েছে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।